পাহাড় কেটে বাড়ি নির্মাণ বন্ধে সিডিএকে তৎপর থাকার আহ্বান মেয়রের
২৮ মে ২০২৪ ২৩:৪৩
চট্টগ্রাম ব্যুরো: পাহাড় কেটে বা নদী, নালা, খাল ভরাট করে কেউ বাড়ি বানাতে চাইলে সে বাড়ির অনুমোদন না দিতে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (সিডিএ) তৎপর থাকার আহ্বান জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী।
মঙ্গলবার (২৮ মে) সকালে নগরীর লালদিঘী পাড়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবনের সম্মেলন কক্ষে চসিকের ষষ্ঠ নির্বাচিত পরিষদের সাধারণ সভায় তিনি এ আহ্বান জানান।
মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘নগরীর বায়েজিদের চন্দ্রনগরে একসময় বিশাল নাগিন পাহাড় ছিল। কাটতে কাটতে এটাকে অস্তিত্বহীন করে ফেলেছে। গতকাল (সোমবার) ওখানে নির্মাণাধীন একটি ভবনের দেয়ালচাপা পড়ে একজন মারা গেছেন। এ ভবনের অনুমোদন আছে কি না তা দেখতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘পাহাড় কেটে বা নদী, নালা, খাল ভরাট করে কেউ বাড়ি বানাতে চাইলে সে বাড়ির অনুমোদন দেওয়া যাবে না। এক্ষেত্রে সিডিএকে আরও তৎপর হতে হবে।’
চট্টগ্রামের পরিবেশ রক্ষায় সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে মেয়র বলেন, ‘শহরের সব পাহাড় কেটে ফেলা হচ্ছে। খাল-নালা দখল করে উঠছে স্থাপনা। পুকুর-জলাশয় ভরাট করছে একটি দুষ্টচক্র। পাহাড় কাটার ফলে পাহাড়ের মাটি গিয়ে নালা ভরাট হয়ে যাচ্ছে, জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে, মশার প্রজননক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে।’
চসিক মেয়র বলেন, ‘গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে নালাগুলোতে পলিথিন ও ককশিটের কারণে পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে জনগণ ভোগান্তিতে পড়েছে। আমরা এ মৌসুমে পাঁচ লাখ গাছ লাগানোর পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। তবে চট্টগ্রামের পরিবেশ রক্ষা করতে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। প্রয়োজনে আমরা মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেব।’
হকার উচ্ছেদের বিষয়ে মেয়র বলেন, ‘ব্যাটারিচালিত রিকশার ব্যাপারে তড়িৎ পদক্ষেপ নিতে না পারায় শহরে দুর্ঘটনার বড় কারণ হয়ে উঠেছে এসব যানবাহন। অবৈধ হকারের বিষয়ে যদি আমরা ছাড় দিতে থাকি তাহলে ভবিষ্যতেও নগরীর নিরাপত্তার বিষয়ে একই ধরনের জটিলতা তৈরি করবেন।’
তিনি বলেন, ‘দেখা যাচ্ছে, অবৈধ দোকানের কারণে রাস্তা সংকীর্ণ হয়ে যাচ্ছে, মানুষ ফুটপাতে হাঁটতে পারছে না। জনগণের স্বার্থেই আমি নিয়মিত উচ্ছেদ অভিযান চালাচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘উচ্ছেদ অভিযানে পুলিশ বিভাগ আমাদের অনেক সহায়তা করেছে। তবে, উচ্ছেদের পর প্রতিটি থানা মনিটরিং করলে উদ্ধার করা ভূমি রক্ষা সহজ হতো। কারণ, চসিকের কোনো ফোর্স নেই। যে কারণে উচ্ছেদ করার কিছুদিনের মধ্যেই ফের উদ্ধার করা স্থান দখল হয়ে যাচ্ছে।’
‘এক্ষেত্রে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশকে আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। ঈদে যেহেতু শত শত কোটি টাকার লেনদেন হবে, মানুষ যাতায়াত করবে তাই নিরাপত্তার বিষয়ে পুলিশকে সজাগ থাকতে হবে।’
কোরবানির বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়ে রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘আমরা কোরবানির দিন দ্রুততম সময়ে কোরবানির বর্জ্য অপসারণে পদক্ষেপ নিয়েছি। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে কোনো সুপারভাইজারের গাফিলতি থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থ নেব।’
রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘যারা ভালো পারফরম্যান্স করবে তাদের পুরস্কৃত করব। কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে কাউন্সিলররা এ বিষয়ে কোনো সুপারিশ করবেন না। নগরীকে পরিচ্ছন্ন রাখার বিষয়ে কাউন্সিলরদের কঠোর হতে হবে।’
সভায় চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, সচিব আশরাফুল আমিন, কাউন্সিলর ও সরকারি সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/আইসি/পিটিএম