সকালে সাজেক ভ্যালি ছাড়বেন পর্যটকরা
২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০০:১৯
রাঙ্গামাটি: আঞ্চলিক রাজনৈতিক সংগঠন ইউপিডিএফের সমর্থনে ৭২ ঘণ্টার অবরোধে রাঙ্গামাটির সাজেক ভ্যালি পর্যটনকেন্দ্রে আটকা পড়েছেন প্রায় দেড় হাজার পর্যটক। অবরোধের কারণে সাজেকে নেওয়া যাচ্ছে না জ্বালানি তেল। যে কারণে পানি সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। দেখা দিয়েছে বিদ্যুৎ ও পানির সংকটও।
এ পরিস্থিতির মধ্য দিয়েই শেষ হচ্ছে ৭২ ঘণ্টার সেই অবরোধ। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এর ফলে মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকেই পর্যটকরা সাজেক ভ্যালি ছাড়তে পারবেন।
সাজেকের স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে সাজেকে যান বেশকিছু পর্যটক। তাদের শনিবার ফেরার কথা থাকলেও ইউপিডিএফের সমর্থনে শনিবার সকাল ৬টা থেকে টানা ৭২ ঘণ্টার অবরোধ শুরু হলে তারা আর ফিরতে পারেননি। এসব পর্যটকের মধ্যে অনেক চাকরিজীবীও রয়েছেন, যারা সাপ্তাহিক ছুটিতে বেড়াতে গিয়ে ছুটি শেষেও আটকা পড়েছেন। কাজে ফিরতে পারেননি তারা।
সাজেক কটেজ মালিক সমিতি সূত্রে জানা গেছে, সাজেকে প্রায় দেড় হাজার পর্যটক ও ১৭৮টি পর্যটকবাহী গাড়ি শনিবার থেকে আটকা পড়ে আছে। বিদ্যুৎ সংযোগও বৃহস্পতিবার থেকে বন্ধ। জেনারেটর দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হলেও অবরোধের কারণে জ্বালানি তেলের সংকট দেখা দিয়েছে। এতে অনেক কটেজে জেনারেটর সুবিধাও বন্ধ হয়ে পড়ছে। আবার জ্বালানি তেল না থাকায় পানি সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
এ ছাড়া সাজেকে শতাধিক কটেজ ও রেস্টুরেন্টে মালিক-কর্মচারী রয়েছেন। প্রায় আরও দেড় হাজার মানুষ অবস্থান করেন সবসময়। সাজেকে পর্যটক ও ব্যবসায়ী মিলিয়ে প্রায় তিন হাজার পর্যটকের খাবারের মজুত না থাকায় খাবার, জ্বালানি তেল সংকটে বেশ কিছু রেস্টুরেন্ট বন্ধ হয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এতে সাজেকে অবস্থান করা পর্যটকদের খাবার সংকটও দেখা দিয়েছে।
সাজেক অবকাশ কটেজের স্বত্ত্বাধিকারী বিজয় ঘোষ বলেন, সাজেকে অবরোধের কারণে আমাদের কটেজেই ৬৫ জন আটকা পড়ে আছেন শনিবার থেকে। গোটা সাজেকে এমন পর্যটক আছেন প্রায় দেড় হাজার। বৃহস্পতিবার থেকে বিদ্যুৎ নেই। জেনারেটর দিয়ে পর্যটকদের সেবা দেওয়া হচ্ছিল। এখন জ্বালানি তেলের সংকটে ওই সেবাও বন্ধ রাখতে হচ্ছে। গরমে শিশুরা কষ্ট পাচ্ছে। অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
খাবার সংকটের কথা জানিয়ে বিজয় ঘোষ বলেন, সাজেক ভ্যালিতে অগ্রিম খাবার তেমন মজুত রাখা হয় না। ৪০ কিলোমিটার দূরে বাঘাইহাট বাজার থেকে খাবার নিয়ে যেতে হয়। এ অবস্থায় এখন খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে। কারণ অবরোধের জন্য খাবার নেওয়া যাচ্ছে না বাঘাইহাট থেকে। খাবার না থাকায় রোববার থেকে মনটানা রেস্টুরেন্ট বন্ধ হয়ে গেছে। কটেজের লোকজনের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করতে হিমশিম খাচ্ছি।
সাজেকের নিরিবিলি কটেজের মালিক মো. ফয়সাল আহমেদ জানান, সাজেকে প্রচুর পর্যটক আটকা পড়েছেন। অবরোধের কারণে তেল নেওয়া সম্ভব না হওয়ায় পানিসহ বেশ কিছু সংকট দেখা দিয়েছে। যদি পর্যটকদের দ্রুত ফেরানো না যায়, খুব খারাপ অবস্থা দেখা দেবে।
ছাউনি কটেজের মালিক মো. ইমনারুল আলম বলেন, সাজেকে পর্যটকরা আটকা পড়েছেন। তাদের ফিরিয়ে নেওয়াটা জরুরি। যে অবস্থা তৈরি হয়েছে, তাতে পর্যটকরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন।
রাঙ্গামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বলেন, সাজেকে আটকে পড়া পর্যটকদের বিভিন্ন সংকটের বিষয়টি আমরা জেনেছি। বিভিন্ন জনের সঙ্গে কথা বলছি। অবরোধ শেষ হওয়ায় মঙ্গলবার সকালে তারা সাজেক ছাড়তে পারবেন।
সারাবাংলা/টিআর