Thursday 17 Oct 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘স্বৈরাচার পুনর্বাসন হলে দেশ হবে জল্লাদের উল্লাস ভূমি’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৭ অক্টোবর ২০২৪ ১৫:০৭

ঢাকা: ‘পতিত স্বৈরাচার পুনর্বাসন হলে বাংলাদেশ হবে জল্লাদের উল্লাস ভূমি’— এমনটিই মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

সোমবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে ডেঙ্গু প্রতিরোধে গণসচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।

রিজভী বলেন, ‘কেউ কেউ যখন স্বৈরাচার পুনর্বাসনের কথা বলে, তখন বিপজ্জনক বার্তা দেওয়া হয় জনগণের কাছে। যখন কোনো উপদেষ্টা বলেন, তাদের নিজেদের ঘর গুছানোর জন্য, সেটি অত্যন্ত বিপদজ্জনক বার্তা দেয়। যারা এতদিন গুম-খুন আর আয়না ঘরের সংস্কৃতি তৈরি করেছিল তাদের যদি পুনর্বাসন হয়, তাহলে এদেশে আর মানুষ বসবাস করতে পারবে না, এদেশ হবে জল্লাদের উল্লাস ভূমি। এখানে গণতন্ত্র, কথা বলা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা চির দিনের জন্য কবরস্থ হয়ে যাবে, গোরস্থানে চলে যাবে।’

তিনি বলেন, ‘এখন যারা অ্যাডভাইজার হচ্ছে, বিভিন্ন পদে যাচ্ছেন তারা যখন এই ধরনের বার্তা (আওয়ামী লীগের ঘর গোছানো উচিত) দেন, তখন এটা সাংঘাতিক ধরনের মরণঘাতী বার্তা হয়। এটা হতে পারে না। যারা স্বৈরাচার গুম-খুন, আয়না ঘরের সংস্কৃতি চালু করেছিল, যারা গণতন্ত্রকামী মানুষকে ধরে নিয়ে সেখানে (আয়না ঘর) বছরের পর বছর আটকিয়ে রেখেছিল, হাত-পা পঙ্গু করে দিয়েছিল, যাদের জীবন কেড়ে নিয়েছিল সেই সমস্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের পোস্টিং দেওয়া হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ জায়াগায়। এটাই যদি উদ্দেশ্য হয় এই অন্তবর্তী সরকারের- তাহলে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের কি হবে?’

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নতুন সচিব নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তুলে রিজভী বলেন, ‘আমরা শুনতে পারছি, বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে দেখছি যে, ঘাপটি মেরে থাকা স্বৈরাচারের সুবিধাভোগী দোসরদের পুনর্বাসন করছে সরকার। একজন রাষ্ট্রদূত কাতারে ছিলেন, কাতারে কারও (প্রবাসী) যদি ভিসার মেয়াদ শেষ হতো সেগুলোকে তিনি নবায়ন করতেন না। তিনি (রাষ্ট্রদূত) খবর নিতেন ওই সমস্ত লোক কোনো দল করে, কাদের সমর্থক?’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে অধিকাংশ প্রবাসী বিএনপির সমর্থক। তাদের তিনি (ওই রাষ্ট্রদূত) নানাভাবে হয়রানি করেছেন, ভিসা নবায়ন করেননি। সেই লোককে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব করা হয়েছে বলে শুনতে পারছি। তাহলে অন্তবর্তী সরকার কাদের পুনর্বাসন করছে? যারা জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাকতা করেছে, যারা শহিদের লাশকে অপবিত্র করছে, শহিদের আত্মদান ও রক্তকে যারা বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছে, তাদেরকে?’

রিজভী বলেন,‘এই অন্তবর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে আমরা শ্রদ্ধা করি, সম্মান করি। তাকে বিষয়গুলো দেখতে হবে। তার প্রতি জনগণের যে আস্থা সেই আস্থা যাতে ফলপ্রসূ হয়, সেটা দেখতে হবে। কারা কাতারের রাষ্ট্রদূতকে পররাষ্ট্র সচিব বানাচ্ছেন?’

তিনি বলেন, ‘একটা সরকারে বিভিন্ন ধরনের লোক থাকতে পারে, নিরপেক্ষ লোকও থাকবে, যারা কাজ করবেন। কিন্তু যারা শেখ হাসিনার মতো ফ্যাসিস্টকে সমর্থন করে বিরোধীদল দমনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে, তাদের যদি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসানো হয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের সচিব পদে নিয়োগ দেওয়া হয়, তাহলে এই সরকার প্রশ্নবিদ্ধ হবে।’

রিজভী বলেন, ‘এখনও অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি, দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য যে সব আইন-কানুন দরকার সেগুলো হয়নি। নির্বাচন কমিশন গঠন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতাসহ আরও যেসব সংস্কার কাজ আছে সেগুলো এখনও করা হয়নি। তার আগে যদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব পদে একজন বিতর্কিত এবং শেখ হাসিনার একজন সহযোগীকে বসানো হয়, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে ওইরকম বিতর্কিত ব্যক্তিদের বসানো হয়, তাহলে এই দেশ, এই দেশের জনগণ এবং বিপ্লবে দেড় হাজারেরও বেশি শহিদদেরকে অবমাননা করা হবে।’

বিজ্ঞাপন

এই সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, সহ স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক পারভেজ রেজা কাকন, সহ প্রচার সম্পাদক আসাদুল করীম শাহিন প্রমুখ।

সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম

উল্লাস ভূমি টপ নিউজ রিজভী স্বৈরাচার

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর