Thursday 14 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

১৪ বছরে সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পেই ৫১ হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি: টিআইবি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
৯ অক্টোবর ২০২৪ ১৭:১৭

ছবি: সারাবাংলা

ঢাকা: আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গত ১৪ বছরে সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের অধীনে বাস্তবায়িত উন্নয়ন প্রকল্পের নির্মাণ কাজেই ২৯ হাজার ২৩০ কোটি থেকে ৫০ হাজার ৮৩৫ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে বলে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) এক গবেষণায় উঠে এসেছে।

গবেষণার ফলাফলে বলা হয়েছে, ২০০৯-১০ থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সড়ক ও সেতু খাতে ১ লাখ ৬৯ হাজার ৪৪৯ কোটি ৯৩ লাখ টাকা অর্থ বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। এই অর্থের মধ্যে সার্বিকভাবে দুর্নীতির হার ২৩ থেকে ৪০ শতাংশ; যা টাকার অঙ্কে ২৯ হাজার ২৩০ কোটি টাকা থেকে ৫০ হাজার ৮৩৫ কোটি টাকা।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (৯ অক্টোবর) রাজধানীর ধানমন্ডির টিআইবি কার্যালয়ে ‘সড়ক ও মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক গবেষণা ফল উপস্থাপনের সময় এ তথ্য জানানো হয়। গবেষণা সম্পন্ন করেছেন মো. মোস্থফা কামাল ও মো. জুলকারনাইন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।

টিআইবির গবেষণাটিতে ঠিকাদার, সড়ক বিভাগের আমলা ও প্রকৌশলীসহ ৭৩ জনের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয় এবং ৪৮টি উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয় বিশ্লেষণ করা হয়। পাশাপাশি বিভিন্ন সূত্র থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এসবের ভিত্তিতে টিআইবি একটি প্রকল্পে মোট বরাদ্দের কত শতাংশ ঘুষ, দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে ব্যয় হয়, তা হিসাব করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, জনস্বার্থে নেওয়া প্রকল্পগুলোতে রাজনীতিবিদ, আমলা ও ঠিকাদারদের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় আঁতাত রয়েছে। একেবারে নিম্নপর্যায় থেকে শুরু করে উচ্চপর্যায় পর্যন্ত এসব দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করেছে।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগে ঘুষ লেনদেনে ২৩-৪০ শতাংশ অর্থ লোপাট হয়। ত্রিপক্ষীয় ‘সিন্ডিকেট’ (চক্র) ভাঙতে না পারলে দুর্নীতিবিরোধী কোন কার্যক্রম সফল হবে না।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০৯-১০ অর্থবছর থেকে ২০২৩-২৪ পর্যন্ত সময়ে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি অনুসারে সওজের উন্নয়ন প্রকল্পের মোট ব্যয় ছিল ১৬৯,৪৪৯ দশমিক ৯৩ কোটি টাকা বা ১৬৯ কোটি টাকা। ৪৮টি উন্নয়ন প্রকল্প ব্যয় বিশ্লেষণ; ভূমি অধিগ্রহণ, ইউটিলিটি অবকাঠামোট স্থানান্তর, বেতন-ভাতা, যানবাহন, স্টেশনারি ইত্যাদি ব্যয় ব্যতীত উন্নয়ন প্রকল্পের শুধু নির্মাণ বা উন্নয়ন সংক্রান্ত কাজের প্রাক্কলিত গড় ব্যয়ের হার ৭৫ শতাংশ। এ ব্যয়ের পরিমাণ ১২৭ কোটি টাকা।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, আমরা সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের নানা প্রকল্পের তথ্য চাইতে গেলে অনেক তথ্য আমাদের দেওয়া হয়নি। আমাদের প্রত্যাশা, যেসব তথ্য প্রকাশযোগ্য, সেগুলো যেন প্রকাশ করা হয়। তবে বাস্তব কথা হলো প্রতিষ্ঠানে কিছু ব্যক্তির পরিবর্তন হয়েছে, তবে প্রাতিষ্ঠানিক চর্চার তো পরিবর্তন হয়নি। তাই রাতারাতি পরিবর্তন আশা করছি না।

তিনি আরও বলেন, তাদের গবেষণা প্রতিবেদন শুধু দেশীয় অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্প বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। বিদেশি অর্থায়নের প্রকল্পগুলোতেও কমবেশি দুর্নীতি হয়েছে। দেশীয় আমলাতন্ত্রের সঙ্গে বিদেশি আমলাতন্ত্রের যোগসাজশ হয়েছে।

এছাড়া, সড়ক মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক গবেষণার ১৬টি সুপারিশও তুলে ধরা হয় সংবাদ সম্মেলনে।

সারাবাংলা/এনআর/ইআ

টিআইবি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর