Thursday 10 Oct 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘পাহারা দিয়ে দুর্গাপূজা সরকার চায় না’

স্পেশাল করসপন্ডেন্ট
১০ অক্টোবর ২০২৪ ১৮:৫৭

চট্টগ্রাম: পাহারা দিয়ে দুর্গাপূজা উদযাপনের সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মুক্তিযুদ্ধ এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বীরপ্রতীক।

বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে চলমান দুর্গাপূজা এবং বন্যা পরবর্তী পুনর্বাসন নিয়ে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এসময় প্রশাসনের বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি পূজা উদযাপন পরিষদের সংগঠকরা উপস্থিত ছিলেন।

বিজ্ঞাপন

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বলেন, ‘শারদীয় দুর্গাপূজার যে উৎসব, এটি সবার উৎসব। এসব উৎসবমুখর পরিবেশের একটি সহজাত প্রবৃত্তি আছে। মানুষ যখন সম্মিলিতভাবে উৎসব আয়োজনে সম্পৃক্ত হয়, তখন মানুষের মধ্যে আর দুষ্টবুদ্ধি থাকে না। সক্রিয়ভাবেই পরিবেশটা আনন্দমুখর হয়ে যায়। এটাকেই সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে।’

তিনি আরও বলেন ‘আমি কর্মকর্তাদের বলেছি, আপনারা সচেষ্ট থাকেন, দৃষ্টিটা সেখানে নিবদ্ধ করেন, মনটা সেখানে দেন। তবে কোনোভাবেই যেন মনে না হয়, পাহারা দিয়ে পূজা হচ্ছে। পাহারা দিয়ে দুর্গাপূজা আমরা চাই না, সরকার চায় না, আমরা কেউ চাই না। সবাইকে মনের আনন্দে উৎসব আয়োজনে সম্পৃক্ত হতে হবে। এটাই হোক আমাদের আগামীর অভিযাত্রা।’

এসময় পূজা উদযাপন পরিষদের সংগঠকরা নির্বাহী আদেশে দুর্গাপূজায় একদিন ‍ছুটি ঘোষণাকে সাধারণ ছুটি হিসেবে অন্তর্ভুক্তির দাবি জানান। জবাবে বিষয়টি সকল মহলের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানান উপদেষ্টা।

দলীয় রাজনীতির নামে দেশে বিভিন্ন জাতীয় উৎসবের চরিত্র হনন করা হয়েছে মন্তব্য করে উপদেষ্টা বলেন, ‘বিজয় দিবসে বিজয় মেলা অবশ্যই হবে। জনগণকে সম্পৃক্ত করেই হবে। অতীতের মতো বিভক্তি-বিভাজন আমরা চাই না। জনগণকে বলব, আপনারাই আইডিয়া দেন কেমন বাংলাদেশ আপনারা চান। পরিবারের সদস্যদের বলুন, তারা কেমন বাংলাদেশ দেখতে চান। জনগণ যেভাবে চান, সেভাবেই যেন বাংলাদেশকে পুনর্গঠন করা হয়। এদেশের জন্য বহু মানুষ আত্মত্যাগ করেছে, এ আত্মত্যাগ বৃথা যেতে দেয়া যাবে না।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘আইন প্রণীত হয় মানুষের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য। হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ কিংবা খ্রিস্টান- আমরা কেউই খণ্ডিত মানুষ নই। আইন কেবলমাত্র মানুষের জন্যই প্রণয়ন করা হয়। সুতরাং প্রত্যেক মানুষ আইনের সম অধিকার পাচ্ছে কি না, সেটি নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করছি।’

দুষ্টু রাজনীতি দারিদ্র্যকে পর্দার অন্তরালে ঢেকে রেখেছিল মন্তব্য করে ফারুক-ই-আজম বলেন, ‘আমি সম্প্রতি একটি ডাটা নিয়েছি। সেখানে দেখা যাচ্ছে, ৬২টি উপজেলায় ৮০ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছে। এটা কি কল্পনা করা যায় ? আমরা ঘূর্ণিঝড়, ভূমিকম্প– এগুলোকে দুর্যোগ আখ্যায়িত করছি। কিন্তু এই যে দারিদ্র্যের কষাঘাত, এই যে আশি শতাংশ মানুষ ৩০০ টাকায় শ্রম বিক্রি করছে, মৌসুম আসার আগেই শ্রম বিক্রি করে আগাম টাকা নিচ্ছে, নির্বিশেষে মানুষ, আমি বলছি না যে হিন্দু কিংবা মুসলমান, দুষ্টু রাজনীতি দিনের পর দিন এগুলোকে ঢেকে রেখেছিল। পর্দার অন্তরালে রাখা হয়েছিল।’

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানমের সভাপতিত্বে সভায় বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল ইসলাম, জেলা পুলিশ সুপার রায়হান উদ্দিন খান, সিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আবদুল মান্নান মিয়াসহ বিভিন্ন সংস্থার উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা সভায় উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/আরডি/এইচআই

উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম চট্টগ্রাম দুর্গাপূজা

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর