বায়ুদূষণে বিপর্যস্ত লাহোর, কৃত্রিম বৃষ্টিতে রেহাই পাওয়ার চেষ্টা
২৩ অক্টোবর ২০২৪ ১৫:৩২
বায়ুদূষণ পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে পাকিস্তানের লাহোরে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পাঞ্জাব সরকার লাহোরে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর চিন্তা করছে।
শীতের আগে ঘন কুয়াশার আস্তরণে ঢেকেছে লাহোর। নিঃশ্বাস নিতেই কষ্ট হচ্ছে বাসিন্দাদের। চোখ জ্বালা, শরীরে প্রদাহের মতো শারীরিক সমস্যা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করল প্রশাসন। মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশ থেকে ওই কথা বলা হয়েছে।
এ নিয়ে দ্বিতীয় বার লাহোরকে বিশ্বের দূষিত শহর বলে ঘোষণা করা হয়েছে। গত বছরের নভেম্বরে দেশটি বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় শীর্ষে এসেছিল। তখন পাঞ্জাব প্রদেশের রাজধানী লাহোরে কৃত্রিম বৃষ্টি ঝরানো হয়েছিল।
এ বিষয়ে পাঞ্জাবের সিনিয়র মন্ত্রী মরিয়ম আওরঙ্গজেবের জানান, পরিবেশ বিভাগ, আর্মি এভিয়েশন, সিভিল এভিয়েশন, পিসিএসআইআর এবং আবহাওয়া বিভাগকে সম্পৃক্ত করে একটি সহযোগিতামূলক কৌশল তৈরি করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ধোঁয়াশা মোকাবেলায় প্রয়োজনে কৃত্রিম বৃষ্টিপাত শুরু করা হবে, তবে ইতিমধ্যেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
সোমবার (২১ অক্টোবর) লাহোরকে বিশ্বের দূষিত শহর বলে ঘোষণা করা হয়েছে। এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) ছাড়িয়েছে ৩৯৪। একিউআই ৪৫০ ছাড়ালে দূষণের মাত্রা ‘অতি ভয়ানক’ বলে ধরা হয়। ওই অবস্থায় যাওয়ার আগে পদক্ষেপ করতে শুরু করেছে প্রশাসন।
মরিয়ম আওরঙ্গজেব বলেন, ‘গুরুতর ধোঁয়াশার মোকাবেলায় সমস্ত প্রশাসনিক ব্যবস্থা প্রস্তুত করা হয়েছে। আমরা প্রক্রিয়াটির জন্য আন্তর্জাতিক মান অনুসরণ করব।’ তিনি আরও বলেন প্রতিটি অপারেশনের জন্য ৫ থেকে ৭ মিলিয়ন রুপি খরচ হবে।
আওরঙ্গজেব আরও যোগ করে বলেন, যানবাহন, কারখানা এবং বিষাক্ত ধোঁয়া নির্গত অন্যান্য উৎসগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা করছে। এতে করে কৃত্রিম বৃষ্টিপাতের প্রয়োজনীতা হ্রাস পাবে।
লাহোরবাসীদের বেশির ভাগই এখন ভুগছেন চোখের সমস্যায়। চোখ জ্বালা, ত্বকে জ্বালা, শ্বাস-প্রশ্বাসে অসুবিধা, সর্দি-কাশি এখন ঘরে ঘরে।
এই পুরো প্রক্রিয়াটি তিনটি পর্যায়ে সম্পূর্ণ হবে। প্রথম পর্যায়ে বিশেষজ্ঞরা প্রক্রিয়াটির জন্য নির্দিষ্ট সময় ও স্থান চিহ্নিত করতে আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণ করবেন।
দ্বিতীয় পর্যায়ে উন্নত প্রযুক্তির স্থাপন করা হবে, মেঘের মধ্যে রাসায়নিকগুলো ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট মেশিন এবং সরঞ্জাম স্থাপন করা হবে। এই ডিভাইসগুলি স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করবে এবং উপযুক্ত আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ করবে।
তৃতীয় পর্যায়টি ব্যবহারিক পরীক্ষা হবে, যেখানে প্রথম কৃত্রিম বৃষ্টি প্ররোচিত করার জন্য নির্ধারিত দিনে রাসায়নিকগুলি মেঘের মধ্যে ছেড়ে দেওয়া হবে। এর প্রভাব মূল্যায়ন করতে এই প্রক্রিয়াটির ফলাফল পর্যবেক্ষণ করা হবে।
সারাবাংলা/এইচআই