‘হ্যালোইন’ কী এবং কেন?
৩১ অক্টোবর ২০২৪ ১২:০৮ | আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০২৪ ১৮:৪১
দুই হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে খ্রিষ্টান ধর্মালম্বীদের কাছে ‘হ্যালোইন’ একটি উল্লেখযোগ্য উৎসব। বিশ্বের প্রায় সব দেশে প্রতিবছর ৩১ অক্টোবর পালিত হয় ঐতিহ্যবাহী এই উৎসবটি। তবে পশ্চিমা বিশ্বে হ্যালোইন বেশ জাঁকজমকভাবেই পালন করা হয়।
প্রতিবছর অক্টোবর এলেই মানুষের মধ্যে হ্যালোইন নিয়ে আগ্রহ তৈরি হয়। বিশেষ করে হ্যালোইন উৎসবের পোশাক নিয়ে মানুষের আগ্রহের শেষ নেই। সেইসঙ্গে যোগ হয়েছে নানান ধরনের খাবারও।
হ্যালোইন শব্দের উৎপত্তি ১৭৪৫ সালের দিকে। হ্যালোইন’ বা ‘হ্যালোউইন’ শব্দটি এসেছে স্কটিশ ভাষার শব্দ ‘অল হ্যালোজ’ ইভ থেকে। হ্যালোইন শব্দের অর্থ ‘শোধিত সন্ধ্যা বা পবিত্র সন্ধ্যা’।
প্রায় দুই হাজার বছর আগে আয়ারল্যান্ড, ইংল্যান্ড ও উত্তর ফ্রান্সের কেল্টিক জাতিরা বাস করতো। তারা বিশ্বাস করতো অক্টোবরের শেষ দিনটি বিশ্ব ও আত্মিক জগতের মধ্যে ব্যবধান কমে আসতো। তাদের বিশ্বাস আত্মারা খুব সহজে এই সময়ে পৃথিবীতে ফিরে আসতো। ওইদিন উড়ন্ত ঝুড়িতে করে হ্যালোইন ডাইনি সারাআকাশ জুড়ে উড়ে বেড়ায়। এই ব্শ্বিাস থেকে দিনটি তারা ‘সাহ-উইন’ হিসেবে পালন করতো।
যখন রোমানরা ইউরোপের বেশিরভাগ অংশ জয় করে নিল, তখন খ্রিষ্টধর্ম কেল্টিক ভূমিতে ছড়িয়ে পড়ে। ধীরে ধীরে কেল্টিকদের এই বিশ্বাস এবং সংস্কৃতির ঐতিহ্যগুলো রোমানদের মাধ্যমে সারা ইউরোপ জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।
খ্রিষ্টানদের ‘অল সেন্টস’ বা ‘অল সোলস ডে’ উৎসব ‘অল-হ্যালোস’ নামে পরিচিতি লাভ করে। অল-হ্যালোস’র আগের রাত যাকে ‘অল হ্যালোস ইভ’ বলা হতো, সেটি হ্যালোইন নাম ধারণ করে।
উনিশ শতকের শেষ ভাগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ক্রমশই জনপ্রিয় হতে থাকে হ্যালোউইন। ১৮০০ দশকের শেষের দিকে আমেরিকায় ‘হ্যালোইন’ পালনে ছুটি ঘোষণা করা হয়।
হ্যালোউইন ও কুমড়ো
কেল্টিক প্রথা থেকেই কুমড়োর উল্লেখ পাওয়া যায়। সেই সময় অতৃপ্ত আত্মা তাড়াতে টারনিপ ব্যবহার করা হতো। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে টারনিপ চাষ হয় না। তাই আইরিশরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার পর টারনিপের বদলে কুমড়ো ব্যবহার শুরু করে।
হ্যালোইনের ঐতিহ্য
মধ্যযুগীয় ইংল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ডে মানুষ মৃতদের আত্মার প্রতীকী পোশাক পরে, ঘরে ঘরে গিয়ে খাবার বা ‘সোল কেক’ সংগ্রহ করতো (একটি খ্রিষ্টান রীতি, যা ‘সোলিং’ নামে পরিচিত)। এ সময় তারা খাবারের বিনিময়ে প্রার্থনা বা গানের প্রস্তাব দিত। যদিও খ্রিষ্টানরা ঐতিহ্যগতভাবে তাদের প্রিয়জনের জন্য প্রার্থনা করতো।
ভিক্টোরিয়ান যুগের কাছাকাছি একধরনের পেস্ট্রি দেওয়া হতো, যাকে বলা হয় ‘সোল কেক’। এটি বিস্কুট বা কেক’র মতো কিছু। তবে আধুনিক সময়ে এসে যুক্ত হয়েছে মিষ্টি, চকোলেট ও নানান ধরনের খাবার।
সারাবাংলা/এইচআই/পিটিএম