আ.লীগ নেতা ইকবালসহ ১৫ জনকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
৬ নভেম্বর ২০২৪ ১৯:৪২
ঢাকা: ২০০১ সালে রাজধানীর মালিবাগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের মিছিলে গুলিতে চার জন নিহতের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা, সাবেক সংসদ সদস্য ডা. এইচ বি এম ইকবালসহ ১৫ জনকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বুধবার (৬ নভেম্বর) বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি সগীর হোসেন লিয়নের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। ওই মামলার বাদী তৎকালীন খিলগাঁও থানা বিএনপির সভাপতি ইউনুস মৃধার আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে এ আদেশ দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. আমিনুল ইসলাম।
আত্মসমর্পণের নির্দেশ পাওয়া অন্যরা হলেন- শাখাওয়াত হোসেন ওরফে নানু, কবির উদ্দিন আহমেদ, আব্দুস সালাম, মুন্সি কামরুজ্জামান কাজল, মনিরুজ্জামান ওরফে লিটন, এমদাদুল হক ওরফে বাচ্চু, আব্দুল হালিম, আবুল বাশার, মো. জসিম উদ্দিন ওরফে জসিম, দুলাল ওরফে লন্ডি দুলাল, নুরুন্নবি চৌধুরী শাওন, তারেক সামসুল খান ওরফে হিমু, কামরুল মোরশেদ ওরফে খোকা ও কিরণ।
আইনজীবী আমিনুল ইসলাম জানান, ২০০১ সালে ১৩ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর মালিবাগের চামেলিবাগে বিএনপির মিছিলে প্রকাশ্যে গুলি করে চার জনকে হত্যা মামলায় আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ডা. এইচ বি এম ইকবাল, সাবেক এমপি নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনসহ ১৫ আসামিকে আত্মসমর্পনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদেশ পাওয়ার পর অবিলম্বে তাদের বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে।
জানা গেছে, ২০০১ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাসের নেতৃত্বে মালিবাগে একটি মিছিলে তৎকালীন সরকার দলীয় আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ডা. এইচ বি এম ইকবালের নির্দেশে সরাসরি গুলি চালানো হয়। ঘটনাস্থলেই তিনজন বিএনপির কর্মী নিহত হন। পরে হাসপাতালে আরও একজন মারা যান। তারা হলেন, জসিমউদ্দিন, খোকন, আব্দুর রশিদ মোল্লা ও নাজমা আক্তার।
ঘটনার পরদিন দেশের তৎকালীন প্রতিটি দৈনিক পত্রিকায় সন্ত্রাসী দুলাল ও খোরশেদ আলম মিছিলের ভেতর থেকে পিস্তল দিয়ে সিনেমা স্টাইলে গুলি করছেন এমন ছবিও ছাপা হয়। এ ঘটনায় ২০০২ সালের ২৯ ডিসেম্বর ডা. এইচ বি এম ইকবালসহ ২৪ জনকে অভিযুক্ত করে মামলাটিতে চার্জশিট দাখিল করা হয়।
এদিকে ২০০৯ সালের ১৭ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব আবু সাঈদ মোল্লা মামলাটি থেকে কয়েকজন আসামির নাম প্রত্যাহারের সুপারিশ করেন। সে অনুসারে ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ২০১০ সালের ২৬ আগস্ট ও ২৯ সেপ্টেম্বর ১৫ জন আসামিকে অব্যাহতি দেন। আর বাকিদের বিরুদ্ধে বিচার চলমান।
আইনজীবী আমিনুল ইসলাম বলেন, কেন অব্যাহতি দিয়েছেন তার পক্ষে কোনো বিস্তারিত মতামত দেননি বিচারক। এ কারণে পট পরিবর্তনের পর মামলার বাদী ইউনুছ মৃধা হাইকোর্টে ২০১০ সালের দুটি আদেশ বাতিল চেয়ে আবেদন করেন। সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে দুটি আদেশের কার্যকারিতা স্থগিত করে রুল জারি করেন। আর ১৫ আসামিকে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। নির্ধারিত সময়ে আত্মসমর্পণ না করলে তাদের গ্রেফতার করতে হবে। এ ছাড়া মামলাটিতে এখন তাদের বিরুদ্ধে বিচার চলবে। আর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মামলাটি ঢাকার দায়রা আদালতে আগামী বছরের ২৫ জানুয়ারি সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য রয়েছে। গত ২৬ আগস্ট ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা আদালত (৮ম আদালত) এর বিচারক বেগম সেলিনা আক্তার এ দিন ধার্য করেন।
সারাবাংলা/কেআইএফ/এসআর