Monday 18 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাজারে এসেছে শীতকালীন সবজি, তবুও কমছে না দাম

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৩ নভেম্বর ২০২৪ ১১:১১

বাজারে সবজি, বিশেষ করে শীতকালীন সবজির সরবরাহ পর্যাপ্ত। তবে মূলা ছাড়া আর কোনো সবজির দামে খুব একটা প্রভাব পড়েনি। ছবি: শ্যামল নন্দী/ সারাবাংলা

ঢাকা: শীত আসি আসি করছে। এরই মধ্যে বাজারে আসতে শুরু করেছে শীতকালীন নানা সবজি। কিন্তু দাম এখনো চড়া। মাঝে মধ্যে দু-একটি পণ্যের দাম কিছুটা কমলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ঊর্ধ্বমূল্য। আর অতিরিক্ত মূল্য নিম্নআয়ের মানুষকে ফেলেছে বেকায়দায় । চড়া বাজারে সংসার চালাতে অনেকেই খাচ্ছেন হিমশিম।

বুধবার (১৩ নভেম্বর) রাজধানীর বানিজ্যিক এলাকা মতিঝিল সংলগ্ন বাজারগুলোতে এ চিত্র দেখা গেছে। দ্রব্যমূল্যের এ ঊর্ধ্বগতি নিয়ে দোকানির ওপরে ক্ষোভ ঝাড়ছেন ভোক্তারা। এদিকে বাজারে পণ্যের দাম বাড়তি থাকায় বাজারের স্থায়ী দোকান ছেড়ে ভ্যান ও ফুটপাতে পণ্য নিয়ে বসছেন কেউ কেউ।

বিজ্ঞাপন

মতিঝিল বাজারের দোকানিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এদিন সকালে আলু বিক্রি হয়েছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা প্রতি কেজি, বেগুন প্রতি কেজি ১০০ টাকা থেকে ১৬০ টাকা পর্যন্ত, টমেটো ১০০ টাকা, গাজর ১৮০ টাকা, শিম ১০০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, কাঁচা কলার হালি ৫০ টাকা, ঢেড়শ ৬০ টাকা, কচুর লতি ১০০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, লাউ সাইজ অনুযায়ী ৬০ টাকা থেকে ১০০ টাকা, ফুল কপির পিস ৫০ টাকা থেকে শুরু, বাঁধাকপি ৬০ টাকা থেকে শুরু, কচু মুখি ৮০ টাকা কেজি, পেঁপে ৫০ টাকা, মুলা ৫০ টাকা, চাল কুমড়া প্রতি পিস ৫০ টাকা থেকে শুরু, করলা ৭০ টাকা কেজি, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, ২ টা কুমড়া শাকের ডগা ৬০ টাকা, লাউ শাকের চারটি ডগা ৫০ টাকা, লাল শাকের মুঠি ২০ টাকা, সরষে শাক ১ মুঠি ৩০ টাকা। ক্রেতারা আসছেন আর দাম শুনে তর্কে জড়াচ্ছেন দোকানির সঙ্গে। এক দোকান থেকে আরেক দোকান আরেক দোকান থেকে আরেক দোকান ঘুরেই কাটিয়ে দিচ্ছেন কেউ কেউ। এ চিত্র রাজধানীর গোপীবাগ রেললাইন সংলগ্ন বাজারের। কেউ আবার মূল বাজারে কম দামে না পেয়ে গলির ভেতরে ফুটপাথ ও ভ্যানে বিক্রেতার কাছে ছুটছেন।

বিজ্ঞাপন

তাই বাজারের চেয়ে অলি-গলির দোকানগুলোতেই যেন ক্রেতাদের ভিড় বেশি। ক্রেতাদের কথা বাজারে দোকান ভাড়া বেশি দিতে হয় বলে দোকানিরা সবজির দাম বেশি চাচ্ছে।

এদিকে ভোক্তাদের অভিযোগ, দিনকে দিন বাজারে দাম যেন বেড়েই যাচ্ছে। কদিন আগে সাধারণ মানুষের খাবার ডিমের দাম ছিল বাড়তি। এখন শীতের সবজিতে বাজার ভর্তি অথচ দাম বেশি।

বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা হাসিবুর রহমান বলেন, ‘বাজার থেকে গলিতে আসলাম হয়তো কিছুটা কমে পাব বলে। কিছু কিছু তরকারিতে চার পাচ টাকা কম পেলাম। কিন্তু এটা তো সমাধান না। ৫০০ টাকার সবজি কিনেছি তিন দিন যাবেনা এতে।’

সঞ্জিতা বসু বলেন, ‘বাচ্চাকে স্কুলে দিয়ে প্রতিদিন বাজার করি। আগে এক কেজি কিনতাম এখন সেখানে অর্ধেক নিতে হচ্ছে। আমাদের আয় তো বাড়েনি। তাই চাহিদা কমিয়ে দিয়েছি। এক মুঠি শাক দশ টাকা দিয়ে কিনেছি এখন ২০ টাকা। এক মুঠিতে এতো কম যে একারই হয়না। ৪০ টাকা দিয়ে শাক কিনে পুষ্টি কতটুকু পাব?’

গোপিবাগের অলি গলিতে প্রচুর সবজির ভ্যান চোখে পড়েছে। আবার ফুটপাতেও এসকল পণ্য বিক্রি করতে দেখা গেছে।

ভ্যান দোকানি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বাজারে স্থায়ী দোকানে ফিক্সড ভাড়া দিতে হয়। বিক্রি হোক বা না হোক মাস শেষে ভাড়া দিতেই হবে। আরও অনেক টাকা দিতে হয় বাজার কমিটিকে। বাজারে পণ্যের দাম বাড়াতে কাস্টমার এখন নির্ধারিত নেই। আমার চেয়ে যার কাছে কম দামে পাচ্ছে সেখানে চলে যাচ্ছে। কিন্তু আমি তো কমে দিয়ে পোষাতে পারছিনা। সেজন্য দোকান ছেড়ে দিয়ে ভ্যান ভাড়া করে সবজি বিক্রি করছি। এতে ভাড়া কম দিতে হচ্ছে আবার বিক্রিও বেশি হচ্ছে।

আবার কেউ কেউ ফুটপাথেও দোকান নিয়ে বসছে। একই এলাকার দোকানদার মোখলেসুর রহমান পেছনের আন্ডার কনস্ট্রাকশন বাড়ি দেখিয়ে বলেন, ‘এই বাড়ির সামনে যেহেতু বসেছি সেজন্য বাড়িওয়ালাকে প্রতিদিন ৫০ টাকা করে ভাড়া দিতে হয়। বাজারে তার স্থায়ী দোকান ছিলো দুই মাস ধরে ফুটপাথে সবজি বিক্রি করছেন। ফুটপাতে মাছ বিক্রি করতেও দেখা গেলো। তবে সে দোকানের সংখ্যা খুবই কম।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে বাজারে সবজির আমদানি বেশ থাকলেও গত দুই এক দিনের ব্যবধানে দাম খুব একটা কমেনি। বরং কিছু কিছু পন্যের দাম খানিকটা বেড়েছে। সবজি বিক্রেতারা জানিয়েছেন, শীতের সবজির সরবরাহ দিন দিন বাড়ছে। কিছুদিনের মধ্যে সবজির দাম কমে আসবে।

সারাবাংলা/জেআর/এমপি

দ্রব্যমূল্য উর্ধ্বগতি বাজার

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর