কপ সম্মেলনের মধ্যেই পরিবেশ কর্মীদের দমনে অভিযুক্ত আজারবাইজান সরকার
১৫ নভেম্বর ২০২৪ ২২:৩০
আজারবাইজানের বাকুতে জলবায়ুবিষয়ক বৈশ্বিক সবচেয়ে সম্মেলন চলাকালেই দেশটির পরিবেশ অধিকার কর্মীসহ রাজনৈতিক বিরোধীদের দমন ও আইনি অধিকার খর্বের অভিযোগ উঠেছে। মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো বলছে, কপ২৯ সম্মেলনকে ব্যবহার করেই এসব দমন-পীড়ন চালাচ্ছে দেশটির সরকার।
ভুক্তভোগীসহ বিভিন্ন মানবাধিকার গোষ্ঠীর অভিযোগের বরাত দিয়ে শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) বিবিসি এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তবে আজারবাইজান সরকার এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।
আরও পড়ুন-জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় কপ সংস্কারের দাবি বিশেষজ্ঞদের
বিশ্বনেতারা বর্তমানে আজারবাইজানের বাকুতে কপ২৯ জলবায়ু সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন। তবে মানবাধিকার সংস্থাগুলো আজারবাইজানে পরিবেশ কর্মীদের অবস্থান নিয়ে উদ্বেগ জনিয়েছে। সেই সঙ্গে সংস্থাগুলো আজারবাইজানে জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনের বিষয়টি পুনরায় পর্যালোচনা করার আহ্বান জানিয়েছে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের নাটালিয়া নোজাদজে বিবিসিকে বলেছেন, ‘গত বছরের নভেম্বরে আজারবাইজানকে কপ২৯-এর আয়োজক দেশ ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে দেশটির সরকারের বিপক্ষে কথা বলা আরও কঠিন হয়ে পড়েছে।’
নাটালিয়া আরও বলেন, ‘আমরা বিরুদ্ধমতের ব্যক্তিদের নাটকীয়ভাবে গ্রেফতার বেড়ে যাওয়া দেখেছি। সরকার সমালোচনামূলক বা তার রাজনৈতিক এজেন্ডার বিরোধী যেকোনো মতামতে দমন করতে দেখছি।’
ফর ফ্রিডম অব পলিটিক্যাল প্রিজনারস ইন আজারবাইজানের তথ্য অনুযায়ী, চলতি শতকের প্রথম দশকের পরে এই প্রথম রাজনৈতিক ও পরিবেশ কর্মী, সাংবাদিক এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষসহ ৩০০ জনেরও বেশি গ্রেফতার হয়েছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের তথ্য বলছে, লন্ডন ইউনিভার্সিটি এলএসইর অধ্যাপক গুবাদ ইবাদোগলু (৫৩) আজারবাইজানের তেল ও গ্যাস খাত এবং পরিবেশগত সমস্যা নিয়ে গবেষণা করেন। ২০২৩ সালের গ্রীষ্মে তাকে জালিয়াতির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। এক বছরেরও বেশি সময় বন্দি থাকেন তিনি।
এ সপ্তাহে বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইবাদোগলু বলেছেন, ‘যাদের অভিমত অন্যদের প্রভাবিত করতে পারে, তাদের গ্রেফতার করছে সরকার। আমি মনে করি, এটি কর্তৃত্ববাদী সরকারের অন্যতম হাতিয়ার।’
আনার মাম্মাদলি আজারবাইজান সরকারকে প্যারিস চুক্তির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জীবাশ্ম জ্বালানি নির্গমন কমানোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। এর দুই মাস পর তাকে গ্রেফতার করা হয়।
নাজিম বেদেমিরলিকে চাঁদাবাজির দায়ে অক্টোবরে আট বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। গত বছর নিজ গ্রামের কাছে সোনার খনিতে অভিযানের প্রতিবাদ করেছিলেন তিনি।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের পক্ষ থেকে এ ধরনের অভিযোগগুলোকে ‘সন্দেহজনক’ বলে অভিহিত করা হয়েছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, একদিকে কপ২৯ সম্মেলন আয়োজন করে বিশ্বনেতাদের আতিথেয়তা দিয়ে বৈশ্বিক জলবায়ু সংকট নিসরনের উপায় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, অন্যদিকে পরিবেশ নিয়ে সোচ্চার ব্যক্তিদেরই কারাবন্দি করা হচ্ছে। এমন দ্বিচারিতার অবসান ঘটাতে আজারবাইজান সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
সারাবাংলা/এইচআই/টিআর