বাগেরহাটে ইউএনওর ব্যাংক হিসেবে অস্বাভাবিক লেনদেন
২২ নভেম্বর ২০২৪ ২০:৫৫
বাগেরহাট: বাগেরহাটে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নামে ব্যাংক হিসেবে কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। ব্যাংক হিসাবটির নাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, বাগেরহাট। হিসাব নম্বর ১০৮৩৩০১০০১৯৬৮। তবে এই হিসাব খোলা হয়েছে খুলনার এক নারীর জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে। খোলার চার মাসে লেনদেন হয়েছে কোটি টাকা।
অভিযোগ ওঠেছে ইউএনও কার্যালয় ও ব্যাংকের অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ওই ঘটনা ঘটেছে।
বাগেরহাট জেলা প্রশাসক আহমেদ কামরুল হাসানের জানান, বিষয়টির সমাধান হয়ে গেছে। তবে জড়িতদের পরিচয় কিংবা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি তিনি এড়িয়ে গেছেন।
ব্যাংক এশিয়ার খুলনা শাখার হিসাবের বিবরণী থেকে জানা যায়, ২০২৩ সালের ১৮ নভেম্বর ব্যাংক এশিয়ার এজেন্ট ব্যাংকিং শাখায় (হিসাব নাম্বার-১০৮৩৩০১০০১৯৬৮) হিসাব নম্বরটি চালু করা হয়। খোলার একদিন পরে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি চেকের মাধ্যমে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ প্রকল্পের ৪৮ লাখ ৫৪ হাজার ৩০২ টাকা ৪৯ পয়সা জমা হয় এই হিসাবে। কয়েক দিনের মধ্যে একাধিক উপায়ে প্রায় সব টাকা সরিয়ে নেওয়া হয়। এভাবে ২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত ছয় ধাপে মোট ৯৭ লাখ ৪ হাজার ৩০২ টাকা ৪৯ পয়সা ওই অ্যাকাউন্টে জমা করা হয়। বর্তমানে ওই অ্যাকাউন্টে ১০১ টাকা জমা রয়েছে।
ব্যাংকে সুমি বেগমের ঠিকানা দেওয়া হয় খুলনার রূপসা উপজেলার চর রূপসা এলাকায়। খোঁজ নিয়ে সুমি বেগমের সন্ধান মেলেনি।
ব্যাংক এশিয়ার খুলনা শাখার দেওয়া তথ্য জানা যায়, বাগেরহাটের এজেন্ট ব্যাংকিং শাখায় এই অ্যাকাউন্টটি খোলা হয়। বাগেরহাটের এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের প্রতিনিধি মামুনুর রশীদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, ‘বিষয়টির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এজেন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’ তিনি এর বেশি জানাতে রাজি হননি।
বাগেরহাট সদর উপজেলা ইউএনও দীপংকর দাশ ওই অ্যাকাউন্ট ও অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য দেখে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘প্রশাসনের কারও যোগসাজশ ছাড়া এই কাজ করা অসম্ভব।’
সন্দেহজনক ব্যাংক হিসাবটিতে যে সময়ে লেনদেন হয়েছে, ওই সময়ে বাগেরহাট সদরের ইউএনও হিসেবে দায়িত্ব পালন করা মো. রাশেদুজ্জামান । তিনি এখন নড়াইলের কালিয়ার ইউএনও হিসেবে কর্মরত। এ বিষয়ে কথা বলার জন্য কয়েকবার ফোন করা হলেও, তাকে পাওয়া যায়নি।