অক্টোবরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪৭৫

ফাইল ছবি

ঢাকা: অক্টোবরে সারাদেশে ৪৫২ সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৭৫ জন নিহত হয়েছেন। আর আহত হয়েছেন ৮১৫ জন। এ তথ্য যাত্রী কল্যাণ সমিতির। শনিবার (২৩ নভেম্বর) সমিতির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই দুর্ঘটনার মধ্যে রেলপথে ৬৩ দুর্ঘটনায় ৭৬ জন নিহত এবং ২৪ জন আহত হয়েছেন। নৌ পথে ১৯ দুর্ঘটনায় ২৪ জন নিহত ও ৩৬ জন আহত এবং ৯ জন নিখোঁজ রয়েছেন। সড়ক, রেল ও নৌ-পথে সর্বমোট ৫৩৪ দুর্ঘটনায় ৫৭৫ জন নিহত এবং ৮৭৫ জন আহত হয়েছেন। এই সময়ে ১৩৮ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৬৩ জন নিহত এবং ২৩৯ জন আহত হয়েছেন। যা মোট দুর্ঘটনার ৩০ দশমিক ৫৩ শতাংশ, নিহতের ৩৪ দশমিক ৩১ শতাংশ ও আহতের ২৯ দশমিক ৩২ শতাংশ।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।

জাতীয়, আঞ্চলিক, অনলাইন এবং ইলেক্ট্রনিক সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌ পথের সংগঠিত দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং করে তৈরি করা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে ১৭ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ১৪৯ জন চালক, ১৩৭ জন পথচারী, ৫১ জন পরিবহণ শ্রমিক, ৭৩ জন শিক্ষার্থী, ১৮ জন শিক্ষক, ৭৬ জন নারী, ৬২ জন শিশু, পাঁচজন চিকিৎসক, ৯ জন সাংবাদিক এবং ১৩ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় মিলেছে।

এদের মধ্যে নিহত হয়েছেন- ছয় জন পুলিশ সদস্য, তিন সেনা সদস্য, একজন আনসার সদস্য, ১২৪ জন বিভিন্ন পরিবহণের চালক, ১১৭ জন পথচারী, ৫৮ জন নারী, ৫১ জন শিশু, ৪৯ জন শিক্ষার্থী, ৩২ জন পরিবহণ শ্রমিক, ১৫ জন শিক্ষক, চার জন চিকিৎসক, ছয় সাংবাদিক এবং ১৬ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী।

সংগঠনটি মনে করে, দেশের সড়ক-মহাসড়কে ট্রাফিক পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশের অনুপস্থিতি সুযোগে আইন লংঘন করে যানবাহনের অবাধ চলাচল। জাতীয় মহাসড়কে রোড সাইন বা রোড মার্কিং, সড়কবাতি না থাকায় এবং অতি বৃষ্টির কারনে সড়কের মাঝে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় এসব গর্তের কারনে যানবাহন চলাচলে ঝুঁকি বেড়েছে। জাতীয়, আঞ্চলিক ও ফিডার রোডে টানিং চিহ্ন না থাকার ফলে নতুন চালকের এসব সড়কে দুর্ঘটনায় পতিত হয়েছে।

মহাসড়কের নির্মাণ ত্রুটি, যানবাহনের ত্রুটি, ট্রাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা। উল্টোপথে যানবাহন চালানো, সড়কে চাদাঁবাজি, পণ্যবাহী যানে যাত্রী পরিবহণ। অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, অতিরিক্ত যাত্রী বহন, বেপরোয়া যানবাহন চালানো এবং একজন চালক অতিরিক্ত সময় ধরে যানবাহন চালানো সড়ক দুর্ঘটনার কারণ।

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে কিছু সুপারিশ করা হয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে। সেগুলো হলো-

• মোটরসাইকেল ও ইজিবাইকের মত ছোট ছোট যানবাহন আমদানি ও নিবন্ধন বন্ধ করা ।
• জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে রাতের বেলায় অবাধে চলাচলের জন্য আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা।
• দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ, যানবাহনের ডিজিটাল পদ্ধতিতে ফিটনেস প্রদান।
• ধীরগতির যান ও দ্রুতগতির যানের জন্য আলাদা লেনের ব্যবস্থা করা।
• সড়কে চাদাঁবাজি বন্ধ করা, চালকদের বেতন ও কর্মঘণ্টা সুনিশ্চিত করা।
• মহাসড়কে ফুটপাত ও পথচারী পারাপারের ব্যবস্থা রাখা, রোড সাইন, রোড মার্কিং স্থাপন করা।
• সড়ক পরিবহণ আইন যথাযতভাবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রয়োগ করা।
• উন্নতমানের আধুনিক বাস নেটওর্য়াক গড়ে তোলা, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।
• মানসম্মত সড়ক নির্মাণ ও মেরামত সুনিশ্চিত করা, নিয়মিত রোড সেইফটি অডিট করা।
• মেয়াদোর্ত্তীন গণপরিবহণ ও দীর্ঘদিন যাবৎ ফিটনেসহীন যানবাহন স্ক্যাপ করার উদ্যোগ নেওয়া এবং
• বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ সড়ক-মহাসড়ক দ্রুত মেরামতের ব্যবস্থা করা।

সারাবাংলা/জেআর/ইআ/আরএস

যাত্রী কল্যাণ সমিতি সড়ক দুর্ঘটনা