ট্রাইব্যুনাল আইনে ৩ বাহিনীর সঙ্গে পুলিশ-র্যাব-গোয়েন্দা সংস্থারও বিচার করা যাবে
২৫ নভেম্বর ২০২৪ ১৭:২৯
ঢাকা: ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৪’ আইনে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য বা তিন বাহিনীর সঙ্গে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, গোয়েন্দা সংস্থা ও আনসার বাহিনীরও বিচার করা যাবে বলে জানিয়েছেন প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামিম।
তিনি বলেন, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অভিযোগে করা যেসব মামলা চলছিল, তা সদ্য সংশোধিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনেও চলবে।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে পুরাতন হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে অবস্থিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামিম এ কথা জানান।
‘আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩’ সংশোধনের পর ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৪’ করা হয়েছে। যা রোববার (২৪ নভেম্বর) গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়। এ আইনের সংশোধন তুলে ধরতেই আজ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের দফতর।
বিদ্যমান আইনে কী কী পরিবর্তন আনা হয়েছে, সংবাদ সম্মেলনে তা তুলে ধরেন ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী তামিম।
ন্যায়বিচারের স্বার্থে ও আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখতে ওই সংশোধন আনা হয়েছে জানিয়ে গাজী তামিম বলেন, আইনটি সংশোধন করে আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা হয়েছে। আইনে যেসব দুর্বলতা ছিল ও আন্তর্জাতিকভাবে যে প্রশ্নগুলো আইনটি সম্পর্কে তোলা হতো, সেসবের সমাধান করে এই সংশোধনী আনা হয়েছে।
প্রসিকিউটর গাজী তামিম বলেন, ‘ডিফেন্সকে প্রস্তুত করার জন্য আগে আসামিদের তিন সপ্তাহ সময় দেওয়া হতো, এখন তা বাড়িয়ে ছয় সপ্তাহ করা হয়েছে। আগে প্রসিকিউশন সীমিত নথিপত্র ডিফেন্সকে দিতে পারত, এখন যেকোনো নথিপত্র আদালতের কাছে চাইলে পাবে।’
যুদ্ধাপরাধের যেসব মামলা চলমান ছিল, সংশোধিত আইন সেসবের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে কি না, সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্নের জবাবে প্রসিকিউটর গাজী তামিম বলেন, ‘হ্যাঁ, এখানে বলে দেওয়া হয়েছে যে এ সংশোধনী ২০০৯ সাল থেকে কার্যকর হবে।’
জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে হওয়া গুম-খুনের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে সংশোধনী এনেছে অন্তর্বর্তী সরকার। রোববার (২৪ নভেম্বর) সেটা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, অভিযোগের শুনানির সময় ডিফেন্সকে (আসামিপক্ষ) তার সব সাক্ষীর নাম বা তালিকা দিতে হতো। এখন বিচারের যেকোনো সময় সাক্ষীকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করতে পারবে ডিফেন্স।
সশস্ত্র বাহিনীর কোনো সদস্যের (মেম্বার অব আর্মড ফোর্স) বিরুদ্ধে আগে ওই আইনে বিচার করা যেত। এখন এর পরিবর্তে মেম্বার অব ডিসিপ্লিনারি ফোর্স বা তিন বাহিনীর সঙ্গে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, গোয়েন্দা সংস্থা ও আনসার বাহিনীকেও এ আইনে বিচার করা যাবে বলে জানান গাজী তামিম।
এ সংবাদ সম্মেলনে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর আবদুল্লাহ আল নোমানও উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/কেআইএফ