আমাদের জাতীয় ঐক্য ধরে রাখাতে হবে: জামায়াতের আমির
২৯ নভেম্বর ২০২৪ ২৩:৫৩ | আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২৪ ১২:০১
যশোর: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ২০২৪-এর যুদ্ধে নির্দিষ্ট কোনো দল, কোনো ধর্ম এবং কোনো লিঙ্গের মানুষেরা যুদ্ধ করেনি। কোলের শিশুরা শহিদ হয়েছে। বৃদ্ধরা শাহাদাত বরণ করেছে। তাদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আমরাও লড়াই করেছি। আমাদের এই জাতীয় ঐক্য ধরে রাখাতে হবে। কেউ যেন ফাঁকতালে ঢুকে এই ঐক্য নষ্ট না করতে পারে। এজন্য আপমর ছাত্র-জনতাকে এবং সমস্ত বাংলাদেশের মানুষকে সজাগ থাকতে হবে।
শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) যশোরে পৃথক ৩টি পথসভা করেন জামায়াতের আমির। সন্ধ্যা ৭ টার দিকে যশোরের চাঁচড়া মোড়ে প্রথম পথসভা হয়। সর্বশেষ সভাটি হয় শার্শায়।
সভায় তিনি বিশেষভাবে স্মরণ করছি ২৪-এর আন্দেলনে অংশ নেওয়া সাধারণ মানুষদের। তিনি বলেন, ‘এই সংগ্রামে এবং আন্দোলনে গণঅভ্যূত্থান এবং বিপ্লবে আপনারাও লড়াই করেছেন। আমরা তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। আমাদের সন্তানেরা একটি বৈষম্যহীন সমাজের জন্য গুলির সামনে বুক পেতে দিয়েছিল। আমরাও সেই বৈষম্যহীন দেশ গড়ে তুলতে চাই। আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়তে চাই, যেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে জাতপাত, দল ও ধর্মের ব্যবধান থাকবে না। সমস্ত মানুষ তার সকল বৈধ অধিকার ভোগ করবে।’
ডা. শফিকুর রহমান আরও বলেন, ‘যারা আমাদের ওপর ফ্যাসীবাদের ডালপালা বিস্তার করেছিলেন, এক নাগাড়ে ১৫ বছর যারা তাণ্ডব চালিয়ে ছিলেন। যারা খুন গুম চালিয়েছিলেন, দেশের সম্পদ লুণ্ঠন করে বিদেশে পাচার করেছেন। আমরা তাদের ক্ষমা করব না। তাদের প্রত্যেকের বিচার করা হবে।’
জামায়াতের আমীর বলেন, ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী একটি মজলুম দল। এই দলের শীর্ষ নেতাকে বিচারের নামে হত্যা করা হয়েছে। কোরআনোর পাখি মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী রাহিমাহুল্লাকে হত্যা করা হয়েছে। জননেতা গোলাম আজম রাহিমাহুল্লাহে হত্যা করা হয়েছে। হত্যা করা হয়েছে মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীকে। হত্যা করা হয়েছে আপনাদের কৃতি সন্তান জামায়াতের সেক্রেটারী জেনারেল আলী আহসান মুজাহিদকে। হত্যা করা হয়েছে আবদুল কাদের মোল্লাকে, হত্যা করা হয়েছে আমার ভাই কামারুজ্জামানকে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সর্বত্র কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল আমাদের। বৈধ অফিসে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। আমাদের দলকে শেষ পর্যন্ত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আল্লাহর ফয়সালা ভিন্ন ছিল। যারা এই বাংলার জমি থেকে ইসলামী সংগঠন জামায়াতে ইসলামী এবং ইসলামী ছাত্র শিবিরকে চিরতরে নির্মূল করতে চেয়েছিল। রাব্বুল আলামিন আজ তাদের নিষিদ্ধ করে দিয়েছে। এটা আমাদের কোন কৃতিত্ব নয়। সমস্ত কৃতিত্ব আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আমাদের কর্মীকে বলেছিলাম আপনারা উল্লাস করবেন না। কারো ওপর হাত তুলবেন না। তারা আমাদের কথা রেখেছিল। আমাদের সহকর্মীদের ওপর এতো নির্যাতন করা হয়েছে। আমাদের অন্তরে অনেক কষ্ট। তবু তার শান্ত ছিল।’
এরপর দ্বিতীয় পথসভা করেন যশোর বেনাপোল মহাসড়কের ঝিকরগাছা বাজার এলাকায়। সব শেষ তিনি পথসভায় বক্তব্য রাখেন শার্শা উপজেলার নাবারুণ মোড়ে।
এসব সভায় দলীয় ঊর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দ ও অসংখ্য কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/এইচআই