‘হাসিনার চেয়ে বেশি পাগল হয়ে গেছে ভারতীয় বিজেপি সরকার’
৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ২৩:১০ | আপডেট: ৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ২৩:১২
খুলনা: বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেছেন, জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যূত্থানে শেখ হাসিনা বিতাড়িত হওয়ায় পর এদেশের মানুষ আনন্দে আছে, স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারছে। কিন্তু দিল্লি তার ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। আমাদের ভালো কিছু দিল্লি কখনো ভালো চোখে দেখেনি। আগরতলায় আমাদের ডেপুটি হাইকমিশনে আক্রমণ, এমনকি পতাকা ছিঁড়েছে তারা।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) নগরীর দৌলতপুর থানা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ লাখও প্রাণের বিনিময়ে স্বাধীন হয়েছে, দিল্লির দাসত্ব করতে নয়। ক্ষমতা হারিয়ে বিতাড়িত হওয়ায় হাসিনার চেয়ে বেশি পাগল হয়ে গেছে ভারতীয় বিজেপি সরকার ও উগ্রবাদীরা। হাসিনাকে পুতুল সরকার বানিয়ে মোদি সরকার এদেশের সবকিছু চুষে নিয়েছে। মোদি সরকার বিভিন্ন ধরনের কূটকৌশল চালাচ্ছে। একজন গণহত্যাকারীকে আশ্রয় দিয়ে ভারত সরকার বাংলাদেশের জনগণের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আমাদের আহ্বান এই উগ্রবাদীদের নিয়ন্ত্রণ করুন।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভারতের সাধারণ জনগণের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জনগণের কোনো শত্রুতা নেই। কিন্তু চরম উগ্রবাদী বিজেপি যদি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতে চায় তাহলে বাংলাদেশের দেশপ্রেমিক প্রতিটা মানুষ এদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, সম্মান ও আত্মমর্যাদা রক্ষায় রুখে দাঁড়াবে। দুর্জয় এ বাংলাদেশ কখনোই মাথা নোয়াবে না। কলকাতা উপ-হাইকমিশন, আগরতলা সহকারী হাইকমিশনে হামলা, মুম্বাইয়ে বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনের সামনে হাঙ্গামা এবং ধারাবাহিক চরম উস্কানিমূলক বক্তব্য ও সীমাহীন অপপ্রচারে বিরুদ্ধে উত্তাল হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের হিংস্র আগ্রাসী হস্তক্ষেপের ঘটনা ও ভারতের বাংলাদেশবিরোধী অপতৎপরতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দু ছেলেরাও মিছিল নিয়ে বেরিয়ে এসেছে।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল বলেছেন, ‘৫ আগস্টে হাসিনা সরকার পালিয়ে যাওয়ার পর এদেশকে অস্থির করার জন্য বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্র হচ্ছে। সকল ষড়যন্ত্রের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে পারে একটি গণতান্ত্রিক সরকার।’
তিনি বলেন, ‘যত দ্রুত সময়ের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন হবে তত দ্রুত দেশ শান্ত হবে। হাসিনা পালিয়ে গেলেও তার লেজ রয়েছে এদেশে। লেজরূপী দোসররা বিভিন্ন ভাবে ষড়যন্ত্র করছে। বর্তমান সরকার সংস্কারের যে কথা বলছেন বিএনপি দুই বছর আগে সেই সংস্কার প্রস্তার দিয়েছে।’ অহেতুক কালক্ষেপন না করে দ্রুত সময়ের মধ্যে তিনি জাতীয় নির্বাচনের দাবি জানান।
থানা বিএনপির আহ্বায়ক মুর্শিদ কামালের সভাপতিত্বে এবং শেষ ইমাম হোসেন এর পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক বাবু জয়ন্ত কুমার কুন্ড, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাড. শফিকুল আলম মনা, সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন, রেহানা ঈসাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্বে ৪২৬ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ৪২৩জন কাউন্সিলরের ভোটে সভাপতি পদে মুর্শিদ কামাল ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে মতলুবুর রহমান মিতুল সাংগঠনিক সম্পাদক পদে নির্বাচিত ঘোষণা করেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক রেহানা ঈসা। এর আগে অন্য কোনো প্রতিদ্বন্দ্বি না থাকায় বিনাভোটে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয় শেখ ইমাম হোসেন।
সারাবাংলা/এইচআই