কাছে গিয়েও ইতিহাস গড়া হলো না মেয়েদের
৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৭:৫২ | আপডেট: ৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ২০:২২
১৭০ রানের লক্ষ্য ছুঁতে নেমে ওপেনিং জুটিতেই বাংলাদশ তুলল নিজেদের ইতিহাস সর্বোচ্চ ১০৩ রান। তাও ১২ ওভারে। কিন্তু আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে উড়ন্ত এই শুরুর পরেও ম্যাচ জিততে পারেননি নিগার সুলতানা জ্যোতিরা। শেষদিকে দুই উইকেটসহ মেইডেন ওভারে বাংলাদেশকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দিলেন ওরলা প্রেন্ডারগাস্ট। সিলেটে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে সাত উইকেটে ১৫৭ রান তুলে ১২ রানের ব্যবধানে হেরে সিরিজ শুরু করল বাংলাদেশ।
এই ম্যাচ জিততে রান তাড়ার রেকর্ডই গড়তে হতো বাংলাদেশকে। টি-টোয়েন্টিতে এর আগে সর্বোচ্চ ১৪৬ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু সেই ইতিহাস আর বদলানো হলো না।
ফিনিশিংয়ের অভাবে তীরে গিয়ে তরী ডোবার ম্যাচে দুই ওপেনার দিলারা আক্তার-সোবহানা মোস্তারির মারকুটে ব্যাটিংয়ে দুর্দান্ত শুরু পায় বাংলাদেশ। ইনিংসের প্রথম ওভারে থেকেই শুরু করে শটস খেলা। ছয় ওভারেই দলীয় সংগ্রহ পেরোয় পঞ্চাশ। ফ্রেয়া সার্জেন্টের করা নবম ওভারে দুই ওপেনার মিলে তোলেন ২১ রান। দলীয় শতরান আসে দশম ওভারে।
টি-টোয়েন্টিতে ওপেনিংয়ে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জুটির নেপথ্যে অবদান আছে আইরিশ ফিল্ডারদের গ্রাউন্ড ফিল্ডিংয়েরও। ব্যাট হাতে আয়ারল্যান্ড আজ যতটা সপ্রতিভ ছিল, ফিল্ডিংয়ে ছিল উল্টো রুপ। গুনে গুনে দিলারার চারটা ক্যাচ ফেলেছেন তারা। চারবার জীবন পেয়েও অবশ্য ফিফটি ছুঁতে পারেননি তিনি। বার দুয়েক স্টাম্পিংয়ের হাত থেকে বেঁচে যাওয়ার পরেও আর্লেন কেলির বলে ব্যক্তিগত ৪৯ রানে ক্যাচ দেন গ্যাবি লুইসের হাতে।
বেশ কয়েকবার জীবন পাওয়া সোবহানাও ফিফটির দেখা পাননি। ৩৫ বলে ৪৬ রানের ইনিংস খেলে ক্যাচ দেন অ্যামি হান্টারের হাতে। দুই ওপেনারের গড়ে দিয়ে যাওয়া জয়ের ভিতকে কাজে লাগাতে পারেননি বাকি ব্যাটাররা। ব্যর্থ অধিনায়ক জ্যোতি। ১৪ বলে ১৯ রানে ইনিংসে দলকে জয়ের কক্ষপথে রেখেছিলেন তাজ নেহার। কিন্তু ম্যাগুয়ারের বলে স্টাম্পিং হন তিনি।
আগের ওভারে শেষ বলে চার মেরে ব্যবধান ১৮-তে নামিয়ে আনেন ওয়ানডে সিরিজে দুর্দান্ত ব্যাট করা শারমিন সুপ্তা। তিনি নন স্ট্রাইকে যেতেই যেন বদলে গেল সব। শেষ দুই ওভারে রান আসা দূর, ব্যাটে বলেই করতে পারছিলেন না ব্যাটাররা। প্রথম বলেই ব্লাইন্ড হিট করতে গিয়ে বোল্ড হন স্বর্ণা আক্তার। ওরলার করা সেই ওভারে আউট হয়েছেন রিতু মনিও। কোনো রানই আসেনি সেই ওভারে। শেষ ওভারের প্রথম বলে সিংগেল নিয়ে স্ট্রাইক বদল করেন সুপ্তা। দ্বিতীয় বলে আউট হন জান্নাতুল সুমনা। শেষ চার বলে মাত্র চার রান আসে ফাহিমার ব্যাট থেকে। জয় থেকে ১২ রান দূরে থাকে বাংলাদেশ।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে চার উইকেট হারিয়ে ১৬৯ রান করে আয়ারল্যান্ড। লিয়াহ পল ৭৯* ও অধিনায়ক গ্যাবি লুইস খেলেন ৬০ রানের দারুণ দুটো ইনিংস।
তৃতীয় ওভারেই ওপেনার অ্যামি হান্টারকে হারায় আয়ারল্যান্ড। জাহানারা আলমের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন এই ডানহাতি ব্যাটার। ওরলা প্রেন্ডারগাস্টও সুবিধা করতে পারেননি। ছয় বছর পর আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ফেরা জান্নাতুল ফেরদৌস সুমনার বলে বোল্ড হন তিনিও।
এরপরই অবশ্য বাংলাদেশি বোলারদের ওপর চেপে বসেন দুই আইরিশ ব্যাটার গ্যাবি লুইস ও লিয়াহ পল। বাংলাদেশের বাজে ফিল্ডিং আর ক্যাচ মহড়া কাজে লাগিয়ে রান তোলেন দ্রুতগতিতে। তৃতীয় উইকেটে দুজন গড়েন আয়ারল্যান্ডের রেকর্ড সর্বোচ্চ ১০৭ রানের জুটি। ৪২ বল ৬০ রান করে লুইস ফিরলেও শেষ বল পর্যন্ত উইকেটে ছিলেন পল। ১০ চার ও দুই ছক্কায় ৪৫ বলে ৭৯ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন এই ডানহাতি ব্যাটার।
সারাবাংলা/জেটি