Saturday 07 Dec 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

৭ ডিসেম্বর ১৯৭১— যৌথ বাহিনীর আক্রমণে দিশেহারা হানাদার বাহিনী

আসাদ জামান
৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৮:১০ | আপডেট: ৬ ডিসেম্বর ২০২৪ ২২:৫৬

১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর। যৌথ বাহিনীর আক্রমণে হানাদার বাহিনী দিশেহারা। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বুঝে গেছে, তাদের পরাজয় সময়ের ব্যাপার মাত্র।

এ দিন রাত ১০টায় আকাশবাণী থেকে হিন্দি, উর্দু ও পশতু ভাষায় ভারতের সেনাধ্যক্ষ জেনারেল মানেকশ বাংলাদেশে দখলদার বাহিনীকে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানান।

জেনারেল মানেকশ বলেন, ‘তোমাদের বাঁচার কোনো পথ নেই। বাংলাদেশকে মুক্ত করার জন্য যৌথ বাহিনী তোমাদের ঘিরে রেখেছে। তোমরা যে নিষ্ঠুর আচরণ করেছ, তার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে মুক্তিবাহিনী। অনেক দেরি হওয়ার আগেই তোমরা আত্মসমর্পণ করো।’

রণাঙ্গণে থাকা মুক্তিযোদ্ধাদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্র থেকে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম রচিত দেশাত্মবোধক ও যুদ্ধের গান বাজতে থাকে।

এদিকে যুদ্ধ পরিস্থিতির বিবরণ দিয়ে জেনারেল নিয়াজি গোপন বার্তা পাঠান রাওয়ালপিন্ডি সদর দফতরে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, সৈন্যরা দিনাজপুর, রংপুর, সিলেট, মৌলভীবাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, লাকসাম, চাঁদপুর ও যশোরে প্রবল চাপের মুখে রয়েছে। গত ১৭ দিনে যেসব খণ্ডযুদ্ধ হয়েছে, তাতে জনবল ও সম্পদের বিচারে আমাদের ক্ষয়ক্ষতি অনেক বেশি। অস্ত্রসহ সটকে পড়া রাজাকারদের সংখ্যা বাড়ছে। নিজেদের ট্যাংক, ভারি কামান ও বিমান না থাকায় পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি ঘটেছে।

এ বার্তা পেয়ে পাকিস্তানি সেনা সদর দফতর থেকে সম্মুখ সমরের সৈন্যদের পিছিয়ে এনে প্রতিরোধ ঘাঁটিতে সমবেত করার পরিকল্পনা অনুমোদন করা হয়।

কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট যৌথ বাহিনী চারদিক দিয়ে অবরুদ্ধ করে রাখে। পালাবার কোনো পথ নেই। হানাদার বাহিনীকে হয় আত্মসমর্পণ করতে হবে, না হয় মৃত্যু। ব্রাহ্মণবাড়িয়া পাকিস্তানিদের শক্ত ঘাঁটি। এখানে ৯ মাসই প্রচণ্ড যুদ্ধ হয়েছে। সেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া যৌথ বাহিনী অবরুদ্ধ করে রাখে।

বিজ্ঞাপন

পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙামাটি যৌথ বাহিনী কর্তৃক অবরুদ্ধ হয়ে আছে। যেকোনো সময় পতন। সিলেট মুক্ত। সেখানে বিমানবন্দরে মিত্র বাহিনীর হেলিকপ্টার বিনা বাধায় অবতরণ করেছে। লালমনিরহাটছে মুক্ত।

বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত লাল-সবুজ পতাকাবাহী জঙ্গি বিমান দেখে হানাদার পাকিস্তানিরা হতবাক ও স্তম্ভিত হয়ে পড়ে। পক্ষান্তরে মুক্তিবাহিনী ও সাধারণ জনতা বাংলাদেশের পতাকাবাহী জঙ্গি বিমান দেখে আনন্দে আত্মহারা হয়ে জয়বাংলা স্লোগান দিয়ে উল্লাসে ফেটে পড়ে।

এদিকে জাতিসংঘের কর্মীদের নিয়ে যাওয়ার জন্য আসা কয়েকটি বিমান ঢাকা বিমানবন্দরে অবতরণ করতে না পেরে হংকং ফিরে যায়।

সারাবাংলা/এজেড/টিআর

একাত্তর বিজয় দিবস বিজয়ের দিনলিপি মুক্তিযুদ্ধ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর