দুদক ও বিচার বিভাগ মিলে খালেদা জিয়াকে ১০ বছরের জেল দিয়েছে : আইন উপদেষ্টা
৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৯:০০ | আপডেট: ৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ২২:৩১
ঢাকা : আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, দুদক ও বিচার বিভাগ শেখ হাসিনার দাসে পরিণত হয়েছিল। খালেদা জিয়া ৩ কোটি টাকা এক জায়গায় রেখেছিলেন। একটা টাকাও সেখান থেকে তিনি আত্মসাৎ করেনি। বরং ৩ কোটি টাকা ৬ কোটি টাকা হয়েছে। ওই টাকা কেউ স্পর্শও করেনি। শুধু টাকা রাখার প্রক্রিয়াগত ভুলের কারণে তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে ১০ বছরের জেল দিয়েছে দেশের দুদক ও বিচার বিভাগ। আর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা দেশে বলে বেড়াতেন যে, এতিমের টাকা নাকি খালেদা জিয়া আত্মসাৎ করেছেন!
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর কাকরাইলে আইডিইবি মিলনায়তনে ‘আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস-২০২৪’ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমিন এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ও দুদক সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান।
তিনি বলেন, বিভিন্ন সময়ে দুদক সংস্কার হয়েছে, বারবার সংস্কারের মাধ্যমে এটিকে ক্ষমতায়িত করা হয়েছে। কিন্তু গত ১৫ বছরে শুধু দুর্নীতিই দেখা গেছে। দুদক তো ছিল, উচ্চ আদালতও ছিল, তাহলে দুর্নীতির বিচার কেন হয়নি? কারণ, কেউ তার (শেখ হাসিনা) সামনে কিছু বলতে পারেনি। এ কারণে দুদক ও বিচার বিভাগ তার দাসে পরিণত হয়েছিল।
আসিফ নজরুল বলেন, গত ১৫ বছরে আমরা দেখেছি, ১০০ টাকার বালিশ নাকি ৪/৫ হাজার টাকায় কেনা হয়েছে। আমরা দেখেছি, ৬টা ব্যাংক লুট হয়েছে। বাংলাদেশের একজন সাধারণ ব্যবসায়ী সিঙ্গাপুরের সবচেয়ে বড় লোক হয়ে গেছে। আমরা দেখেছি, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পিয়ন ৪০০ কোটি টাকার মালিক হয়েছে, এটা হাসতে হাসতে তিনি জাতির সামনে বলছেন।
দুদক কর্মকর্তাদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, এখন তো সময় পরিবর্তিত হয়েছে, কেউ কোনো রকম হস্তক্ষেপ করছে না। প্রায় শতাধিক মন্ত্রী, ব্যবসায়ী গত আমলে চুরি করে হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছে। আপনারা এখন সেগুলোর তদন্ত করে দেখিয়ে দিন যে, ভালো পরিবেশ পেলে আপনারা কাজ করতে পারেন। দেখিয়ে দিন যে, তাদের দুর্নীতি আপনাদের হৃদয় ও বিবেককে দূষিত করতে পারেনি। আর এটাই আপনাদের কাছে এখন সারা দেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষা। কেবল রাজনীতিবিদদের দোষ দিয়ে আমরা যেন নিজের অন্যায় থেকে নিজেকে পার পাওয়ার চেষ্টা না করি।
তিনি আরও বলেন, বিচার বিভাগীয় সংস্কার কমিশন কোনো প্রতিবেদন জমা দেয়নি। আমি তাদের বলেছিলাম, উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগের জন্য আমরা একটা আইন করব, আপনারা আইনটির খসড়া করে দিতে পারবেন কি না। এর পরিপ্রেক্ষিতে তারা কমিশনের রিপোর্ট ছাড়াই আমাদের আইনটির খসড়া তৈরি করে দিয়েছেন।
দুদক কমিশন নিয়োগ প্রসঙ্গে আইন উপদেষ্টা বলেন, দুদকের ব্যাপারটা আমি দেখছি না। যারা দেখছেন বা যিনি দেখছেন, তারা এ বিষয়ে সচেতন আছেন। দুদককে অচল রাখা যাবে না। এত বড় বড় দুর্নীতি হয়েছে, দুদককে অবশ্যই সচল করতে হবে।
বিচার না হওয়ায় দুর্নীতি সমাজে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দুদকের সাবেক কমিশনাররা পদত্যাগের আগে শতাধিক (প্রায় দুশর মতো) বড় বড় মন্ত্রী, এমপির বিরুদ্ধে অনুসন্ধান বা তদন্তের অনুমোদন দিয়ে গেছেন। এসব বিষয়ে দুদক কী কাজ করছে, সাংবাদিকদের সে বিষয়ে অনুসন্ধান অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান তিনি।
সারাবাংলা/জিএস/আরএস