Thursday 12 Dec 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘দিল্লির সংকেত ছাড়া দেশে ব্যাংকের এমডিও নিয়োগ হয়নি’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১০ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৭:১৬ | আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৯:১০

ঢাকা: এতদিন (শেখ হাসিনার আমলে) দিল্লির সংকেত ছাড়া দেশে একটা ব্যাংকের এমডিও নিয়োগ হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা জানানো শেষে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

দীর্ঘকাল পর দেশে ফেরা বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মহিউদ্দিন আহম্মেদ জিন্টুকে সঙ্গে নিয়ে জিয়ার কবরে শ্রদ্ধা জানাতে যান তিনি। বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদ প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘‘ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব প্রায়ই আসেন। এখন নতুন প্রেক্ষাপটে তিনি আসছেন। তিনি যা বলছেন, ‘তা নতুন করে’… তাহলে বোঝা গেল পুরাতন সম্পর্কের মধ্যে কোনো না কোনো ফাঁক-ফোকর ছিল। যে কারণে সম্পর্কটা নতুন করে নতুন আঙ্গিকে, বিশেষ করে বাংলাদেশের জনগণের যে চেতনাবোধ, আকাঙ্ক্ষাবোধ, বাংলাদেশের মানুষের যে চাওয়া-পাওয়া, তা ভারত উপলদ্ধি করতে সচেষ্ট হবে।’’

তিনি বলেন, ‘‘ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্কটা দেশে-দেশে হতে হবে, কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনের সঙ্গে না। যে ব্যক্তি বা দলের সঙ্গে দীর্ঘ ১৭ বছর ভারত সম্পর্ক রেখেছে, তারা নানাভাবে চেষ্টা করেছে বাংলাদেশের ভোটাধিকার বিনষ্ট করা, মানুষকে প্রতারিত করা এবং লুটপাটের মধ্য দিয়ে দুর্নীতির একটা অভয়ারণ্য সৃষ্টি করা। সুতরা আজকে যদি ভারত এই কথাগুলো উপলদ্ধি করতে পারে, তাহলে তারা নিশ্চই সঠিক পথেই বাংলাদেশের সাথে বন্ধুত্বটা বজায় রাখবে।’’

বিজ্ঞাপন

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘‘আমরা সকল দেশের সাথে বন্ধুত্ব চাই। পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে আমাদের জিয়াউর রহমানের ভাষা, আমাদের খালেদা জিয়ার ভাষা, আমাদের তারেক রহমানের ভাষা এক ও অভিন্ন। আমরা বন্ধুত্ব চাই, আমরা কারও প্রভুত্ব চাই না। বিশেষ করে ভারত প্রতিবেশি দেশ, তার সঙ্গেও সমমর্যাদার ভিত্তিতে, পারস্পরিক স্বার্থকে সমুন্নত রেখে যদি আমাদের বন্ধুত্ব থাকে, তাহলে সেই বন্ধুত্ব উভয় দেশর জন্য কল্যাণকর এবং ভবিষ্যৎ ইতিবাচক দিকে যাবে।’’

তিনি বলেন, ‘‘মুরব্বিয়ানা এবং আমাদের ওপর খবরদারি… এতদিন দেখা গেছে যে, দিল্লির সংকেত ছাড়া একটা ব্যাংকের এমডিও নিয়োগ হয় নাই। কে বিচারপতি হবে, কে কোথায় বড় বড় পদে থাকবে, কে এমপি হবে, কে মন্ত্রী হবে— এগুলো তারা (ভারত) ডিসাইড করতেন। আমরা মনে করি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে পরিচালনা করার যে প্রবণতা, এটা ভারতকে পরিহার করতে হবে। বাংলাদেশের জনগণ ঠিক করবে, কাকে কোথায় বসাবে। বাংলাদেশ স্বাধীন দেশ, তারাই ডিসাইড করবে কোন জায়গায় কে ঢুকবে। সেখানে অন্যের পরামর্শ দরকার নাই। আমাদের যদি প্রয়োজন হয়, আমরা বিদেশি কনসালটেন্ট নিয়োগ করব। সুরাং আমরা বলব, আমাদের অভ্যন্তরীণ কোনো বিষয়ে কোনো দেশের হস্তক্ষেপ জনগণের কাছে কাম্য না।’’

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘‘আমরা প্রত্যেকেই গণতন্ত্রের প্রশ্নে আপসহীন লড়াই করছি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে। তার ওপর নির্যাতন বা তাকে কারাগারে নেওয়ার ঘটনা সবার কাছে দৃশ্যমান। তার অবর্তমানে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বিদেশে বসে দিবারাত্রি পরিশ্রম করে দেশকে, জাতিকে দলকে সংগঠিত করেছেন এবং ১৬ বছর আন্দোলন শেষে ৫ আগস্ট আমরা ফ্যাসিবাদের পতন ঘটাতে সক্ষম হয়েছি।’’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘‘ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনার পতন হলেও ফ্যাসিবাদের পতন হয় নাই। এটা অনুশীলনের বিষয় এবং গণতান্ত্রিক পদ্ধতির মধ্য দিয়ে মানুষ যখন চলবে, গণতন্ত্রের ভাষা বুঝতে চেষ্টা করবে এবং গণতান্ত্রিকভাবে সকল কিছু চলবে তখনই ক্রমান্বয়ে সমাজ জীবন থেকে স্বৈরাতন্ত্র মনোভাব বা ফ্যাসিবাদী মনোভাব দূর হবে। শুধু একটি ব্যক্তি মাইনাস হলেই সকল কিছু পাল্টায় যায় না।’’

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমাদের অনেক প্রচেষ্টার ব্যাপার আছে, অনুশীলনের ব্যাপার আছে, সাধনার ব্যাপার আছে, আমাদের সংযমেরও ব্যাপার আছে। যে ধরনের সংস্কারের কথা শোনা যায়, এ সমস্ত সংস্কারের মধ্য দিয়ে একটা সঠিক বাংলাদেশ, একটা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ, একটা ন্যায় বিচারের দেশ এবং সামাজিক জীবনে সকলের নিরাপত্তা, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের অধিকার সমানভাবে প্রতিষ্ঠিত না হলে গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করবে না। গণতন্ত্র চর্চার মধ্য দিয়ে প্রতিটি রাজনৈতিক দল সেই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে যদি সফল করতে পারে, তাহলে দেশি-বিদেশি চক্রান্ত মোকাবেলা করা সম্ভব হবে।’’

সারাবাংলা/এজেড/আরএস

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বিএনপি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর