আজ নন্দীগ্রাম হানাদারমুক্ত দিবস
১৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৮:৫৩ | আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ১২:২৮
বগুড়া: ১৩ ডিসেম্বর বগুড়ার নন্দীগ্রাম হানাদারমুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিযোদ্ধারা নন্দীগ্রামে পাকহানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে স্বাধীনতার বিজয় পতাকা উত্তোলন করেছিল।
ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মুক্তিযোদ্ধারা ভারতে সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত হিলি হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। পরে পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকারদের সঙ্গে যুদ্ধ করেন। এরপর তারা নন্দীগ্রাম আসার পথে কাহালুর কড়ই বামুজা গ্রামে পাকিস্তানি হানাদারদের সঙ্গে যুদ্ধ করেছে। যুদ্ধে ১৮ জন পাকসেনা নিহত হয়েছিল।
এরপর মুক্তিযুদ্ধকালীন কমান্ডার আবু বক্কর সিদ্দিকীর নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা ৯ ডিসেম্বর নন্দীগ্রামে প্রবেশ করে ৩ দফা যুদ্ধে অবতীর্ণ হন। প্রথমে ১১ ডিসেম্বর নন্দীগ্রামের মন্ডলপুকুর সিঅ্যান্ডবি সড়কের পাশে থেকে পাকিস্তানি সেনা ও তাদের দোসরদের ওপর আক্রমণ করে। ওই দিন রণবাঘা বড় ব্রিজের কাছে রাজাকারদের সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ হয়েছিল।
অন্যদিকে বেলঘরিয়ায় পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখযুদ্ধ সংঘটিত হয়। সেই যুদ্ধে একজন পাকিস্তানি সেনা আত্মসমর্পণ করে।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানি সেনারা রাজাকারদের সহযোগিতায় চাকলমা গ্রামের আকরাম হোসেন, বাদলাশন গ্রামের আব্দুল ওয়াহেদ, রুস্তমপুর গ্রামের মহিউদ্দিন (মরু মন্ডল), ভাটরা গ্রামের আব্দুস সোবহান, হাটকড়ই গ্রামের ছমির উদ্দিন ও তার দুই পুত্র আব্দুর রাজ্জাক ও আব্দুর রশিদকে নির্মমভাবে হত্যা করে।
সবচেয়ে বড় গণহত্যার ঘটনা ঘটে বামনগ্রামে। সেখানে ৯ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করে গণকরব দেয় পাকিস্তানি হানাদাররা। এ ছাড়াও আরও অনেক হত্যা, ধর্ষণ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটায়।
১২ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা নন্দীগ্রাম থানা আক্রমণ চালিয়ে প্রায় ২০০ পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকারদের সঙ্গে লড়াই করে। সেই যুদ্ধে ৮০ জন রাজাকার আটকসহ বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছিল।
নন্দীগ্রামে সবচেয়ে স্মরণীয় ঘটনা ঘটে ডাকনীতলায়। সেখানে পাকিস্তানি সেনা রাজাকারদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের জীবন মরণ যুদ্ধের ঘটনা ঘটে। একাত্তরের এর ১৩ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা হানাদার বানিহী ও রাজাকারদের হটিয়ে নন্দীগ্রামকে হানাদারমুক্ত করে মহান স্বাধীনতার বিজয় পতাকা উত্তোলন করতে সক্ষম হন।
প্রতি বছর ১৩ ডিসেম্বর নন্দীগ্রাম হানাদারমুক্ত দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ উপজেলা ইউনিট কমান্ড বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে।
সারাবাংলা/এইচআই