ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশি ডেপুটি হাই-কমিশনার নুরাল ইসলামকে তলব করেছে। সোমবার (১৩ জানুয়ারি) ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভিতে এ তথ্য প্রচারিত হয়।
৪ হাজার ১৫৬ কিলোমিটার দীর্ঘ ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের পাঁচটি নির্দিষ্ট স্থানে বিএসএফ (বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স) বেড়া নির্মাণের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ ওঠার পর রোববার (১২ জানুয়ারি) ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে তলব করা হয়। এই কার্যক্রমকে সীমান্ত কার্যক্রম সম্পর্কিত দ্বিপাক্ষিক চুক্তির লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রণয় ভার্মা রোববার (১২ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় বিকেল ৩টায় ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পৌঁছান। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব জসিম উদ্দিনের সঙ্গে তিনি প্রায় ৪৫ মিনিট বৈঠকে ছিলেন বলে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বিএসএস) জানিয়েছে।
বৈঠকে ভার্মা বলেন, ‘সীমান্ত নিরাপত্তার জন্য বেড়া নির্মাণে ঢাকা এবং দিল্লির মধ্যে সমঝোতা রয়েছে। আমাদের দুই সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ (বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স) এবং বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) এই বিষয়ে যোগাযোগে রয়েছে। আমরা আশা করি, এই সমঝোতা বাস্তবায়িত হবে এবং সীমান্ত অপরাধ মোকাবিলায় সহযোগিতামূলক দৃষ্টিভঙ্গি থাকবে।’
ঐতিহাসিকভাবে ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থিতিশীল থাকলেও, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতি এবং তার পরবর্তী সময়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার ঘটনা এই সম্পর্ককে উত্তেজনাপূর্ণ করেছে।
গত মাসে (ডিসেম্বর, ২০২৪) অন্তর্বর্তীকালীন বাংলাদেশ সরকার মুহাম্মদ ইউনুস ভারতকে বার্তা পাঠিয়েছিলো শেখ হাসিনাকে বিচারের মুখোমুখি করতে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর জন্য।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই বার্তা পেয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে। মন্ত্রনালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে একটি মৌখিক বিজ্ঞপ্তি পেয়েছি। তবে, এ বিষয়ে এই মুহূর্তে আমাদের কোনো মন্তব্য নেই।’
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যা, হত্যাকাণ্ড এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে বাংলাদেশ। ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে আদালতে হাজির হওয়ার কথা ছিল তার।
গত নভেম্বরে বাংলাদেশ ঘোষণা করেছিল, পালিয়ে থাকা নেতাদের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের ‘রেড নোটিস’ জারির অনুরোধ করা হবে। তবে, ভারত ইন্টারপোলের সদস্য হলেও এই নোটিস উপেক্ষা করেছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রেড নোটিস মানেই শেখ হাসিনাকে হস্তান্তর করতে বাধ্য থাকতে হবে সেটা না। প্রতিটি দেশ তাদের নিজস্ব আইন অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।