Wednesday 15 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ইবিতে পরীক্ষা দিতে এসে ছাত্রলীগ নেতা মারধরের শিকার, থানায় সোপর্দ

ইবি করেসপন্ডেন্ট
১৩ জানুয়ারি ২০২৫ ১৮:৪০ | আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২৫ ১৮:৪২

নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখার সহ-সভাপতি মামুন অর রশিদ

ইবি: নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখার এক সহ-সভাপতি শিক্ষার্থীদের হাতে মারধরের শিকার হয়েছেন। পরে তাকে উদ্ধার করে থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।

ওই শিক্ষার্থীর নাম মামুন অর রশিদ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের স্নাতক ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ ভবনের ৩১৫ নম্বর কক্ষে মানোন্নয়ন পরীক্ষা শেষে বের হলে এ ঘটনা ঘটে। পরে বিভাগের শিক্ষক, প্রক্টরিয়াল বডি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা তাকে উদ্ধার করে ক্যাম্পাসস্থ থানায় সোপর্দ করেন।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, মামুন প্রকাশ্যে জুলাইয়ের আন্দোলনের বিরোধীতা ও শিক্ষার্থীদের হুমকি দিয়েছিলেন। এ ছাড়া আন্দোলন পরবর্তী সময়েও বিভিন্ন অপপ্রচার এবং আবার শক্তিশালী হয়ে ফিরে এসে আন্দোলনকারীদের থেকে প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দিয়ে আসছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

জানা গেছে, সকাল সাড়ে ৯টায় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের মানোন্নয়ন পরীক্ষা শুরু হয়। ছাত্রলীগ নেতা মামুনুর রশীদ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। পরে তার ক্যাম্পাসে আসার খোঁজ পেয়ে শিক্ষার্থীরা ভবনের তৃতীয় তলায় পরীক্ষার হলের সামনে জড়ো হয়ে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ বিরোধী শ্লোগান দিতে থাকেন।

প্রক্টরিয়াল বডি ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়করা তাকে পরীক্ষার হল থেকে বের করে থানায় নিয়ে যাওয়ার সময় শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন। এ সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা তাকে অতর্কিতভাবে কিল-ঘুষি ও চড়থাপ্পড় দেন। পরে তাকে প্রক্টরিয়াল বডি ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়কদের সহায়তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়িতে করে নিয়ে থানায় সোপর্দ করা হয়।

বিজ্ঞাপন

বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. গোলাম মহিউদ্দীন বলেন, ‘সবাই আমার ছাত্র। দল-মত দেখা আমার বিষয় নয়। কেউ যদি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার শর্ত পূরণ করে, সেখানে আমাদের কিছুই করার থাকে না। সে আমাদের কাছে আবেদন করেছিল। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দফতর এবং ভাইস চ্যান্সেলরও পরীক্ষার অনুমোদন দিয়েছিল। তখন তো আরও কিছু করার থাকে না। যেহেতু সে আমাদের ছাত্র, তার যেন নিরাপত্তা বিঘ্নিত না হয় সেটা আমরা দেখবো।

প্রক্টরের দায়িত্বে থাকা সহকারী অধ্যাপক ড. ফকরুল ইসলাম বলেন, ‘ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এই শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে এসেছে বলে মনে করি। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ থাকায় তাকে পরীক্ষা দিতে আসতে নিষেধ করা হয়েছিল। এরপরও সে এসেছে। আসার পেছনে কারোর ইন্ধন রয়েছে কিনা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিষয়টি খতিয়ে দেখব। তাকে পুলিশি হেফাজতে দেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইবি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মেহেদী হোসেন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে পুলিশের হেফাজতে দিয়েছেন। আমরা জানতে পেরেছি সে নিষিদ্ধ ছাত্রসংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিল। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উল্লেখ্য, কুষ্টিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় আহত আরমান মীর সাবেক সংসদ সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফকে প্রধান আসামি করে ১৮ জনের বিরুদ্ধে সদর মডেল থানায় গত ৩০ অক্টোবর মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় মামুন অর রশিদ ১৮ নম্বর আসামি। গত ৩১ ডিসেম্বর ওই মামলায় হাজিরা দিতে গেলে আদালত তার জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করে। পরবর্তীতে ৭ জানুয়ারি সে জামিন পায়।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এইচআই

ইবি নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ মামুন অর রশিদ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর