ঢাকা: রাজধানীতে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় দু’জন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে আকিকুল ইসলাম মণ্ডল (৩৫) নামে এক ভ্যানচালক কুড়িল ফ্লাইওভার উপর থেকে বাসের ধাক্কায় ছিটকে নিচে পড়ে গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন। আর ধোলাইপার ডেন্টাল হসপিটালের সামনে ট্রাকের ধাক্কায় আরাফাত তাজিব চয়ন (১৭) নামে সিটি কলেজের এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুর আড়াইটার দিকে কুড়িল ফ্লাইওভারের উপরে ও সোমবার দিবাগত রাত ২টার দিকে ধোলাইপাড়ে এই পৃথক সড়ক দুর্ঘটনা দু’টি ঘটে।
ভ্যানচালক আকিকুলকে হাসপাতালে নিয়ে আসা পথচারী মো. ইব্রাহিম হোসেন রাকিব জানান, ওই ব্যক্তি ভ্যান চালিয়ে কুড়িল ফ্লাইওভার দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন একটি বাস ভ্যানটিতে ধাক্কা দিলে সেটি দুমড়েমুচড়ে যায়। এবং ভ্যানচালক ছিটকে ফ্লাইওভার থেকে নিচে পড়ে যায়। গুরুতর অবস্থায় তাকে প্রথমে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল নিয়ে আসা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যার দিকে তার মৃত্যু হয়।
মৃত ব্যক্তির ভাতিজি মোছা. রোকেয়া আক্তার জানান, তাদের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার ধোবাউরা উপজেলার টাংগাটী গ্রামে। তিন ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে বর্তমানে কুড়িল ঘাটপাড় মৃধাবাড়ি এলাকায় থাকতেন। উত্তরা এলাকার একটি পরিবার নিজেদের বাসা পরিবর্তন করে বসুন্ধরা এলাকায় আসবে। সেই বাসার আসবাবপত্র আনার জন্য উত্তরার দিকে যাচ্ছিলেন আকিকুল। রাস্তায় জ্যাম আর খানাখন্দ থাকায় হয়তো তিনি ফ্লাইওভারের ওপর দিয়ে রওনা দেন। এর কিছুক্ষণ পর তার দুর্ঘটনার খবর শুনতে পান তারা। পরে ঢাকা মেডিকেলে এসে মরদেহ দেখতে পান।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মো. ফারুক মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে।
এদিকে শ্যামপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাইন উদ্দিন তালুকদার জানান, ধোলাইপার ডেন্টাল হাসপাতালের সামনে সিমেন্ট বোঝাই একটি ট্রাকের সঙ্গে ধাক্কা লেগে মোটরসাইকেলসহ ছিটকে পড়ে আরাফাত (১৭) ও তার বন্ধু সায়েদ (১৮) গুরুতর আহত হন। তখন পথচারীরা তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যান। সেখানে আরাফাতকে সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
এসআই আরও জানান, ঘটনার পর ট্রাকটি জব্দ করা গেলেও চালক পালিয়ে গেছে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
মৃত আরাফাতের চাচা কামাল হোসেন জানান, তাদের বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার কুলিয়ারচর উপজেলায়। আরাফাত সিটি কলেজের উচ্চমাধ্যমিক প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিল। পরিবারের সঙ্গে কদমতলীর পূর্ব জুরাইন ঋষিপাড়ায় থাকতো। তার বাবার নাম হুমায়ুন কবির। সোমবার রাতে আরেক বন্ধুর মোটরসাইকেল নিয়ে ঘুরতে বের হয়েছিল আরাফাত ও সায়েদ। ধোলাইপাড় সালাউদ্দিন তেল পাম্প থেকে মোটরসাইকেলে তেল নিয়ে বের হওয়ার পর কিছুদূর গেলে ওভারট্রেক করার সময় ধাক্কা লেগে ছিটকে পড়ে মারা যায়।