বরাদ্দ বাতিল ও পুলিশি অনুমোদন ছাড়াই শুরু যুব কনভেনশন
১৭ জানুয়ারি ২০২৫ ১৩:১১ | আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২৫ ১৭:৩১
ঢাকা: মাঠের বরাদ্দ বাতিল এবং পুলিশি অনুমোদন ছাড়াই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শুরু হয়েছে ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশের যুব কনভেনশন।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুর ১২ টায় এ কনভেনশন শুরু হয়। সংগঠনটির সভাপতি মওলানা মুহাম্মদ নেছার উদ্দীন সারাবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘পুলিশের সঙ্গে আমাদের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ অব্যাহত আছে। আমরা আমাদের কনভেনশন শুরু করে দিয়েছি।’
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সহ-প্রচার ও দাওয়াহ বিষয়ক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম কবির সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রায় দেড় মাস আগে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। সব প্রস্তুতি শেষে কোনো জায়গা থেকে কোনো প্রতিবন্ধকতা তৈরি করলে, সেটার দায় তো আমরা নেব না। কোনো সমস্যা থাকলে অন্তত ১৫ দিন আগে আমাদের জানানো উচিত ছিল। কারণ, যেসব জাতীয় নেতা এখানে মেহমান হিসেবে আসবেন, তাদের সিডিউল কখনো ফাঁকা থাকে না।’
জানা গেছে, শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) সকাল ৯ টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট অংশে ‘যুব কনভেনশন’ করার জন্য গণপূর্ত অধিদফতরের অনুমতি পেয়েছিল ইসলামী যুব আন্দোলন। কিন্তু তাতে একুশে বইমেলার প্রস্তুতিতে ব্যাঘাত ঘটলে আপত্তি তোলে বাংলা একাডেমি। অন্যদিকে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার কারণে শুরু থেকেই এ সমাবেশের ব্যাপারে আপত্তি জানিয়ে আসছিল ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। ফলে সেখান থেকেও অনুমতি দেওয়া হয়নি।
এমন এক পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার গণপূর্ত অধিদফতরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ মনিরুল ইসলামের সই করা এক চিঠিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ব্যবহারের অনুমতিপত্রটি বাতিল করার তথ্য জানানো হয়।
বিষয়টি সম্পর্কে মনিরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সাপেক্ষে শুক্রবার উদ্যানের ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট অংশে ‘যুব কনভেনশন’ করার জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। এখন পুলিশ থেকে যেহেতু তাদেরকে অনুমতি দেওয়া হয়নি। এজন্য আমরা বরাদ্দপত্রের ১৩ নম্বর শর্তানুযায়ী সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ব্যবহারের অনুমতিপত্রটি বাতিল করেছি।’
ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মো. মাসুদ আলম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘শুক্রবার সকালে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার কারণে আমরা তাদের সম্মেলনটি পরে করতে বলেছিলাম। তারা পরে আমাদের সঙ্গে আর যোগাযোগ করেননি।’
কিন্তু পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার বিষয়টি মাথায় রেখে ৩ ঘণ্টা ছাড় দিয়ে শুক্রবার দুপুর ১২ টা থেকে সমাবেশের কার্যক্রম শুরু করে ইসলামী যুব আন্দোলন। এর আগে, সোমবার থেকেই সমাবেশ স্থানে মঞ্চ নির্মাণসহ প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি শুরু করে তারা। বৃহস্পতিবারই সেখানে চেয়ার নিয়ে রাখা হয়। ফলে অমর একুশে বইমেলার প্রস্তুতিতে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটে।
বিষয়টি গণপূর্ত অধিদপ্তরকে জানায় মেলা পরিচালনা কমিটি। কিন্তু, বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত এর কোনো সুরাহা না হওয়ায় সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে চিঠি লেখেন বইমেলা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম।
চিঠিতে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক লেখেন, ‘বাংলা একাডেমি অমর একুশে বইমেলা ২০২৫ আয়োজনের জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ১ জানুয়ারি থেকে ৩ মার্চ পর্যন্ত বরাদ্দ পেয়েছে। বইমেলার প্রস্তুতি, বিশেষত স্টল নির্মাণের কাজ আংশিক সম্পন্ন হয়েছে।”
এই চিঠির প্রেক্ষিতেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ব্যবহারের অনুমোদন বাতিল করে গণপূর্ত। অন্যদিকে পুলিশি অনুমোদন আগে থেকেই ছিল না। কিন্তু, সব প্রস্তুতি শেষে কনভেনশন না করে ফিরে যেতে রাজি ছিলেন না ইসলামী যুব-আন্দোলনের নেতারা। তারা পূর্বপ্রস্তুতি ও ঘোষণা অনুযায়ী শুক্রবার দুপুর ১২ টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ শুরু করে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সহ-প্রচার ও দাওয়াহ বিষয়ক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম কবির সারাবাংলাকে বলেন, ‘১৫-২০ দিন আগেই লঞ্চ-বাসসহ অন্যান্য যানবাহন ভাড়া করা হয়েছিল। আমাদের আর পেছন ফেরার সুযোগ ছিল না। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ শেষ করতে বদ্ধপরিকর। মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার বিষয়টি মাথায় রেখে আমাদের নেতা-কর্মীরা সকাল ১১টার আগে সমাবেশস্থলে প্রবেশ করেনি।’
সারাবাংলা/এজেড/এমপি