নারী ও শিশু নির্যাতন
‘ভুক্তভোগীদের সহায়তায় রেসপন্স টিমকে শক্তিশালী করা হবে’
২২ জানুয়ারি ২০২৫ ২২:১৮ | আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২৫ ২২:২১
ঢাকা : সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, সমাজ থেকে যেকোনো মূল্যে নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ করব। প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে জেন্ডার-ভিত্তিক সহিংসতার শিকার ভুক্তভোগীদের সহায়তায় কুইক রেসপন্স টিমকে আরও শক্তিশালী করে তোলা হবে।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিকার ও প্রতিরোধে কুইক রেসপন্স টিমের কার্যক্রমবিষয়ক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
শারমীন এস মুরশিদ বলেন, ‘কুইক রেসপন্স টিম গঠনের ফলে যেকোনো সহিংসতার ঘটনার পরপরই দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে ভুক্তভোগীদের উদ্ধার করা, দ্রুত সময়ে প্রয়োজনীয় কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার মাধ্যমে তাদের নিরাপত্তা দেওয়া এবং সহিংসতা কমানো সম্ভব হবে।’
তিনি বলেন, ‘এ ছাড়া যেকোনো প্রতিহিংসা বা ভবিষ্যৎ হুমকি থেকে ভুক্তভোগী, পরিবার এবং সংশ্লিষ্টদের রক্ষা করা, নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া। প্রয়োজনে প্রশিক্ষণসহ অর্থনৈতিকভাবে পুনর্বাসন কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এই টিমের কার্যক্রম শুধুমাত্র ভুক্তভোগীদের জীবন বাঁচাতে নয় বরং তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা ও পূনর্বাসনের ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশে নারী ও শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে কঠোর আইনের বিধান থাকলেও এ ধরনের অপরাধ প্রত্যাশিত মাত্রায় হ্রাস পাচ্ছে না। নারী ও শিশুর প্রতি পরিবার, কর্মক্ষেত্র, পাবলিক স্পেস, অনলাইনসহ নানাভাবে বিভিন্ন ধরনের সহিংসতা ও অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। প্রচলিত সামাজিক রীতিনীতি, প্রথা, বৈষম্যমূলক সামাজিক আচরণের কারণে সমাজে যুগ যুগ ধরে নারী ও শিশু নানা ধরনের নির্যাতন ও সহিংসতার শিকার। সময়ের সঙ্গে সহিংসতার ধরনের ক্ষেত্রও মাত্রা পরিবর্তিত হচ্ছে। প্রকৃত অর্থে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
তিনি বলেন, ‘মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অন্যতম লক্ষ্য হলো জেন্ডার সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা, নারী ও শিশুর সুরক্ষা এবং নারীর ক্ষমতায়নে কার্যক্রম পরিচালনা করা। বাংলাদেশ সরকার নারী ও শিশুর প্রতি সকল প্রকার সহিংসতা বন্ধে বদ্ধ পরিকর। এ লক্ষ্যে একটি টেকসই প্রতিষ্ঠানিক কাঠামো প্রণয়ন করে সে অনুযায়ী কর্মপদ্ধতি নির্ধারণ ও তা বাস্তবায়নে ‘কুইক রেসপন্স টিম’ গঠনপূর্বক নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতার বিষয়ে প্রত্যেকটি ঘটনায় পৃথকভাবে কার্যকর ও দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, ‘নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ ও প্রতিকারে এ মন্ত্রণালয় মাল্টিসেক্টরাল এপ্রোচে ১৪টি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করছে। বর্তমানে এ মন্ত্রণালয়ের আওতায় ১৪টি ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার, ৬৭টি ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেল, নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে টোল ফ্রি জাতীয় হেল্পলাইন সেন্টার (১০৯), ন্যাশনাল ট্রমা কাউন্সেলিং সেন্টার, ৮টি রিজিওনাল ট্রমা কাউন্সেলিং সেন্টার, ন্যাশনাল ফরেনসিক ডিএনএ প্রোফাইলিং ল্যাবরেটরি ৮টি বিভাগীয় ডিএনএ স্ক্রিনিং ল্যাবরেটরী, রিয়াল টাইম মনিটরিং ডাটাবেইজের মাধ্যমে দেশের নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ ও প্রতিকারে কাজ করছে।’
কর্মশালায় মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মমতাজ আহমেদ এনডিসি’র সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মহিলাবিষয়ক অধিদফতরের মহাপরিচালক কেয়া খান। কর্মশালায় কুইক রেসপন্স টিম এর কার্যপরিধির করণীয় বিষয় নিয়ে আলোকপাত করেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব ড. প্রকাশ কান্তি চৌধুরী।
সারাবাংলা/এফএন/এইচআই
উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়