বন্দরে সাড়ে ৩০ হাজার টন চাল, দাম কমার সম্ভাবনা
৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ২০:১৮ | আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ২০:২৫
ঢাকা: দেশে চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে বিভিন্ন দেশ থেকে চাল আমদানি করছে সরকার। এরইমধ্যে বিভিন্ন দেশ থেকে চাল আসতে শুরু করেছে। সেই ধারাবাহিকতায় এবার চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দরে এসে পৌঁছেছে সাড়ে ৩০ হাজার মেট্রিক টন চাল। এ ছাড়াও উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে আসছে আরও প্রায় ২০ হাজার টন চাল। এর আগেও কয়েক দফায় বন্দরে চাল এসেছে।
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) খাদ্য মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা ও সিনিয়র তথ্য অফিসার ইমদাদ ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন। আমদানির ফলে বাজারে চালের দাম কমার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন চাল ব্যবাসায়ীরা।
প্রসঙ্গত, দেশে চালের বাজার এখনও উর্ধ্বমূখী। মিনিকেট চাল সর্বোচ্চ ৮৫ টাকা কেজির ঘরে ওঠে রেকর্ড করে। চালের বাজার নিয়ে নাভিশ্বাস উঠে ক্রেতাদের। প্রায় সব ধরনের চালের দাম এবার অন্যান্য বছরের তুলনায় কেজিতে রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে। সে প্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তী সরকার চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়।
আরও পড়ুন:
ভারত-মিয়ানমার থেকে এল ৩৭ হাজার মেট্রিক টন চাল
তথ্য ঘেটে দেখা গেছে, এবার ইতিহাসের সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হচ্ছে মিনিকেট চাল। খুচরায় সর্বোচ্চ ৮৫ টাকা কেজিতে মিনিকেট বিক্রি হওয়ার রেকর্ড পাওয়া গেছে। সম্প্রতি সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বছর ব্যবধানে নাজির ও মিনিকেটের দাম বেড়েছে ১৪ শতাংশের বেশি। পাইজাম ও আটাশের দাম বেড়েছে ১৭ শতাংশ এবং মোটা চালের দাম বেড়েছে ৭ দশমিক ১৪ শতাংশ। টিসিবির হিসাবে এই তিন ধরনের চালের দাম বছর ব্যবধানে গড়ে বেড়েছে প্রায় ১৩ শতাংশ।
আরও পড়ুন:
সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হচ্ছে মিনিকেট, বছরে বেড়েছে ১৪ শতাংশ
সাড়ে ৩০ হাজার টন চাল বন্দর আসার তথ্য জানিয়ে শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) খাদ্য মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ‘জি টু জি ভিত্তিতে মায়ানমার থেকে ২৩ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাল নিয়ে এমভি পিটিভি অ্যারোমা ও উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ভারত থেকে আমদানি করা ৭ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন চাল নিয়ে এমভি আলফা জাহাজ দুটি চট্টগ্রাম এবং মোংলাবন্দরে পৌঁছেছে। জাহাজে রক্ষিত চাল দ্রুত খালাসের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’ ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ‘এছাড়াও উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ভারত থেকে আমদানি করা ৮হাজার ৫০০ এবং ১০ হাজার মেট্রিক টন চাল নিয়ে আরও দুটি জাহাজ আগামীকাল শনিবার এবং আগামী রোববার মোংলা বন্দরে পৌঁছাবে।’
আরও পড়ুন:
ভরা মৌসুমেও চালের বাজার ঊর্ধ্বমুখী, এক বছরে বেড়েছে ১৫%
এর আগে, গেল ২৯ জানুয়ারি ৩৭ হাজার টন চাল বন্দরে আসার তথ্য জানিয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা ইমদাদ ইসলামের পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিলো, ‘জি টু জি ভিত্তিতে মায়ানমার থেকে ২২ হাজার মেট্রিক টন আতপচাল নিয়ে এমভি এটিএন ভিক্টরি এবং উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ভারত থেকে আমদানিকৃত ১৫ হাজার মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল নিয়ে এমভি বিএমসি প্যানডোরা জাহাজ দুটি চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে। জাহাজে রক্ষিত চাল দ্রুত খালাসের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:
মিয়ানমারের চালের জাহাজ বন্দরের জেটিতে, খালাস শুরু রাতে
এদিকে একাধিক চালের আড়তদার জানিয়েছেন, এবার চালের দাম বেশি হওয়ার কারণ এখন ধানের দাম বেশি। প্রয়োজনীয় ধান পাচ্ছেন না মিলাররা। ফলে মিনিকেট চালের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এ কারণে সবচেয়ে বেশি প্রচলিত মিনিকেট চালের উর্ধ্বমূখী প্রবণতা দেখা যায়। মিলাররা বলছেন, ‘আমদানি করে চাল আনা হলে বাজারে চালের দাম কমবে।’
শুক্রবারও (৩১ জানুয়ারি) রাজধানীর বাজারে চালের দামে বাড়তি ভাবই লক্ষ্য করা গেছে। খোদ টিসিবির তথ্যমতে, দিনটিতে সরু চাল (নাজির বা মিনিকেট) ৭০ থেকে ৮৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। গত প্রায় এক মাস ধরেই এ ধরণের চালের দাম প্রায় একই রয়েছে। মাঝারি চাল (পাইজাম বা আটাশ) ৫৮ থেকে ৬৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে, গত এক মাস ধরেও এ ধরণের চালের বাজারও উপরে উঠে স্থির রয়েছে। আর মোটা চালের মধ্যে স্বর্ণা ৫৪ থেকে ৫৬ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। সরকারি তথ্যেই দেখা যাচ্ছে, গত এক মাসে বাজারে চালের দাম একেবারেই কমেনি।
সারাবাংলা/ইএইচটি/এমপি