বেড়েছে ব্রয়লারের দাম-কমেছে সোনালির, সবজিতে এখনো স্বস্তি
৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৮:০০ | আপডেট: ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৩:৫৮
চট্টগ্রাম ব্যুরো: বন্দরনগরী চট্টগ্রামের কাঁচাবাজারে বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। কমেছে সোনালি মুরগির দাম। মাছের দামও কিছুটা বাড়তি দেখা গেছে। চালের দাম আগের মতোই চড়া আছে। বাজারে বোতলের সয়াবিন তেলের সরবরাহ কম, তবে দামে হেরফের হয়নি। অন্যদিকে শাকসবজির দাম ক্রেতার নাগালের মধ্যে আছে। মুদিপণ্যের দামও আগের মতোই আছে।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর রিয়াজউদ্দিন বাজার, সাবএরিয়া বাজারসহ বিভিন্ন ভ্রাম্যমাণ দোকানে পণ্যের দর যাচাই করে এ চিত্র পাওয়া গেছে।
বাজারে ব্রয়লার মুরগি প্রতিকেজি গত সপ্তাহে ১৮০ টাকা ছিল। বৃহস্পতিবার বাজারে ব্রয়লার মুরগি ১৯০ টাকা এবং অলিগলির দোকানগুলোতে ১৯০ থেকে ১৯৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। সোনালী মুরগির দাম গত সপ্তাহে ৩৪০ থেকে ৩৫০ টাকা ছিল। সেটা ৩৩০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
এ ছাড়া, সোনালি হাইব্রিড ২৯০ টাকা, দেশি মুরগি ৫৪০ থেকে ৫৮০ টাকা, লেয়ার লাল মুরগি ৩০০ টাকা এবং সাদা লেয়ার ২৯০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। গরু ও মহিষ কেজি প্রতি ৭৫০ থেকে ৯৫০ টাকা, গরুর মাথার মাংস ৫৫০ টাকা এবং খাসির মাংস কেজি প্রতি ১ হাজার থেকে ১১৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
বাজারে ব্রয়লার মুরগির ডিম প্রতি ডজন ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা, হাঁসের ডিম প্রতিডজন ২৩০ টাকা, দেশি মুরগির ডিম ৩০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
![বাজারে বোতলের সয়াবিন তেলের সরবরাহ কম, তবে দামে হেরফের হয়নি। ছবি: সারাবাংলা](https://www.sarabangla.net/wp-content/uploads/2025/02/ctg-BAZAR-2.jpg)
বাজারে বোতলের সয়াবিন তেলের সরবরাহ কম, তবে দামে হেরফের হয়নি। ছবি: সারাবাংলা
নগরীর সাবএরিয়া বাজারে মাছের দাম গত সপ্তাহের চেয়ে বাড়তি দেখা গেছে। ওই বাজারে আকারভেদে প্রতিকেজি রুই মাছ ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা, কাতলা মাছ ৩২০ থেকে ৪৫০ টাকা, পাবদা ও শিং মাছ ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, বেলে ও আইড় ৬০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। এছাড়া ট্যাংরা প্রতিকেজি ৬০০ টাকা, শোল মাছ ৭০০ থেকে ১ হাজার টাকা, চাষের কই ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, পাঙ্গাস ১৮০ থেকে ২৫০ টাকা এবং গলদা চিংড়ি বিক্রি হয়েছে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা দরে। বিক্রেতারা জানালেন, প্রতিটি মাছ গত সপ্তাহের চেয়ে কেজিতে ২০-৩০ টাকা করে বাড়তি বিক্রি হচ্ছে।
চালের দর এক মাসেরও বেশিসময় ধরে চড়া আছে। বাজারে খুচরা পর্যায়ে মানভেদে স্বর্ণা, চায়না ও ইরি মানের মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়, পাইজাম মাঝারি বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকায়। রশিদ, ডায়মন্ড, সাগর, মোজাম্মেলসহ বিভিন্ন জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের নাজিরশাইল ও মিনিকেট সরু চাল বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৯০ টাকায়। চিনিগুড়া চাল বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১০৫ টাকায়।
রিয়াজউদ্দিন বাজারের আলিফ স্টোরের মালিক মোহাম্মদ আলী সারাবাংলাকে বলেন, ‘পাইজাম, নাজিরশাইল ও মিনিকেটের চাহিদা বেশি। এগুলোর দাম একমাস ধরে বাড়তি আছে। মোটা চালের দাম আগের মতোই কিছুটা কম আছে। আড়ত থেকে যদি আমরা কম দামে না পাই, আমাদের তো কম দামে বিক্রির সুযোগ নেই।’
দু’সপ্তাহ ধরে চট্টগ্রামের বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকট দেখা দিয়েছে। রিয়াজউদ্দিন বাজারের মক্কা স্টোরের মালিক মোহাম্মদ শফি সারাবাংলাকে বলেন, ‘কোম্পানিগুলো তেল দিচ্ছে না। ১০০ পিস অর্ডার করলে দেয় ১০-২০ পিস। তবে দাম বাড়েনি। খোলা তেল যথেষ্ঠ পাচ্ছি।’
![শাকসবজির দাম এখনো ক্রেতার নাগালের মধ্যে আছে। ছবি: সারাবাংলা](https://www.sarabangla.net/wp-content/uploads/2025/02/ctg-BAZAR-3.jpg)
শাকসবজির দাম এখনো ক্রেতার নাগালের মধ্যে আছে। ছবি: সারাবাংলা
বাজারে বৃহস্পতিবার প্রতিলিটার বোতলের সয়াবিন তেল ১৭৫ থেকে ১৮০ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল ১৬৮ টাকা, পাম তেল ১৫৫ থেকে ১৫৮ টাকায়, পাম তেল সুপার ১৫৯ থেকে ১৬২ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ২৪০ টাকা ও বোতলজাত ২৬০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
অন্যান্য মুদিপণ্যের মধ্যে প্যাকেটজাত চিনি প্রতিকেজি ১২৫ টাকা, খোলা চিনি ১৩০ টাকা, ছোট মসুরের ডাল ১৩০ টাকা, মোটা মসুরের ডাল ১১০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৪০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৫৫ টাকা, খেসারি ডাল ১১০ টাকা, চনার ডাল ১৪৫ টাকা, ছোলা ১৩৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। দুই কেজি প্যাকেট আটা ১২৫ টাকা, ময়দা ১৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
শীতকালীন সবজির ভরপুর সরবরাহ এখনও বাজারে অব্যাহত আছে। ফলে শাকসবজি ক্রেতার নাগালের মধ্যেই আছে। বাজারে মুন্সিগঞ্জের নতুন আলু মানভেদে প্রতিকেজি ২০ থেকে ২৫ টাকা, লাল আলু, সাদা আলু, বগুড়ার আলু ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সবজির মধ্যে কাঁচামরিচ ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, বেগুন, মানভেদে ২০ থেকে ৩০ টাকা, মূলা, বাঁধাকপি, ফুলকপি, শিম, শসা, টমেটোর দাম ১৫ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া শসা ৩০, মিষ্টিকুমড়া ৩০, করলা ৪০, মটরশুঁটি ৭০, গাজর ৪০ টাকা, বরবটি ৫০ ও লাউ ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শাকের মধ্যে লাল শাক, লাউ শাক, মুলা শাক, পালং শাক, কলমি শাক, ডাঁটা শাক ১০ থেকে ২০ টাকা আঁটি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার বাজারে দেশি পেঁয়াজ প্রতিকেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা ও ভারতীয় পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৭৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতিকেজি দেশি রসুন ২৩৫, চায়না রসুন ২০০ থেকে ২২০ টাকা, ভারতীয় আদা ১০০ থেকে ১২০ টাকা, চায়না আদা ২২৫ টাকা, দেশি আদা ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম