কোস্টগার্ডকে আধুনিক করতে সব ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৪:১০ | আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৫:৫২
ঢাকা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেছেন, কোস্টগার্ডকে আধুনিক করতে সব ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার। কোস্ট গার্ডের আধুনিকায়নে সম্প্রতি বুলেট প্রুফ সুবিধা সম্বলিত হাই স্পিড বোট, গ্রাউন্ড কন্ট্রোল স্টেশনসহ সার্ভেল্যান্স ড্রোন ক্রয় প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তাছাড়া কোস্ট গার্ডের জন্য আগামীতে হেলিকপ্টারসহ রেসকিউ ড্রোন ক্রয়েরও পরিকল্পনা করা হয়েছে।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে কোস্ট গার্ড সদর দফতরে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের ৩০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও কোস্ট গার্ড দিবস-২০২৫ উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের সদস্যগণ নিজেদের জীবন বিপন্ন করে দেশের অভ্যন্তরীণ নৌ পথের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করে যাচ্ছে। নৌ পথের যাবতীয় অবৈধ কার্যক্রম, মাদকদ্রব্য প্রতিরোধ, অস্ত্র ও মানব পাচার, অবৈধ চোরাচালান, জলদস্যুতা, অবৈধ মৎস্য আহরণ রোধসহ অন্যান্য অপরাধ কার্যক্রম প্রতিহত করার ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। তারা নিয়মিত টহল দ্বারা সমুদ্র ও নদীপথের নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি দুর্ঘটনায় পতিত বিপদগ্রস্ত নৌ যান ও নাবিকদের উদ্ধার কার্যক্রমও পরিচালনা করে যাচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, উপকূলীয় এলাকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় স্থানীয় জনগণ, মৎস্যজীবী ও নৌ যান মালিকদের সচেতনতা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন সচেতনতামূলক কাজে এ বাহিনীর ভূমিকা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। বিশেষ করে ঘূর্ণিঝড়, বন্যা ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় কোস্ট গার্ডের সদস্যগণ বিপন্ন মানুষের জীবন রক্ষা এবং ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনায় বিশেষ অবদান রাখছে। সবমিলিয়ে কোস্ট গার্ড উপকূলীয় এলাকার জনগণ তথা দেশের গণমানুষের কাছে আস্থার প্রতীকে পরিণত হয়েছে।
উপদেষ্টা বলেন, এ বাহিনীতে সংযুক্ত করা হয়েছে ১৭৯টি আধুনিক ও দ্রুতগামী জলযান যা বাহিনীটির আভিযানিক সক্ষমতা বহুলাংশে বৃদ্ধি করেছে। নির্মিত হয়েছে বাসস্থান, ব্যারাক ও প্রশাসনিক ভবন। গভীর সমুদ্রে যোগাযোগ ব্যবস্থায় যুগান্তকারী পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে কোস্ট গার্ডের জাহাজগুলোতে স্থাপিত হয়েছে VSATNET (ভিস্যাটনেট) System। এছাড়া বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের আওতায় ইনশোর প্যাট্রল ভেসেল, ফ্লোটিং ক্রেন, টাগ বোট এবং বিভিন্ন ধরনের হাইস্পিড বোট কোস্ট গার্ড-এর বহরে যুক্ত করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি কোস্ট গার্ড বহরের পুরাতন নয়টি জাহাজের প্রতিস্থাপক হিসেবে দেশীয় শিপইয়ার্ডে নয়টি প্যাট্রোল ভেসেল নির্মাণের প্রকল্প সরকার কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে। এই আধুনিক জাহাজসমূহ বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড বহরে সংযোজিত হলে এ বাহিনীর অপারেশনাল সক্ষমতা অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় বহুগুণে বেড়ে যাবে।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বিভিন্ন অভিযানের মাধ্যমে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড অসাধারণ ভূমিকা পালন করেছে। সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড একটি দক্ষ, আধুনিক ও শক্তিশালী বাহিনী হিসেবে জাতীয় নিরাপত্তা ও অর্থনীতিতে টেকসই অবদান রেখে চলেছে। উপদেষ্টা এসময় দেশের সার্বভৌমত্ব, সমুদ্র ও জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিতের মাধ্যমে উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের প্রতিটি সদস্যকে সততা, দেশপ্রেম, শৃঙ্খলা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনে ব্রতী হওয়ার আহ্বান জানান। তাছাড়া কোস্ট গার্ডের যে সকল সদস্য কর্মদক্ষতা ও বিশেষ অবদানের জন্য পুরস্কৃত হয়েছেন তাদের আন্তরিক অভিবাদন জানান।
অনুষ্ঠানে কোস্ট গার্ডের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের ওপর অডিও ভিজ্যুয়াল প্রদর্শন করা হয়। উল্লেখ্য, এ বছর কর্মদক্ষতা ও বিশেষ অবদানের জন্য ৪০ জন কোস্ট গার্ড সদস্যকে পদক প্রদান করা হয়।
বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের মহাপরিচালক রিয়ার এডমিরাল মো. জিয়াউল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তৃতা করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি।
সারাবাংলা/এনএল/এমপি
কোস্ট গার্ড স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী