২৫ ডিগ্রির নিচে এসি চালালে সংযোগ বিচ্ছিন্ন: বিদ্যুৎ উপদেষ্টা
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৬:৫১ | আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৯:০৫
ঢাকা: বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবীর খান বলেছেন, বাসাবাড়ি, মার্কেট, মসজিদসহ সরকারি-বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে এসি চালানো যাবে না। এর ব্যত্যয় হলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলোতায়নে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, রেলপথ মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত অধিবেশন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আসছে রোজা, সেই সঙ্গে গ্রীষ্ম মৌসুম। এ সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে আমরা সংশ্লিষ্ট সবাইকে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে বলেছি।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় এসে একটি ভঙ্গুর অর্থনৈতিক অবস্থা পেয়েছে। বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার হয়ে যাওয়ার বিদ্যুৎ ও জ্বালানির মূল্য পরিশোধে আমাদের বেগ পেতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতেও আমরা আসন্ন রমজানে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার সবরকম চেষ্টা করছি।’
তিনি বলেন, ‘শীতকালে আমাদের বিদ্যুতের চাহিদা থাকে ৯ হাজার মেগাওয়াট। গ্রীষ্মে সেই বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে দাঁড়ায় ১৭-১৮ হাজার মেগাওয়াট। এই যে চাহিদাটা বেড়ে যাওয়া তার অন্যতম দুটো কারণ হচ্ছে সেচ ও এসির ব্যবহার বা কুলিং লোড। সেচ যেহেতু খাদ্য উৎপাদনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, তাই তাকে আমরা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেব। কিন্তু এসির যে ব্যবহার, এটা যদি পরিমিত আকারে ব্যবহার করা যায়, তাহলে কয়েক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সাশ্রয় হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘কুলিং লোড কমাতে আমরা এরইমধ্যে উদ্যোগ নিয়েছি। ধর্ম উপদেষ্টাকে অনুরোধ করেছি, তিনি যেন প্রত্যেকটা মসজিদে তারাবির সময় এসি ২৫ ডিগ্রিতে ব্যবহারের নির্দেশনা দেন। সচিবালয়সহ সরকারি-বেসরকারি অফিসেও এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে কাজ করা হবে। এসি ব্যবহারের এ নির্দেশনা যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে কি না, তা পর্যবেক্ষণ করতে বিদ্যুৎ বিভাগের একটি টিম কাজ করবে। কোথাও এর ব্যত্যয় ঘটলে সেখানে লোডশেডিং করা হবে, এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে বিদ্যুৎ বিচ্ছেদও করা হতে পারে। সেখানে শহর বা গ্রাম বিবেচনা করা হবে না। ঘোষণা দিয়েই লোডশেডিং করা হবে।’
গ্যাস সংকটের বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘গ্যাসের উৎপাদন বাড়াতে কূপ খনন করা হচ্ছে। যেখান থেকে অল্প অল্প করে উৎপাদন বাড়ছে। এ ছাড়া গ্যাসের অবৈধ যেসব সংযোগ রয়েছে, সেগুলো বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে। এতেও কিন্তু ২০০ এমএমসিএফডি গ্যাস সাশ্রয় হচ্ছে। তা ছাড়া এলএনজি আমদানির ক্ষেত্রে যথেষ্ট বৈদেশিক মুদ্রার সহায়তা যেন পাই, সে বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকও করা হয়েছে। আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদনে কিন্তু সক্ষমতার অভাব নেই, অভাব হলো জ্বালানির।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘বর্তমানে উচ্চমূল্যে বিদ্যুৎ কেনা হয়। সেক্ষেত্রে কয়লা, গ্যাস ও তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো থেকে কী পরিমাণে, কত দামে বিদ্যুৎ কেনা হবে, সে বিষয়ে একটি মানদণ্ড ঠিক করা হবে। সব মিলিয়ে আমরা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতকে একটি সাসটেইনেবল পর্যায়ে নিয়ে আসতে চাই।’
ফাওজুল কবীর খান বিদ্যুৎ, জ্বালানি খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি সড়ক যোগাযোগ ও রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন। জেলা প্রশাসক সম্মেলনে এই দুই মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
সারাবাংলা/জেআর/এমপি