শেয়ার কারসাজি: আমিনুল-হিরু চক্রকে ১০ কোটি টাকা জরিমানা
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৯:০৮ | আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৯:৪৬
ওরিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড ও এনআরবিসি ব্যাংক পিএলসির শেয়ার কারসাজিতে জড়িত থাকার অভিযোগে জরিমানা করেছে বিএসইসি। ছবি: সারাবাংলা
ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ওরিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড ও এনআরবিসি ব্যাংক পিএলসির শেয়ার কারসাজিতে জড়িত থাকার অভিযোগে ৮ ব্যক্তি ও ৪ প্রতিষ্ঠানকে মোট ১০ কোটি ১৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
কোম্পানি দুইটির মধ্যে ওরিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ার নিয়ে নাবিল গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিনুল ইসলাম এবং এনআরবিসি ব্যাংকের শেয়ার নিয়ে সমবায় অধিদফতরে উপ-নিবন্ধক ও শেয়ার ব্যবসায়ী আবুল খায়ের হিরু কারসাজিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এভাবে কোম্পানি দুইটির শেয়ার অস্বাভাবিক দাম বাড়িয়ে তারা কোটি কোটি টাকা মুনাফা হাতিয়ে নিয়েছেন।
বিভিন্ন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত সাপেক্ষে কারসাজির সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় এনেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিএসইসির ওয়েবসাইটে এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। জানুয়ারির এনফোর্সমেন্টের ওপর প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের ২১ সেপ্টেম্বর থেকে ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত সময়ে ওরিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ার কারসাজি করে দাম বাড়ানো হয়। ওই একই বছরের ৭ থেকে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত সময়ে এনআরবিসি ব্যাংকের শেয়ারের দাম বাড়ানোর জন্য কারসাজির আশ্রয় নেওয়া হয়।
ওরিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ার কারসাজিতে জড়িতরা আইসিবি সিকিউরিটিজ ট্রেডিং কোম্পানি লিডিমটেড, আকিজ ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড ও ইউনাইটেড সিকিউরিটিজ লিমিটেডে বিও হিসাব পরিচালনা করতেন। আর এনআরবিসি ব্যাংকের শেয়ার কারসাজিতে জড়িতরা অগ্রণী ইক্যুইটি অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড, ইউসিবি স্টক ব্রোকারেজ লিমিটেড, ইবিএল সিকিউরিটিজ লিমিটেড, সিটি ব্যাংক ক্যাপিটাল রিসোর্স লিমিটেড, প্রিমিয়ার ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেড, এসবিএল ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড, ব্র্যাক ইপিএল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড ও ব্র্যাক ইপিএল স্টক ব্রোকারেজ লিমিটেড এবং কমার্স ব্যাংক সিকিউরিটিজ অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড বিও হিসাব পরিচালনা করতেন।
ওরিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ার কারসাজিতে জড়িত থাকার অভিযোগে নাবিল গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিনুল ইসলামকে ৩ কোটি ২০ লাখ টাকা, তার প্রতিষ্ঠান নাবিল ফিড মিলসকে ১০ লাখ টাকা ও আরেক প্রতিষ্ঠান নাবিল নাবা ফুডসকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এদিকে, এনআরবিসি ব্যাংকের শেয়ার কারসাজিতে জড়িত থাকার অভিযোগে সমবায় অধিদফতর উপ-নিবন্ধক ও শেয়ার ব্যবসায়ী আবুল খায়ের হিরুকে ২.৩০ কোটি টাকা, তার বাবা আবুল কালাম মাতবরকে ৪.১৫ কোটি টাকা, তার স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসানকে ১১ লাখ টাকা, তার বোন কনিকা আফরোজকে ১ লাখ টাকা, তার মা আলেয়া বেগমকে ১ লাখ টাকা, তার ভাই মোহাম্মদ বাসারকে ১ লাখ টাকা, ভাই সাজিদ মাতবরকে ১ লাখ টাকা, তার প্রতিষ্ঠান ডিআইটি কো-অপারেটিভকে ১২ লাখ টাকা এবং তার আরেক প্রতিষ্ঠান মোনার্ক হোল্ডিংসকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
তদন্ত কার্যক্রম:
নাবিল গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিনুল ইসলাম এবং তার দুইটি প্রতিষ্ঠান যোগসাজোস করে ওরিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ার লেনদেন করে। কারসাজিকারীরা ২০২১ সালের ২১ সেপ্টেম্বর থেকে ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত সময়ে ওরিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ার কারসাজি করে দাম বাড়ায়। এ সময়ের মধ্যে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ৬৮.২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১১৫.২০ টাকায় নিয়ে যাওয়া যায়। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ৪৭ টাকা বা ৬৮.৯১ শতাংশ বাড়ে যায়। সমবায় অধিদফতরে উপ-নিবন্ধক ও শেয়ার ব্যবসায়ী আবুল খায়ের হিরু এবং তার পরিবারের সাত সদস্য ও দুইটি প্রতিষ্ঠান যোগসাজোস করে এনআরবিসি ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন করে। কারসাজিকারীরা ২০২১ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত সময়ে এনআরবিসি ব্যাংকের শেয়ার কারসাজি করে দাম বাড়ায়। এ সময়ের মধ্যে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ২৩.৮০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩৮.৩০ টাকায় নিয়ে যাওয়া যায়। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ৬০.৯২ শতাংশ বেড়ে যায়।
সারাবাংলা/জিএস/এসডব্লিউ
এনআরবিসি ব্যাংক ওরিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালস জরিমানা বিএসইসি শেয়ার কারসাজি