একশনএইড এর প্রতিবেদন
জলবায়ু দূষণকারী দেশগুলোর কাছে বাংলাদেশের পাওনা ৫.৮ ট্রিলিয়ন ডলার
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৯:৫২ | আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৯:৫৪
আফ্রিকান ইউনিয়নের সম্মেলন উপলক্ষে গত ১০ ফেব্রুয়ারি ‘একশনএইড ইন্টারন্যাশনাল কর্তৃক প্রকাশিত প্রতিবেদন -Who Owes Who?
ঢাকা: উন্নয়নের নামে বাংলাদেশ প্রায় ৭৮ বিলিয়ন ডলার বিদেশি ঋণের ফাঁদে জর্জরিত। অন্যদিকে ধনী ও জলবায়ু দূষণকারী দেশগুলোর থেকে দেশের পাওনা ৫.৮ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার।
আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা একশনএইড ইন্টারন্যাশনাল কর্তৃক সম্প্রতি প্রকাশিত এক বিশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ইথিওপিয়ার আদ্দিস আবাবায় অনুষ্ঠিত আফ্রিকান ইউনিয়নের সম্মেলন উপলক্ষে ‘হু ওউজ হু’ নামের এ বিশেষ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদনে জরুরি ভিত্তিতে এই বিদেশি ঋণ প্রত্যাহারের আহ্বান এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ন্যায়বিচারের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালে বিশ্বের ৫৪টি নিম্ন আয়ের দেশ বিদেশি ঋণের ফাঁদে জর্জরিত। দেশগুলো জাতীয় উন্নয়ন বিসর্জনের বিনিময়ে ধনী দেশগুলোর কাছে পরিশোধ করেছে ১৩৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
প্রতিবেদনে ৭০টিরও বেশি দেশের তথ্য উপস্থাপন করে বলা হয়, জলবায়ু দূষণের ক্ষতিপূরণ হিসেবে বাংলাদেশসহ নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলোর কাছে ধনী দেশগুলো ১০৭ ট্রিলিয়ন ডলার ঋণী। এটি নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলোর মোট বিদেশি ঋণ ১.৪৫ ট্রিলিয়ন ডলারের তুলনায় ৭০ গুণ বেশি।
একশনএইড-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- ধনী দেশ, বেসরকারি ঋণদাতা ও বৈশ্বিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে বিদেশি ঋণ পরিশোধ করতে গিয়ে জাতীয় স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং জলবায়ু কর্মসূচিসহ অপরিহার্য সরকারি সেবাসমূহ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বাংলাদেশ। অন্যদিকে, ধনী দেশগুলি জলবায়ু ক্ষতিপূরণ হিসেবে বাংলাদেশকে ৫.৮ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের জলবায়ু ঋণ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়েছে। এতে দেশের সার্বিক উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে।
একশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির বলেন, নতুন প্রতিবেদনটিতে নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশগুলোর বিদেশি ঋণের ফাঁদের চিত্র ফুটে উঠেছে। ধনী দেশগুলোর জলবায়ু ক্ষতিপূরণ পরিশোধের প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থতার বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে। ঋণ সংকট এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশের বিদেশি ঋণ প্রত্যাহার এবং ওপনিবেশিক ঋণ কাঠামো থেকে মুক্তির আহ্বান জানান তিনি।
‘বৈশ্বিক দক্ষিণকে এ বছর ঋণ মওকুফে নতুন জাতিসংঘ ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশনের জন্য চাপ দিতে হবে’- এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন,
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বিশেষ করে দেশের নারী ও মেয়েদের ওপর পড়ছে। আমরা বারবার দেখেছি কীভাবে নারী ও মেয়েরা জলবায়ু সংকটের সম্মুখীন হচ্ছে। কিন্তু জলবায়ু দূষণকারী ধনী দেশগুলো জলবায়ু ঋণ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হওয়ায় প্রশমন ও অভিযোজনের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
সারাবাংলা/ইএইচটি/আরএস