কুয়েট শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় প্রশাসনের মামলা
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২৩:১১ | আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১১:৩১
খুলনা: খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনার প্রেক্ষিতে হামলার শিকার শিক্ষার্থীদের ন্যায় বিচার প্রাপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় খানজাহান আলী থানায় এ মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) শাহেদুজ্জামান শেখ। তবে খানজাহান আলী থানার ওসি মো. কবির হোসেন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেননি।
এরআগে সকাল সাড়ে ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৮তম জরুরি সিন্ডিকেট সভা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মাছুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সিন্ডিকেট সভায় এ ঘটনায় জড়িত বহিরাগতদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মামলাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া, ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রকৃত দোষী শিক্ষার্থীদের খুঁজে বের করা, রাজনৈতিক সংগঠনের কার্যক্রম নিষিদ্ধের আদেশটি বহাল রাখা ও শিক্ষার্থীদের সব ধরনের রাজনৈতিক সংগঠনের কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ততা নিষিদ্ধেও যে ঘোষণা করা হয়েছিল তা কঠোরভাবে অনুসরণ করা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সকল শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে সকল ধরনের রাজনৈতিক সংগঠনের কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ততা নিষিদ্ধ ঘোষণা এবং এ আইন অমান্যকারীর বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধান অনুযায়ী চাকুরীচ্যুত করাসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ, রাজনীতির সঙ্গে জড়িত শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রেও তদন্ত সাপেক্ষে আজীবন বহিষ্কার ও ছাত্রত্ব বাতিল করা হোক মর্মে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এ ছাড়া দোষী শিক্ষার্থীদের খুঁজে বের করাসহ পূর্ণাঙ্গ তদন্তের জন্য চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হয় এবং উক্ত কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করতে বলা হয়। এ সকল সিদ্ধান্তের আলোকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে জড়িতদের বিরুদ্ধে উক্ত মামলা দায়ের করা হয়।
কুয়েটের জনসংযোগ কর্মকর্তা জানান, মঙ্গলবার ছাত্রদের দুটি গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার প্রেক্ষিতে একটি অনাকাঙ্কিত ঘটনা ঘটে। উক্ত ঘটনা ঘটার পর বেলা ১টা ৩০ মিনিটে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে উক্ত ঘটনার বিচারের জন্য চারটি দাবি পেশ করা হয়। দাবির প্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর শিক্ষার্থীদের সকল ধরনের সহযোগিতা ও যেকোনো অন্যায়ের বিচার করার প্রতিশ্রুতি দেন। কোনোরূপ সময়ক্ষেপণ না করে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করে ভাইস-চ্যান্সেলর দ্রুত সহযোগিতা করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করেন। এ ছাড়া ছাত্রদের দাবি বাস্তবায়নের জন্য ভাইস-চ্যান্সেলর সকল ডিন, ইনস্টিটিউট পরিচালক, রেজিস্ট্রার, বিভাগীয় প্রধান, সকল পরিচালক, প্রভোস্টদের নিয়ে বিকেল সাড়ে ৩টায় একটি সভা আহ্বান করেন।’
তিনি জানান, ‘কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী উপস্থিত হওয়ার আগেই বহিরাগত কিছু সন্ত্রাসী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হলে ভাইস-চ্যান্সেলর, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলরসহ আরও কয়েজন শিক্ষক স্ব-শরীরে সংঘর্ষ স্থানে যান এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিবৃত্তের চেষ্টা করেন। এ সময়ে কয়েকজন শিক্ষক, ভাইস-চ্যান্সেলর, বহু শিক্ষার্থীসহ কর্মচারীও আহত হয়ে কুয়েট মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি হন। এ সময় ভাইস-চ্যান্সেলরের শারিরীক অবস্থার অবনতি ঘটলেও শিক্ষার্থীদের সকল দাবি দ্রুত সময়ের মধ্যে পূরণের আশ্বাস দেন।’
ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট সকলকে শান্ত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে এবং আর যাতে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি না হয় সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সার্বিক সহযোগিতার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ঘটনার বিচার দ্রুত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
সারাবাংলা/এইচআই