Friday 28 Feb 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

যে কারণে হত্যা করা হয় খুলনার অর্ণব ও ইমনকে

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১০:২৬

পুলিশের প্রেস ব্রিফিং। ছবি: সারাবাংলা

খুলনা: খুলনায় দুটি সন্ত্রাসী গ্রুপের দ্বন্দ্বের জের ধরে হত্যা করা হয় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা প্রশাসনের ছাত্র অর্ণব কুমারকে। আর স্ত্রীর পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় খুন হন বেসরকারি মোবাইল অপারেটর বাংলালিংকের বিক্রয় প্রতিনিধি আল আমিন ইমন।

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) সদর দফতরে সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার কুতুব উদ্দিন এসব তথ্য জানিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

অর্ণব সরকার হত্যা সম্পর্কে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার কুতুব উদ্দিন বলেন, ‘সন্ত্রাসী পলাশ ও কালা লাভলুর সহযোগী ছিলেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা প্রশাসনের ছাত্র অর্ণব। খুব ছোট বেলা থেকে তাদের মধ্যে বেশ ভালো সম্পর্ক ছিল। এ সম্পর্ক তার জীবনে বড় কাল হয়ে দাঁড়ায়। গ্রেনেড বাবুর সদস্যরা তাকে হত্যা করে। এ হত্যাকাণ্ডে ৯ জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতার হওয়া আসামিদের মধ্যে ইনসান শরীফের কাছ থেকে একটি ওয়ান শুটার গান, ২ রাউন্ড গুলি এবং হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।’

অন্যান্য আসামিদের মধ্যে শাহারিয়ার সজল ও মাহিন হোসেন শুভ অর্ণব হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। বাকি আসামিরা পুলিশের কাছে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করলেও আদালতে নিজেদের সম্পৃক্ততার কথা এড়িয়ে যান। দুটি গ্রুপের দ্বন্দ্বের জেরে অর্ণব খুন হন বলে আসামিরা স্বীকার করেছেন।

আল আমিন ইমন হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমের বলি হন তিনি। স্ত্রী লামিয়া ইসলাম সুমি পরকীয়া প্রেমে আসক্ত ছিলেন। খুলনার বড় বাজার এলাকার ব্যবসায়ী বিশ্বজিৎ সাহার সঙ্গে লামিয়া ইসলাম সুমির পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। ইমন ঘটনাটি জেনে ফেলেন এবং বিশ্বজিৎ সাহাকে কড়া ভাষায় ফোন করে গালিগালাজ করেন। ইমনকে শায়েস্তা করার জন্য বিশ্বজিৎ তাকে হত্যার পরিকল্পনা করতে থাকেন। পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য বিশ্বজিৎ তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পূর্বের কর্মচারী নাইম ও মুন্সিকে ২০ হাজার টাকা চুক্তিতে ভাড়া করেন। ঘটনার দিন সকাল ৮টার দিকে নাইম ও মুন্সি ট্রাকস্ট্যান্ড রোড কাচা বাজারের সামনে উপস্থিত হন।’

বিজ্ঞাপন

এ সময় মোটরসাইকেল চালিয়ে সোনাডাঙ্গা মডেল থানাধীন ২২ তলার সামনে পৌঁছালে বিশ্বজিৎ সাহা হত্যাকারীদের আল আমিন ইমনকে চিনিয়ে দেন। মোটরসাইকেল চালানো অবস্থায় সন্ত্রাসীরা ইমনের পেটের বাম পাশে ছুরি দিয়ে আঘাত করলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। সন্ত্রাসীরা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে নিহতের বড় ভাই রাজিবুল ইসলাম বাদী হয়ে থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

পুলিশ ঘটনাস্থলের আশপাশের এলাকার সিসি টিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে আসামিদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান পরিচালনা করে। পুলিশ উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে ইমন হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে বিশ্বজিৎ সাহাকে পূর্ব রূপসা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। মঙ্গলবার আদালতে হত্যার বিবরণ দিয়ে বিশ্বজিৎ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। পরে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

গ্রেফতার বিশ্বজিৎ সাহা নগরীর পূর্ব বানিয়াখামার লোহাগেট এলাকার মতিলাল সাহার ছেলে।

সংবাদ সম্মেলনে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মো. মনিরুজ্জামান মিঠু, সোনাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম, উপপরিদর্শক (এসআই) আশরাফুল আলম ও এসআই খালিদ উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/এমপি

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় হত্যা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর