গাজায় মানবিক সহায়তা বন্ধ করলো ইসরায়েল
৩ মার্চ ২০২৫ ১৩:৪৪ | আপডেট: ৩ মার্চ ২০২৫ ১৫:৩৬
গাজার উত্তরাঞ্চলীয় শহর জাবালিয়ায় ধ্বংসপ্রাপ্ত বাড়িঘরের মধ্যে ফিলিস্তিনিরা ইফতার করছেন। ছবি: সংগৃহীত
ইসরায়েল গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছে। ইসরায়েলের দাবি হামাসকে যুদ্ধবিরতির শর্তের পরিবর্তন মেনে নিতে হবে। এছাড়া সেনা প্রত্যাহার ছাড়াই জিম্মিদের মুক্তির শর্তও তারা দিয়েছে।
রোববার (২ মার্চ) ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ইসরায়েলের দাবি, মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের প্রস্তাব অনুযায়ী যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ বাড়ানোর পক্ষে তারা সম্মত ছিল, তবে হামাস তা প্রত্যাখ্যান করেছে।
‘যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ শেষ হওয়ায় এবং হামাস উইটকফের পরিকল্পনা মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানানোয়, প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে গাজায় কোনো ধরনের পণ্য প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। জিম্মিদের মুক্তি ছাড়া কোনো যুদ্ধবিরতি সম্ভব নয়,’ ইসরায়েলের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে।
ঘোষণার পরপরই নেতানিয়াহুর মুখপাত্র ওমের দোস্ত্রি এক সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করেন, ‘রোববার (২ মার্চ) সকালে কোনো ট্রাক গাজায় প্রবেশ করেনি এবং এই মুহূর্তে প্রবেশ করবে না।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এই সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়ে গাজায় অবিলম্বে মানবিক সহায়তা প্রবাহ পুনরায় চালুর আহ্বান জানিয়েছেন।
হামাস এক বিবৃতিতে এই সিদ্ধান্তকে যুদ্ধাপরাধ আখ্যা দিয়ে বলেছে, ‘মানবিক সহায়তা বন্ধ করা একটি কূটনৈতিক হুমকি এবং যুদ্ধবিরতি চুক্তির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।’
হামাস জানিয়েছে, তারা পূর্বের চুক্তি অনুযায়ী যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপে প্রবেশ করতে চায়, যেখানে স্থায়ী শান্তির জন্য আলোচনা চলবে। তবে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে প্রস্তাবিত সাময়িক যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর পরিকল্পনাকে প্রত্যাখ্যান করেছে তারা।
ইউরোপীয় ইউনিয়নও হামাসের যুদ্ধবিরতি বর্ধিত করার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানকে দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছে, তবে ইসরায়েলের সহায়তা বন্ধের সিদ্ধান্তকেও মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে বলে সতর্ক করেছে।
অন্যদিকে, ইসরায়েলের কট্টর ডানপন্থী অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোত্রিচ এই সিদ্ধান্তকে ‘সঠিক পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ’ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘এখন শত্রুর বিরুদ্ধে দ্রুত ও প্রাণঘাতী পদক্ষেপ নিতে হবে, যতক্ষণ না পূর্ণ বিজয় নিশ্চিত হয়।’
যুদ্ধবিরতির স্থায়ী সমাপ্তি হলে গাজা কে পরিচালনা করবে, সে বিষয়ে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি একটি বিতর্কিত প্রস্তাব দিয়েছেন, যেখানে তিনি বলেছেন, গাজাকে মেডিটেরিয়ান রিভিয়েরা বানানো উচিত, যা বর্তমান ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠীকে উচ্ছেদ করার ইঙ্গিত দেয়।
সারাবাংলা/এনজে