রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা নাহিদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা
৯ মার্চ ২০২৫ ১৬:০১ | আপডেট: ৯ মার্চ ২০২৫ ১৮:৩৭
রংপুর: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর মহানগর কমিটির সাবেক মুখপাত্র নাহিদ হাসান খন্দকারের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির অভিযোগে মামলা হয়েছে।
রোববার (৯ মার্চ) বিকেলে রংপুরের গঙ্গাচড়া থানাধীন গ্রিন সিটি ইকো পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আতিকুল ইসলাম ভূঁইয়া বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলায় নাহিদ হাসান খন্দকারের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৮-১০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় নগদ এক লাখ টাকা ও প্রতিদিন ২০ হাজার টাকা করে চাঁদা দাবির অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গঙ্গাচড়া মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) দুলাল চন্দ্র অধিকারী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার বাদী আতিকুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, খলেয়া ইউনিয়নে তার এক বোনসহ গ্রিন সিটি ইকো পার্ক নির্মাণের কাজ শুরু করেন। এতে পুকুর থেকে বালু উত্তোলনের প্রয়োজন দেখা দেয়। কিন্তু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা নাহিদ হাসান খন্দকার চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। এ ঘটনায় নাহিদ হাসান খন্দকারের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আসামি করে গঙ্গাচড়া মডেল থানায় একটি মামলা করা হয়েছে।
এর আগে, শনিবার রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রংপুর মহানগর কমিটির মুখপাত্র নাহিদ হাসান খন্দকারকে চাঁদাবাজি’র অভিযোগে তার পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রংপুর মহানগর কমিটির সভাপতি ইমতিয়াজ আহমেদ ইমতি ও সাধারণ সম্পাদক রহমত আলী সই করা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সম্প্রতি একটি বালু মহালে গিয়ে চাঁদাবাজি’র চেষ্টা করে বলে অভিযোগ উঠে। তার চাঁদাবাজির চেষ্টার ভিডিও, অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন তাকে তিন দিনের মধ্যে জবাব দেওয়ার জন্য কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়। তবে ওই নেতা চাঁদা দাবির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আসছেন শুরু থেকেই। তার দাবি, তাকে ফাঁসানোর জন্য কেউ এই কাজ করেছেন।
দুই মিনিট ৪২ সেকেন্ডের এমন একটি ভিডিও ক্লিপ সারাবাংলার হাতে এসেছে। ভিডিওতে নাহিদ হাসান খন্দকারকে দেখা গেলেও অপরপাশে থাকা ব্যক্তিকে দেখা যায়নি। ভিডিওটি কবে এবং কোথায় ধারণ করা হয়েছে সে বিষয়েও কিছু জানা যায়নি।
ভিডিওতে দেখা যায়, একটি পুকুর খনন করে বালু উত্তোলন ও পার্ক নির্মাণের বিষয়ে নাহিদ হাসান খন্দকারের সঙ্গে কথা হচ্ছিল অপরপাশে থাকা এক ব্যক্তির। সেখানে অপরপাশে থাকা ব্যক্তিটি নাহিদ হাসানকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “তুমি যদি বলো সেখানে বালুর ব্যবসা হচ্ছে, তাহলে সেটা বন্ধ করে দেই। এক লাখ টাকা দিতে পারবো না, পাঁচ হাজার টাকা দিচ্ছি।”
এ সময় নাহিদ হাসান খন্দকার বলেন, “ব্যবসা আপনি বন্ধ করবেন কেন, ব্যবসা আপনিই চালান। ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলেন। প্রয়োজনে সময় নেন, ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলেন।”
নাহিদ হাসান আরও বলেন, “আপনি তো দেখছেন বিষয়টি কোথায় গেছে। ইউএনও-ডিসিকে সামলাতে হচ্ছে। যদি মনে হয় কিছু কমাবেন তাহলে ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলেন। আমি চাই না আপনাদের কোনো সমস্যা হোক। জানেন তো সংগঠন চালাতে হলে কী কী করতে হয়।”
গত বছরের ২৪ নভেম্বর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ এবং সদস্য সচিব আরিফ সোহেল সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে ইউল্যাব শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ আহম্মেদ ইমতিকে আহ্বায়ক ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রহমত আলীকে সদস্য সচিব করে ৬ মাস মেয়াদি রংপুর মহানগরের ১১২ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি প্রকাশ করা হয়। এতে রংপুর ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন অ্যান্ড টেকনোলজির শিক্ষার্থী নাহিদ হাসান খন্দকারকে মুখপাত্র করা হয়।
সারাবাংলা/ইআ