Friday 14 Mar 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কুড়িগ্রামে ৬ হাজার হাঁসের খামার, পেকিন পালনে ভাগ্য বদলেছে অনেকের

ডিস্ট্রিক্ট করসপন্ডেন্ট
১৪ মার্চ ২০২৫ ১৬:৪১

পেকিন জাতের হাঁস

কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামে দিনদিন চীনের পেকিন জাতের হাঁস পালন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এই হাঁস পালনে অল্প সময়ে অনেকের বেকারত্ব ঘুচিয়ে ভাগ্য বদলেছে। এতে স্থানীয়দের মধ্যে এই জাতের হাঁস পালনে আগ্রহ বেড়েছে। জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, কুড়িগ্রামের ৯টি উপজেলায় প্রায় ৬ হাজার হাঁসের খামার রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৬ শতাধিক খামারি পেকিন জাতের হাঁস পালন করছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, কুড়িগ্রাম রাজারহাট উপজেলার টগরাইহাট মাধাই গ্রামের মীর মোশাররফ হোসেন পেশায় একজন খামারি। আধুনিক পদ্ধতি অনুসরণ করে উঁচু মাচায় গড়ে তুলেছেন চীনের পেকিন জাতের হাঁসের খামার। এই জাতের হাঁস মূলত মাংস উৎপাদনের জন্য পালন করা হয়। পেকিন হাঁস দেখতে আকর্ষণীয় এবং অত্যন্ত দ্রুত বর্ধনশীল। সঠিক পরিচর্যা এবং সুষম খাবারের মাধ্যমে মাত্র ৩০-৪৫ দিনের মধ্যেই প্রতিটি হাঁস গড়ে ৩-৪ কেজি ওজনের হয়। বর্তমানে তার খামারে রয়েছে এক হাজার পেকিন হাঁস। দেশ জুড়ে এই হাঁসের চাহিদা থাকায় বাজারজাত করছেন অনলাইনের মাধ্যমে ঢাকা, কুমিল্লা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জসহ বিভিন্ন প্রান্তে। দ্রুত বর্ধনশীল হাঁস পালন করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ায় এই হাঁস পালনে অনেকেই আগ্রহী হয়ে উঠছেন। নিজের ভাগ্যের পরিবর্তনের সঙ্গে এলাকার অর্ধশতাধিক গরিব নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছেন। অথচ তিনি একসময় এই খামারের ব্যবসা থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে ছিলেন।

বিজ্ঞাপন

খামারি মীর মোশাররফ হোসেন জানান, ব্যাংক লোন নিয়ে ২০২২ সালে ১০ হাজার ব্রয়লার মুরগির পালন শুরু করেন। এর মধ্যে বার্ড ফ্লু রোগে আক্রান্ত হয়ে তার সব মুরগি মারা যায়। খামারের ব্যবসায় আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ক্ষোভে খামারটি বন্ধ করে ফেলেন। পরে বেসরকারি সংস্থা আরডিআরএস বাংলাদেশের পেকিন হাঁসের একটি সাইনবোর্ড দেখে আবারও উদ্বুদ্ধ হন। এরপর ওই সংস্থার সহায়তায় পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে ১০০ হাঁস দিয়ে শুরু করেন খামারের ব্যবসা। নতুনভাবে আবারও শুরু হয় খামার ব্যবসার পথচলা। পেকিন হাঁসের ব্যবসা করে নিজে আর্থিকভাবে লাভবান হবার পাশাপাশি তিনি এলাকার মানুষেরও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছেন।

বিজ্ঞাপন

নারী শ্রমিক রহিমা বেগম বলেন, সাংসারিক কাজের ফাঁকে ফাঁকে গ্রামের ২৫-৩০ জন মহিলা খামারে কাজ করে বাড়তি আয়ের সুযোগ হয়েছে। প্রতি সপ্তাহে ২-৩ দিন করে কাজ করা যায়। খামারে দিন মুজুরি হিসেবে ৩০০ টাকা এবং চুক্তি ভিত্তিক হাঁস প্রতি ২৫-২৭ টাকা পাওয়া যায়। পেকিন হাঁস পালন শুরু হওয়ায় সংসারের অভাব দূর হয়েছে।

আরডিআরএস বাংলাদেশ কৃষি ইউনিট টিম লিডার বিদ্যুৎ কুমার সাহা বলেন, ‘সমন্বিত কৃষি ইউনিট বিভাগ হতে কুড়িগ্রাম সদর-রাজারহাট উপজেলায় ৭৫ জন খামারিকে আর্থিক স্বাবলম্বীকরণে খামারি সেবা প্রদান করা হয়। এতে করে জেলায় কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবার পাশাপাশি প্রাণিখাতে অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছে। আগামীতে জেলায় খামারির সংখ্যা আরও সম্প্রসারণ করা হবে।

রাজারহাট উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রহমত আলী বলেন, দেশের প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি স্থানীয় বে-সরকারি বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থাও ভূমিকা রেখে চলেছে। খামারিদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করতে কারিগরি সহযোগিতা দিচ্ছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ।

সারাবাংলা/এইচআই

কুড়িগ্রাম পেকিন জাতের হাঁস ভাগ্য বদল

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর