যুক্তরাষ্ট্রে ভয়াবহ টর্নেডোর আঘাতে নিহত ৩৪
১৬ মার্চ ২০২৫ ১০:৩৭ | আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২৫ ১৩:৫০
দক্ষিণ-পূর্ব মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একাধিক ভয়াবহ টর্নেডোর আঘাতে অন্তত ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে শুধু মিসৌরিতেই নিহত হয়েছেন ১২ জন। ঝড়ে বহু বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। কানসাস রাজ্যে ধূলিঝড়ের কারণে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। রোববার (১৬ মার্চ) বিবিসির প্রকাশিত সংবাদের বরাতে এ তথ্য জানা গেছে।
শনিবার (১৫ মার্চ) সন্ধ্যা পর্যন্ত মিশিগান, মিসৌরি ও ইলিনয়সহ পাঁচটি রাজ্যে ১ লাখ ৭০ হাজারের বেশি বাড়িঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ বিভ্রাট পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা পাওয়ার আউটেজ।
দেশটির আবহাওয়া দফতর পূর্ব লুইজিয়ানা, পশ্চিম জর্জিয়া, মধ্য টেনেসি এবং ফ্লোরিডা প্যানহ্যান্ডেল অঞ্চলে আরও টর্নেডোর সতর্কতা জারি করেছে। মিসিসিপির গভর্নর টেট রিভস জানিয়েছেন, সেখানে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে।
এছাড়া, কেন্দ্রীয় মিসিসিপি, পূর্ব লুইজিয়ানা, পশ্চিম টেনেসি, আলাবামা ও আরকানসাসে আকস্মিক বন্যার সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস (এনডব্লিউএস) জানিয়েছে, এসব অঞ্চলের বন্যা প্রাণঘাতী হতে পারে।
শনিবার (১৫ মার্চ) রাতে আলাবামার বিভিন্ন অঞ্চলে একাধিক টর্নেডোর সতর্কতা জারি করা হয়। এনডব্লিউএস পরিস্থিতিকে অত্যন্ত বিপজ্জনক বলে উল্লেখ করে জানিয়েছে, সেখানে বহু শক্তিশালী ও দীর্ঘস্থায়ী টর্নেডো দেখা যেতে পারে। সংস্থাটি জনগণকে দ্রুত নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
মিসৌরির গভর্নর মাইক কিহো জানিয়েছেন, ‘টর্নেডো ও ঝড়ের আঘাতে রাজ্য বিধ্বস্ত হয়েছে, বহু বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে গেছে এবং অনেক প্রাণহানি ঘটেছে।’
রাজ্যের জরুরি ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ১৯টি টর্নেডো ২৫টি অঞ্চলে আঘাত হেনেছে।
আরকানসাসে ৩ জন নিহত এবং ২৯ জন আহত হয়েছে, যার ফলে গভর্নর সারা হাকাবি স্যান্ডার্স রাজ্যে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। জর্জিয়ার গভর্নর ব্রায়ান কেম্প এবং ওকলাহোমার গভর্নর কেভিন স্টিট তাদের রাজ্যেও জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন।
শুক্রবার (১৪ মার্চ) রাতে টেক্সাসে এক ধূলিঝড়ের কারণে ৩৮টি গাড়ির সংঘর্ষ হয়, এতে ৩ জন নিহত হন। রাজ্যের জননিরাপত্তা বিভাগ জানায়, ধূলিঝড়ের কারণে এত ঘন ধোঁয়া তৈরি হয়েছিল যে, দুর্ঘটনার প্রকৃত অবস্থা বোঝা যাচ্ছিল না।
বিধ্বংসী ঝড়ের ফলে বেশ কয়েকটি কেন্দ্রীয় রাজ্যে ১০০টিরও বেশি দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। ওকলাহোমার ‘৮৪০ রোড ফায়ার’ নামে একটি দাবানল ইতোমধ্যে ২৭ হাজার ৫০০ একর এলাকা গ্রাস করেছে এবং এখনো নিয়ন্ত্রণের বাইরে রয়েছে। ওকলাহোমা ফরেস্ট্রি সার্ভিস সেখানে রেড ফ্ল্যাগ সতর্কতা জারি করেছে, যা চরম আগুনের ঝুঁকি নির্দেশ করে।
উল্লেখ্য, টর্নেডো তখনই গঠিত হয় যখন উষ্ণ ও আর্দ্র বাতাস উপরের ঠাণ্ডা বাতাসের সাথে মিশে বজ্রঘটিত মেঘ তৈরি করে। বাতাসের দিক পরিবর্তনের ফলে বায়ু ঘূর্ণায়মান অবস্থায় উপরের দিকে উঠে যায় এবং শক্তিশালী টর্নেডো সৃষ্টি হয়। বৈজ্ঞানিকদের তথ্যমতে, মে থেকে জুন পর্যন্ত সময়কে টর্নেডোর প্রধান মৌসুম ধরা হলেও, এটি বছরের যেকোনো সময় ঘটতে পারে।
সারাবাংলা/এনজে