কমিশনের সক্ষমতা বাড়াতে ওআইসিভুক্ত দেশগুলোর সহায়তা চেয়েছে ইসি
১৭ মার্চ ২০২৫ ১৫:৩০ | আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২৫ ১৭:২৫
ঢাকা: আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটের আওতায় আনা এবং সংস্থার প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়াতে ওআইসিভুক্ত দেশগুলোর সহায়তা চেয়েছে নির্বাচন কমিশন।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পথে প্রস্তুতিমূলক কাযক্রম তুলে ধরার পাশাপাশি ওআইসিভুক্ত দেশগুলোর কাছে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোট দেওয়ার বিষয়ে সহযোগিতা ও অভিজ্ঞতা বিনিময় করেছে নির্বাচন কমিশন।
সোমবার (১৭ মার্চ) নির্বাচন ভবনে ওআইসিভুক্ত ১০টি দেশের মিশন প্রধান ও প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে এ সহায়তা চাওয়া হয়েছে। বৈঠকে ইসি’র পক্ষ থেকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পথে প্রস্তুতিমূলক কাযক্রম তুলে ধরা হয়।
বৈঠক শেষে ওআইসি প্রতিনিধিদের পক্ষে বাংলাদেশস্থ মালয়েশিয়ান হাই কমিশনার মোহাম্মদ সুহাদা ওথমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের একটি বড় সংখ্যক প্রবাসী বসবাস করছেন। এ সরকারের অধীনে নির্বাচনি সংস্কারসহ সব সংস্কার উদ্যোগকে সমর্থন করছে মালয়েশিয়া। আমরা অভিজ্ঞতা শেয়ারে আগ্রহী, বিশেষ করে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য বিদেশি কর্মীদের বিষয়ে।’
নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ সাংবাদিকদের জানান, সুষ্ঠু নির্বাচন ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের লক্ষ্যে উন্নয়ন সহযোগী দেশ ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক ও মত বিনিময় করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় দেশে ওআইসিভূক্ত দেশের মিশন প্রধানদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। বৈঠকে সক্ষমতা বাড়ানো, অভিজ্ঞতা ও পারস্পরিক মত বিনিময়ের বিষয়ে প্রতিনিধিদের সহায়তা চেয়েছে কমিশন।
তিনি বলেন, ‘তারা আজ এসেছিলেন, আমাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। আমাদের বর্তমান কাযক্রম, গণতান্ত্রিক উত্তরণ ও আগামী জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যে সব কাজ হাতে নিয়েছি সেসব অবহিত করেছি। পাশাপাশি বিভিন্ন দেশে আমাদের প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটের ব্যাপারে তাদের সহযোগিতা আশা করেছি।’
প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য যে ভোটিং পদ্ধতিই ভবিষ্যতে নির্ধারণ করুক না কেন তাদের অভিজ্ঞতা জানতে চেয়েছে ইসি।
নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘প্রবাসী ভোট সংক্রান্ত তারা অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন। বিশেষ করে কোনো কোনো রাষ্ট্রদূত সহযোগিতার বিষয়ে অবজারভার টিম পাঠানোর জন্য তাদের আগ্রহ দেখিয়েছেন। আমরা তাদের স্বাগত জানিয়েছি এবং যথাসময়ে এগুলো ফরমালাইজ করবো।’
তিনি জানান, ইসির বিভিন্ন ধরনের প্রস্তুতি, পরিকল্পনা প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। আগামী নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠাতে সবাই আগ্রহী হবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এ সময় প্রবাসীদের ভোটে প্রক্সি ভোটিং নিয়ে অনেকের সংশয়ের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, ‘তিন ধরনের মেথডে আমরা কোনোটাকেই প্রায়োরিটিতে আনি নি। তিনটি মেথডকে (অনলাইন, পোস্টাল ব্যালট ও প্রক্সি ভোটিং) শর্ট লিস্ট করেছি।’
পোস্টাল ও অনলাইন বিষয়ে তিনি জানান, পোস্টাল ব্যালটটা বর্তমানে অকার্যকরী। অনলাইন পদ্ধতি নিয়ে আজও তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। মিশরের রাষ্ট্রদূত জানালেন তাদের অভিজ্ঞতা ভালো নয়, তারা চালু করে পরে অনলাইন ভোট বন্ধ করে দিয়েছে। পাকিস্তানের প্রতিনিধি বলেছেন, তাদের প্রাথমিক অভিজ্ঞতা ভালো, পূর্ণাঙ্গভাবে অনলাইনে চালুর অবস্থানে নেই তরা।
প্রক্সি ভোটিং এর বিষয়ে কয়েকটি দেশের অভিজ্ঞতা এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘আমাদের দেশে শারীরিক প্রতিবন্ধীদের জন্য আরেকজনের সহায়তা নিয়ে ভোট দিয়ে থাকেন। জমি জমাও পাওয়ার অব এটর্নির মাধ্যমে করা হয়ে থাকে। আমাদের এখন মন্দের ভালো খুঁজে বের করতে হবে। আমরা যদি সত্যিকার অর্থে আমাদের প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোট দেওয়ার সুযোগ দিতে চাই তাহলে কোনো না কোনো একটা অপশন বা সব অপশনের কম্বিনেশন আমাদের নিতে হবে।
’আর বড় পরিসরে আমাদের প্রবাসীদের ভোট দেওয়াতে চাই তাহলে প্রক্সি ভোটিং ছাড়া আর কোনো বিকল্প আছে বলে মনে হয় না। কারণ, বাকি যে দুটো বিকল্প রয়েছে এগুলো পাইলটিং পযায়ে যাওয়া যাওবে, লার্জ স্কেলে ডেপ্লয় হয়ত করা যাবে না।’
তিনি জানান, আগামী এপ্রিলের শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়, প্রতিষ্ঠান ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক করার পর চূড়ান্ত পদ্ধতি নিয়ে সিদ্ধান্ত জানাবে ইসি।
সারাবাংলা/এনএল/এনজে