গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের আলোচনা সভা
দেশে স্থিতিশীলতা আনতে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট পথনকশা ঘোষণার আহ্বান
১৭ মার্চ ২০২৫ ১৯:৫২ | আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২৫ ২১:৩৩
ঢাকা: দেশে স্থিতিশীলতা আনতে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট পথনকশা ঘোষণা করার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।
তারা বলেছেন, গণঅভ্যুত্থানের পর ৭ মাস অতিবাহিত হলেও দেশে স্থিতিশীলতা আসেনি। বরং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিসহ নানা কারণে জনমনে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বাড়ছে। গণঅভ্যুত্থানের অর্জন এখন বিসর্জনের ঝুঁকিতে পড়েছে। এই সংকট উত্তরণে প্রয়োজনীয় সংস্কার ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে চলতি বছরের মধ্যে নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।
সোমবার (১৭ মার্চ) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য আয়োজিত ‘ফ্যাসিবাদের চির অবসান ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণে রাজনৈতিক দলের করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা এসব কথা বলেন। বাম ঐক্যের সমন্বয়ক ও সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের (এমএল) সাধারণ সম্পাদক হারুন চৌধুরী, সমাজতান্ত্রিক মজদুর পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. সামছুল আলম, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দলের (পিডিপি) মহাসচিব হারুন আল রশিদ খান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার স্বল্প মেয়াদী, মধ্য মেয়াদী, দীর্ঘ মেয়াদী এবং এরপরও যদি কিছু থাকে সেই সকল সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে। সরকার প্রতিনিয়ত তাদের কাজের পরিধি বড় করছে। ফলে আগামীতে নির্বাচিত সরকারের কোন কাজ থাকবে কি না- তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
তিনি বলেন, যে কাজগুলো নির্বাচিত সরকারের ও সংসদের করার কথা, সেই কাজগুলো কিছু লোকের দিয়ে করা ঠিক না। কিছু বিষয় সংসদের আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। সেটা কারো ইচ্ছামতো, নীল-নকশা মতো করলে, তা জনগণ মানবে না। ভোটাধিকার বঞ্চিত দেশের জনগণ এখন তাদের ভোটে প্রতিনিধি নির্বাচিত করে সংসদ ও সরকার গঠন করতে চায়। জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল সরকার গঠনে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।
অন্তর্বতী সরকারকে তাদের রাজনৈতিক এজেন্ডা ছোট করে আনার আহ্বান জানান বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। তিনি বলেন, আপনারা নতুন কোন বিতর্ক তৈরি করবেন না। বিতর্কে জড়ালে এই সরকারের অধীনে কেউ নির্বাচনে যাবে কি না- সেটা রাজনৈতিক দলগুলোকে নতুন করে ভাবতে হবে। ইতোমধ্যে দুটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদের পর আরো এক মাস অতিবাহিত হয়েছে। তাই আর বিলম্ব না করে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসে সংস্কারের বিষয়গুলো চিহ্নিত করে তা দ্রুত বাস্তবায়নের মাধ্যমে নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টির উদ্যোগ নিন। সংস্কার ও বিচারের পাশাপাশি চলতি বছরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানে দৃশ্যমান উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে আবুল কালাম আজাদ বলেন, ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা ছাড়া ফ্যাসিবাদ নির্মূল করা যাবে না। দেশের গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় আমাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে। যারা গণতন্ত্রের জন্য জীবন দিয়েছেন, তাদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করা যাবে না। জনগণ দীর্ঘদিন ভোট দিতে পারেনি। তাই দ্রুত ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিয়ে নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্ত করতে হবে। এ জন্য ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে যারা লড়াই করছে, তাদের একত্রিত হতে হবে।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/আরএস