বেনাপোল: পবিত্র ঈদুল ফিতর ও সাপ্তাহিক ছুটির কারণে টানা আট দিন দেশের সবচেয়ে বড় বেনাপোল স্থলবন্দর ও কাস্টমসের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। এ সময় আমদানি-রফতানি বন্ধ থাকবে এ পথে। এর ফলে স্থবির হয়ে পড়বে বেনাপোল-পেট্রাপোল স্থলবন্দরের কার্যক্রম। তবে ৯ দিনের ছুটিতে এ চেকপোস্ট দিয়ে দুই দেশের মধ্যে পাসপোর্টধারী যাত্রী চলাচল স্বাভাবিক থাকবে। আগামী (৬ এপ্রিল) রোববার থেকে যথারীতি কাস্টমস ও বন্দরের কার্যক্রম চলবে।
এদিকে, ঈদের দিন ছাড়া প্রতিদিন খোলা থাকবে দেশের সব কাস্টমস হাউস ও শুল্ক স্টেশন। আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে ২৮ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি ও সাপ্তাহিক ছুটির দিনে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম সীমিত আকারে চলমান রাখার জন্য এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
রোববার (২৩ মার্চ) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) দ্বিতীয় সচিব (কাস্টমস নীতি) মুকিতুল ইসলাম এক পত্রে এ তথ্য জানান। পত্রে টানা ৯ দিন কাস্টমস ও বন্দর বন্ধ থাকলেও (ঈদের দিন ব্যতীত) সরকারি ও সাপ্তাহিক ছুটির দিন আমদানি-রফতানি সংক্রান্ত কার্যক্রম সীমিত আকারে চলমান রাখার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। এখানে বন্দরের কর্মচারী ও বন্দর ব্যবহারকারীরা সবাই ছুটিতে চলে যাওয়ায় সব কিছু বন্ধ থাকে।
বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক (ট্র্যাফিক) মামুন কবীর তরফদার জানান, ঈদের ছুটির মধ্যে বন্দরে যাতে কোনো ধরনের নাশকতামূলক বা অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তার জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। বন্দরের নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী ও আনসার সদস্যরা দিনে রাতে বন্দর এলাকায় টহল দিবে। পাশাপাশি বেনাপোল পোর্ট থানা কর্তৃপক্ষকেও বিষয়টি বলা হয়েছে।
বেনাপোলের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক লতা বলেন, আগামী ২৭ মার্চ (বৃহস্পতিবার) বিকেল থেকে বন্ধ হয়ে যাবে বেনাপোল-পেট্রাপোলের মধ্যে আমদানি-রফতানি। কাস্টম ও বন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিজ নিজ বাড়িতে ঈদ করতে রওয়ানা দিবেন। অনেক আমদানিকারক ঈদের ছুটিতে পরিবার পরিজন নিয়ে দেশের বাড়িতে যাবেন। তারা ঢাকা ফিরে না আসা পর্যন্ত কোনো পণ্যও খালাস নিবেন না। আগামী ৬ এপ্রিল (রোববার) থেকে পুনরায় বন্দর ও কাস্টমসের কার্যক্রম সচল হবে।
বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, ঈদ ও সাপ্তাহিক ছুটির কারণে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি বন্ধ থাকলেও স্বাভাবিক থাকবে দুই দেশের পাসপোর্টধারী যাত্রীদের যাতায়াত। তবে আগের বছরগুলোতে ঈদের ছুটিতে হাজার হাজার পাসপোর্ট যাত্রী ভারতে গেলেও এ বছর কোনো চাপ নেই।
দেশের অর্থনীতিতে বেনাপোল বন্দরের ভূমিকা অপরিসীম। ভারত থেকে আমদানি পণ্যের ৯০ ভাগই আসে বেনাপোল বন্দর দিয়ে। মাত্র ৭ দিনের এলসিতে পণ্য আনা যায় বেনাপোল বন্দর দিয়ে। বেনাপোল চেকপোস্ট থেকে কলকাতার দূরত্ব মাত্র ৮১ কিলোমিটার। আড়াই ঘণ্টায় চলে আসা যায় বেনাপোল চেকপোস্টে। সে কারণে আমদানিকারকরা পণ্য আমদানির জন্য বেনাপোল বন্দর ব্যবহার করে থাকেন। লম্বা ছুটিতে আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে পড়বে বিরূপ প্রভাব। এমনিতেই বেনাপোল বন্দরে পণ্যজট লেগেই আছে। লম্বা ছুটির কারণে অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠানে কাঁচামালের সংকট দেখা দিতে পারে। সীমান্তের দু‘পাশের ট্রাকজট আরও বাড়বে বলে মনে করছেন বন্দর সংশ্লিষ্টরা।