‘৫০ বছরেও বাংলাদেশে ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা হয়নি’
২৫ মার্চ ২০২৫ ১৪:২৯ | আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২৫ ১৪:৩৩
ঢাকা: অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের উদ্দেশ্য ছিল একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা, যেখানে আইনের শাসন থাকবে, মানুষের মৌলিক মানবাধিকার নিশ্চিত হবে ও একটি বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠিত হবে। কিন্তু স্বাধীন বাংলাদেশে এখনো ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা যায়নি। দীর্ঘদিন ধরে এদেশের মানুষকে তাদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। দুর্নীতি, লুটপাটতন্ত্র ও গুম-খুনের রাজত্ব চালিয়ে দেশে একটি ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা কায়েম করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে সাতজন বিশিষ্ট ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের কাছে স্বাধীনতা পুরস্কার তুলে দেওয়ার অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘যাদের আমরা সম্মান দিতে চাই যথাসময়ে যেন দেই। মরণোত্তর পুরস্কার দেওয়ার চাইতে জীবদ্দশায় পুরস্কারটা পেলে দেশ, পরিবার ও ব্যক্তির নিজের জন্য যে আনন্দ তা মরণোত্তর পুরস্কারে পাওয়া যায় না।’
তিনি বলেন, ‘যাকে আমরা সম্মান দেখাচ্ছি তিনি আমাদের সঙ্গে নেই। আমরা যেন আগামীতে নিয়ম করতে পারি যাদের মরণোত্তর দেওয়ার পালা তাদের পালা শেষ করে দিয়ে এরপর থেকে জীবিত যারা আছেন তাদের আমরা পুরস্কার দেই, তাদের প্রতি সম্মানটা আমরা দেই।’
অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান বলেন, ‘কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য এই বছর সরকার ছয় জন বিশিষ্ট নাগরিককে মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করেছে। তারা সবাই বাংলার সূর্যসন্তান।’
পুরস্কারপ্রাপ্তদের স্মরণ করে প্রফেসর ইউনূস বলেন, ‘অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম একজন বিশ্ববরেণ্য বিজ্ঞানী। পৃথিবীর নামকরা সব বিজ্ঞানীরা তাকে চেনেন। তিনি সবসময় প্রকৃতি ও মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত ছিলেন। আল মাহমুদ আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম উজ্জ্বল কবি। তার কবিতা বহু কবি, লেখক, পাঠককে অনুপ্রাণিত করেছে। বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘ব্র্যাক’-এর প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদ। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় ও এর পরবর্তী সময়ে তিনি বাংলাদেশ গড়ার কাজে নিয়োজিত ছিলেন। লন্ডনের ফ্ল্যাট বিক্রির টাকা দিয়ে তিনি ব্র্যাক গড়েছিলেন। প্রান্তিক গরিব মানুষের জীবনমান উন্নয়নসহ বহুমুখী কাজে ব্র্যাক এখন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।’
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা আমাদের জাতিকে এক মহান উচ্চতায় নিয়ে গেছে। পুরস্কার দিয়ে আমরা শুধু তাদের সম্মানিত করছি না, আমরা বরং জাতি হিসেবে নিজেদের সম্মান তাদের মাধ্যমে পাচ্ছি। তারা প্রত্যেকেই আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বহুল পরিচিত, তারা সারা জাতির জন্য অনেক কিছু দিয়ে গেছেন, তাদের কথা আমরা জীবদ্দশায় স্মরণ করতে না পারলে আমরা একটা অকৃতজ্ঞ জাতি হিসেবে চিহ্নিত হব।’
সারাবাংলা/ইউজে/এমপি
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রধান উপদেষ্টা স্বাধীনতা পুরস্কার স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৪