প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে নির্বাচনি রোড ম্যাপ না থাকায় হতাশ হয়েছি: ফখরুল
২৬ মার্চ ২০২৫ ১২:০১ | আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২৫ ১৪:২২
বুধবার মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বক্তব্য রাখেন
ঢাকা: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গতকাল (মঙ্গলবার) প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে নির্বাচনি রোড ম্যাপ না থাকায় আমরা হতাশ হয়েছি।
তিনি বলেন, ‘‘আমি অত্যন্ত অবাক হয়েছি গতকাল অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান যে বক্তব্য রেখেছেন, সেই বক্তব্যে তিনি নির্বাচনি রোড ম্যাপ এর কথা বলেন নি। ডিসেম্বর থেকে জুন ৬ মাস, এতে কোন রোডম্যাপ দেয়া হয়নি। আমরা বারবার বলে আসছি যে, স্পষ্ট রোড ম্যাপ এবং দ্রুত নির্বাচন দিতে। তা না হলে যে সংকটগুলো সৃষ্টি হচ্ছে, এই সংকটগুলো মোকাবেলা করা সম্ভব হবে না। বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নির্বাচনের কথা বলছে না। বিএনপি জাতির স্বার্থে, জাতিকে রক্ষা করার স্বার্থে, সার্বভৌমত্ব রক্ষার্থে নির্বাচনের কথা বলছে। নির্বাচিত পার্লামেন্ট এবং সরকার হতে হবে।’’
বুধবার (২৬ মার্চ) মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি শহিদ জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘আমরা হতাশ হয়েছি তার বক্তব্যের মধ্যে স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানের নাম একবারও উচ্চারণ করেন নি। আমরা আবারো চাই না যে, আওয়ামী লীগ একবার ইতিহাস বিকৃত করেছে, এখন আবার সেই ইতিহাস বিকৃত হোক। প্রকৃত সত্যকে বিতাড়িত করে জনগণের যে আকাঙ্ক্ষা, একটি গণতান্ত্রিক সরকার। এই গণতান্ত্রিক সরকারের যত দ্রুত ফিরে যাওয়া যাবে, আমাদের সমস্যাগুলো ততই সমাধান হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘আমরা আশা করব বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, ন্যূনতম কিছু সংস্কার করে যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের ঘোষণা দিবেন।”
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান শুধুমাত্র স্বাধীনতার ঘোষণাই দেননি, তিনি মুক্তিযুদ্ধকে সমন্বয় করে দীর্ঘ নয় মাস লড়াই করেছেন লড়াই করে স্বাধীনতা অর্জন করেছেন। এই স্বাধীনতার জন্য আমাদের লক্ষ লক্ষ মানুষ প্রাণ দিয়েছে, আমাদের অসংখ্য মা-বোন সম্ভ্রম হারিয়েছে, প্রতিটি মানুষ তাদের গৃহ হারিয়েছে এবং অসংখ্য ত্যাগ তিতিক্ষার বিনিময়ে আমরা এ স্বাধীনতা অর্জন করেছি। আজ থেকে ৫৪ বছর আগে আমরা স্বাধীন হয়েছি। দুর্ভাগ্যের কথা, যে লক্ষ্য ও আশা-আকাঙ্ক্ষাকে সামনে নিয়ে, যে চেতনাকে লালন করে আমরা যুদ্ধ করেছিলাম- একটি স্বাধীন সার্বভৌমত্ব গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ, সেই বাংলাদেশে আমরা পুরোপুরি স্বাধীনতা অর্জন করতে পারিনি। এর মধ্যে অনেক চড়াই উতরাই গিয়েছে। মাঝখানে জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে আমরা গণতন্ত্র ফিরে পেয়েছিলাম। পরবর্তীতে ১৯৯১ সালে আবার গণতান্ত্রিক অবস্থায় ফিরে এসেছিলাম।’’
তিনি বলেন, ‘‘একটা ফ্যাসিস্ট সরকার দীর্ঘ ১৫ বছর এই জাতির উপরে তারা নির্যাতিত করেছে হত্যা করেছে, গুম খুন করেছে।এসব করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চেয়েছে। জুলাই আগস্ট ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা আবার গণতন্ত্রকে ফিরে পাওয়ার সুযোগ পেয়েছি । ’’
তিনি আরও বলেন, আজকের এই দিনে, আমাদের দলের পক্ষ থেকে আমাদের চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে গোটা জাতিকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। অভিনন্দন জানাচ্ছি এবং প্রত্যাশা করছি, অতি শীঘ্রই আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত গণতন্ত্র ফিরে পাবো।
সারাবাংলা/এফএন/আরএস