ব্যাংকক: প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস পৃথিবীকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে তরুণ প্রজন্মকে ‘থ্রি-জিরো ব্যক্তি’ হিসেবে নিজেদের গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে বিমসটেক ইয়ং জেনারেশন ফোরামে বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি এ আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা কী নোট স্পিকার ছিলেন।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘বিশ্ব এখন একটি আত্মবিধ্বংসী সভ্যতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। কারণ, কার্বন নিঃসরণ, বর্জ্য উৎপাদন এবং সম্পদ পুঞ্জিভূতকরণের পুরনো অর্থনৈতিক মডেল অনুসরণ করেই চলেছে।’

বিমসটেক ইয়ং জেনারেশন ফোরামে বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত
তিনি বলেন, “যদি আমরা টিকে থাকতে চাই, তাহলে আমাদের নতুন ‘থ্রি-জিরো’ সভ্যতার দিকে যেতে হবে, শূন্য কার্বন নিঃসরণ, শূন্য বর্জ্য এবং শূন্য সম্পদ কেন্দ্রিকতার দিকে যেতে হবে।’
প্রকৃতির সুরক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনার সম্পদ যদি ভাগাভাগি না করেন, তাহলে সমাজে টিকে থাকা সম্ভব নয়।’
মানুষ জন্মগ্রহণ করে অন্যের অধীনে কাজ করার জন্য নয় বরং উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য— এই কথা উল্লেখ করে তিনি তরুণদের উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে তৈরির পরামর্শ দেন।
বর্তমান তরুণ প্রজন্মকে বিশ্বের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী প্রজন্ম হিসেবে অভিহিত করে শান্তিতে নোবেল জয়ী অধ্যাপক ইউনুস বলেন, “জীবন হলো সংরক্ষণ ও সুরক্ষার জন্য। তাই ‘থ্রি-জিরো’ সভ্যতা গড়ে তুলতে হবে।”

বিমসটেক ইয়ং জেনারেশন ফোরামে বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত
‘থ্রি-জিরো ক্লাব’র গুরুত্ব সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘পাঁচজন একসঙ্গে হলে তারা একটি থ্রি-জিরো ক্লাব গঠন করতে পারে। যেখানে তারা ব্যক্তি পর্যায়ে কার্বন নিঃসরণ, বর্জ্য উৎপাদন এবং সম্পদ কেন্দ্রিকতা থেকে মুক্ত থাকবে এবং নিজেরাও থ্রি-জিরো ব্যক্তি হয়ে উঠবে।’
তরুণদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনি একদিনে পৃথিবী বদলে দিতে পারবেন না। যদি পরিবর্তন আনতে চান, তাহলে নিজের গ্রাম থেকেই শুরু করুন’।
উল্লেখ্য, ২ থেকে ৪ এপ্রিল ব্যাংককে বঙ্গোপসাগরীয় দেশগুলোর আঞ্চলিক সহযোগিতা জোটের (বিমসটেক) শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সম্মেলনে বিমসটেকভুক্ত বিভিন্ন দেশের সরকার প্রধানদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন প্রধান উপদেষ্টা।