‘দেশকে অস্থিতিশীল করতে পরাজিত ফ্যাসিস্টরা গভীর ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে’
২২ এপ্রিল ২০২৫ ০০:০৩ | আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২৫ ০০:০৬
খুলনা: পতিত আওয়ামী লীগের কেউ দেশে সন্ত্রাসী কার্যক্রম বা কোনো ধরনের নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করলে তা কঠোরভাবে প্রতিহত করার আহ্বান জানিয়েছেন খুলনা বিএনপির নেতারা।
বিএনপির নেতারা বলেন, স্বৈরাচারী হাসিনা পালিয়ে গিয়েও থেমে নেই। দেশে নৈরাজ্য, অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করার গভীর ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে পরাজিত ফ্যাসিস্টরা। স্বৈরাচারের দোসররা সেই ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের অপচেষ্টা করছে। ছাত্র-জনতার নজিরবিহীন গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার মাত্র আটমাসের মাথায় আওয়ামী লীগের সক্রিয় হচ্ছে। রাজপথে প্রকাশ্যে ঝটিকা মিছিল করছে। ঝটিকা মিছিলের নেপথ্যে কারা মদদ দিচ্ছে?
সোমবার (২১ এপ্রিল) বিকেল ৪টায় কেডি ঘোষ রোডস্থ বিএনপি কার্যালয়ের সামনে পতিত স্বৈরাচার খুনি হাসিনার দোসরদের নৈরাজ্য, জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি এবং প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার প্রতিবাদে খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপির বিক্ষোভ পূর্ব সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন।
তারা আরও বলেন, গণঅভ্যুত্থানে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে শেখ হাসিনা। তার পালিয়ে যাওয়ার মধ্যদিয়ে দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছরের স্বৈরশাসকের অবসান ঘটেছে। কিন্তু প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে হাজারো শহিদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে কিভাবে আওয়ামী লীগ রাজপথে মিছিল করলো খুলনাবাসি জানতে চায়। ফ্যাসিবাদ সরকারের বিদায় হলেও দেশকে অস্থিতিশীল করতে পরাজিত ফ্যাসিবাদরা গভীর ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে আর এদের মদদ দিচ্ছে দেশের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা দোসররা। অবিলম্বে দোসরদের খুঁজে বের করতে হবে।
নেতারা বলেন, প্রশাসনের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা আওয়ামী দোসরদের চিহ্নিত করে তাদের মুখোশ প্রকাশ্যে উন্মোচন করতে হবে। ফের যদি আওয়ামী সন্ত্রাসীরা কোনো ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম বা কোনো ধরনের অরাজকতা পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করলে তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না; কঠোর হস্তে জবাব দিতে হবে। দীর্ঘ ১৫ বছর এ দেশের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে যে সফলতা পেয়েছি তার মর্যাদা ধরে রাখতে হবে।
বক্তারা আরও বলেন, নির্বাচন ছাড়া কোনো সরকার দীর্ঘদিন থাকলে ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচার জন্ম নেয়। বিএনপি জনগণের গণতান্ত্রিক ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন-সংগ্রাম করে আসছে। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার সাহসী ও ত্যাগী ভূমিকার কারণে দেশের মানুষ আজ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে। আমরা যে নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি তা হারিয়ে যেতে দিবো না। যেখানেই পতিত সরকারের দোসররা সংঘবদ্ধ হবে সেখানেই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
অবিলম্বে মিছিলকারীদের গ্রেফতার করার দাবি জানিয়ে বলেন, খুলনায় আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অনেক মামলা হয়েছে কিন্তু অজ্ঞাত কারণে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছে না।
কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না পুলিশ প্রশাসনের প্রতি প্রশ্ন রেখে তারা বলেন, বিএনপি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, বিএনপিকে কঠোর হতে বাধ্য করবেন না। বিএনপি ঘুরে দাঁড়ালে যদি কোনো অনাকাঙ্খিত পরিস্থিত সৃষ্টি হয় তার জন্য পুলিশ প্রশাসনই দায়ী থাকবেন। খুলনার মাটিতে কোনো আওয়ামী লীগের কোনো ফ্যাসিস্টের জায়গা হবে না হবে না।
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও মহানগর বিএনপির সভাপতি অ্যাড. শফিকুল আলম মনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিন, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাড. মোমরেজুল ইসলাম, খান জুলফিকার আলী জুলু, মোল্লা খাইরুল ইসলাম, শেখ তৈয়েবুর রহমান, গাজী তফসির আহমেদ, জিএম কামরুজ্জামান টুকু, মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ সাদী, হাসানুর রশীদ চৌধুরী মিরাজ ও মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাড. নুরুল হাসান রুবা প্রমুখ।
পরে দলীয় কার্যালয় থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে কেডি ঘোষ রোড, পিসি রায় রোড, যশোর রোড হয়ে ফেরিঘাট মোড় ঘুরে স্যার ইকবাল রোড় দিয়ে দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় নেতাকর্মীরা শেখ হাসিনার বিচারের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
সারাবাংলা/এইচআই