চেয়ারম্যান-কমিশনারদের লাঞ্ছিত
বিএসইসির ২১ কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত
২৯ এপ্রিল ২০২৫ ২৩:৫৬ | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৫ ০০:১৯
ঢাকা: পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যানসহ তিন কমিশনারকে বোর্ডরুমে আটকে রেখে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে ২১ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বিএসইসির কমিশন সভা থেকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কমিশনের একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র সারাবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সাময়িক বরখাস্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন- বিএসইসি’র নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম (৫৪), পরিচালক আবু রায়হান মো. মোহতাছিন বিল্লা (৫১), অতিরিক্ত পরিচালক নজরুল ইসলাম (৫০), যুগ্মপরিচালক রাশেদুল ইসলাম (৪৮), উপপরিচালক বনী ইয়ামিন (৪৫), উপপরিচালক আল ইসলাম (৩৮), উপপরিচালক শহিদুল ইসলাম (৪২), উপপরিচালক তৌহিদুল ইসলাম (৩২), সহকারী পরিচালক জনি হোসেন (৩১), সহকারী পরিচালক রায়হান কবীর (৩০), সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন প্রমুখ।
এছাড়াও, সাময়িক বরখাস্তের তালিকায় রয়েছেন- সহকারী পরিচালক আব্দুল বাতেন (৩২), লাইব্রেরিয়ান মো. সেলিম রেজা বাপ্পী(৩১) এবং ব্যক্তিগত কর্মকর্তা আবু ইউসুফও (২৯)।
যেসব অভিযোগের কারণে উল্লিখিত কর্মকর্তাদের সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে- কমিশনের ফটকে জোর করে তালা দিয়ে সিসি ক্যামেরা ও ওয়াই-ফাই, কমিশনের লিফট বন্ধ করে দেওয়া; বৈদ্যুতিক সংযোগ বন্ধ করে মারাত্মক অরাজকতা ও ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে গুরুতর জখমের প্রচেষ্টা করা।
প্রসঙ্গত, গত ৫ মার্চ সকালে বিসইসির এসব কর্মকর্তারা উল্লিখিত অরাজকতা করায় তাদের সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্ত করা ২১ জনের মধ্যে ১৬ জনের বিরুদ্ধ গত ৬ মার্চ রাতে বিএসইসি চেয়ারম্যানের গানম্যান মো. আশিকুর রহমান বাদী হয়ে শেরে বাংলা নগর থানায় মামলাটি করেন। মামলার ১৬ আসামির মধ্যে একজন নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানকে এরই মধ্যে বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়া হয়েছে। আরেকজন নির্বাহী পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম স্বেচ্ছায় অবসরে চলে গেছেন। বাকি ১৪ আসামিকে সাময়িক বরখাস্তের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন
- সিসি ক্যামেরা-ফ্যান-এসি বন্ধ করে কমিশনারদের লাঞ্ছিত করেন কর্মকর্তারা
- বিএসইসি চেয়ারম্যানকে অবরদ্ধ করে অরাজকতা, ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা
- বিএসইসি’র কর্মকর্তাদের উচ্ছৃঙ্খল আচরণ প্রচলিত আইন বিরোধী ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ
মামলার আসামি করা হয়নি কিন্তু চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের লাঞ্ছিত করার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে নতুন করে। এমন সাতজনকে শনাক্ত করে তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এদের মধ্যে পাঁচ জনের নাম পাওয়া গেছে। এদের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে শনাক্ত করা হয়েছে। সেই পাঁচজন হলেন- পরিচালক মাহমুদুল হাসান, অতিরিক্ত পরিচালক মিরাজুল মুন্না, সহকারী পরিচালক আমিনুল হক, সহকারী পরিচালক সমীর ঘোষ ও ব্যক্তিগত কর্মকর্তা সেলিম রেজা।
এর আগে, গত ৫ মার্চ বিএসইসি চেয়ারম্যান,কমিশনারদের অবরুদ্ধ করে অরাজকতা তৈরি করেন কমিশনের কর্মকর্তা–কর্মচারীরা। তারা পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী কমিশনের মূল ফটকে তালা দেয়, সিসি ক্যামেরা, ওয়াই-ফাই, কমিশনের লিফট বন্ধ করে দেয় এবং বৈদ্যুতিক সংযোগ বন্ধ করে মারাত্মক অরাজকতা ও ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে গুরুতর জখমের প্রচেষ্টা করে।
বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে এবং কমিশনার মো. মহসিন চৌধুরী, মো. আলী আকবর ও ফারজানা লালারুখের উপস্থিতিতে কমিশনের নির্ধারিত সভাকক্ষে সভা চলাকালে অভিযুক্তরাসহ আরও কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী কমিশনের সভাকক্ষে জোরপূর্বক ও অনধিকার প্রবেশের মাধ্যমে কমিশনের চেয়ারম্যান ও কমিশনারগণকে অবরুদ্ধ করে বলে তাদের বিরুদ্ধে মামলায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, বর্তমানে বিএসইসিতে ২৬০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। এদের মধ্যে ২১ জনকে বরখাস্ত করা হলো। বরখাস্তকারীদের বিরুদ্ধে পর্যায়ক্রমে আরও কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে।
সারাবাংলা/জিএস/পিটিএম