Wednesday 30 Apr 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পোশাক খাতে করপোরেট কর বাড়ছে, শঙ্কায় উদ্যোক্তারা

এমদাদুল হক তুহিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
৩০ এপ্রিল ২০২৫ ২৩:০৫

বাংলাদেশের একটি পোশাক কারখানা। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: দেশের পোশাক খাতে করের বোঝা আরও বাড়ছে। খাতটিতে করপোরেট কর ৮ শতাংশ বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তৈরি পোশাক খাতে বর্তমানে করপোরেট কর ১০ ও ১২ শতাংশ থাকলেও ১৮ থেকে ২০ শতাংশ করার পরিকল্পনা করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে এমন প্রস্তাব থাকতে পারে। আর খাতটিতে করপোরেট কর বাড়লে দেশের পোশাক খাতে উৎপাদন খরচ বাড়বে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা। রফতানি আয়েও নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।

বিজ্ঞাপন

তথ্যমতে, তৈরি পোশাক খাতে বর্তমানে করপোরেট করের হার ১২ শতাংশ। তবে সবুজ কারখানার জন্য তা আরও ২ শতাংশ কম। ইউএস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিলের (ইউএসজিবিসি) এনার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট ডিজাইন (এলইইডি) গ্রিন ফ্যাক্টরি বা সবুজ কারখানার সার্টিফিকেশন দিয়ে থাকে। কোনো প্রতিষ্ঠান সবুজ কারখানায় তালিকাভুক্ত হলে সেই কারখানার জন্য বর্তমানে করপোরেট কর হার ১০ শতাংশ। তবে দেশের বিভিন্ন খাতে করপোরেট করহার ২৭ দশমিক ৫০ শতাংশ। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে তৈরি পোশাক খাতে করহার বাড়িয়ে ১৮ থেকে ২০ শতাংশ করতে চায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনবিআরের এক কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, ‘পোশাক খাত দীর্ঘদিন ধরে কর সুবিধা ভোগ করে আসছে। অন্যান্য খাতে করপোরেট কর অনেক বেশি। ফলে করবৈষম্য কমিয়ে আনতে চায় সরকার। এছাড়া, রাজস্ব বাড়াতে আইএমএফ’র চাপও রয়েছে।’

জানতে চাইলে দেশের নিটওয়্যার খাতের পোশাক মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) ভাইস প্রেসিডেন্ট ফজলে শামীম এহসান সারাবাংলাকে বলেন, ‘পোশাক খাতে হঠাৎ করে এভাবে করপোরেট কর বাড়ালে সরকারের প্রতি বিনিয়োগকারীরা আস্থা হারাবেন। কারণ, সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের দীর্ঘমেয়াদী প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। তার ওপর ভিত্তি করে আমরা ব্যবসা করছি, আমরা বিনিয়োগ করেছি। এখন সরকার যদি মাঝামাঝি সময়ে এসে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে, তাহলে এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হবে না।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘বিনিয়োগের পূর্ব শর্ত হচ্ছে নীতির স্থিতিশীলতা। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যদি নীতির স্থিতিশীলতা না থাকে, এখন যে রেট দেবে, সেটিই ছয় মাস রাখবে কি না তার নিশ্চয়তা নেই। আমরা যাতে বিনিয়োগ করতে পারি সেজন্য দীর্ঘমেয়াদী নীতির প্রতিশ্রুতি দিতে হবে এবং যেসব প্রতিশ্রুতি ছিল তা বজায় রাখতে হবে। কর হতে হবে প্রকৃত আয়ের উপরে। এআইটি যদি বেশি নিয়ে থাকে সেটি ফেরত দিতে হবে। নতুবা সমন্বয় করতে হবে।’

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) এর সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের ব্যবসা পরিচালনার খরচ এখন অনেক বেশি। ব্যাংক সুদের হার ও গ্যাসের দাম সবই এখন আামদের ভুগিয়ে তুলছে। সব খাতেই যদি খরচ বাড়ে, উদ্যোক্তাদের মাঝে এক ধরনের প্যানিক (আতঙ্ক) সৃষ্টি হবে। নতুন বিনিয়োগ নিয়ে ব্যবসায়ীরা সংশয়ে থাকবেন। আগের করা বিনিয়োগ থেকেও সঠিক রিটার্ন না পেয়ে কষ্টে পড়বে।’

তিনি বলেন, ‘বছরভিত্তিক না হয়ে যেকোনো নীতি দীর্ঘমেয়াদী হওয়া উচিত। করপোরেট কর বাড়লে পোশাক খাতের সব উদ্যোক্তারা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বেন।’ তবে ছোট কারখানার উদ্যোক্তারা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে মনে করেন রুবেল।

সারাবাংলা/ইএইচটি/পিটিএম

উদ্যোক্তা করপোরেট কর পোশাক খাত শঙ্কা

বিজ্ঞাপন

মহান মে দিবস আজ
১ মে ২০২৫ ০০:০৬

আরো

সম্পর্কিত খবর