ঠিকানা ‘রূপান্তর’: দেশি ম্যাপে বেশি লাভ
১ আগস্ট ২০২০ ০০:৩৫
করোনাভাইরাসের কারণে অনেক স্টার্টআপ ধ্বসে গেলেও অনেকেই কিন্তু তাদের প্রযুক্তি মেধা দিয়ে নিজের ব্যবসাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। অন্যের ব্যবসাতেও কার্যকরী ভূমিকা রাখছেন। ‘বাড়িকই’ তাদেরই একজন, যাদের অনন্য সংযোজনা ‘রূপান্তর’ ই-কমার্স ব্যবসাকে করেছে গতিশীল ও সাশ্রয়ী। আজ শোনাবো ‘বাড়িকই’ স্টার্টআপের ‘রূপান্তর’ প্রজেক্টের গল্প।
‘বাড়িকই’ শব্দটা শুনলে যা মনে হয় প্রতিষ্ঠানটি ঠিক সেই কাজটিই করে। তারা আমাদের বাড়িটি খুঁজে দেন। কিন্তু এই কাজ তো গুগল ম্যাপই করতে পারে, ‘বাড়িকই’ কেন? কিংবা তাদের নতুন সিস্টেম ‘রূপান্তর’ই বা কেন?
কারণ ‘বাড়িকই’ এর ‘রূপান্তর’ আরেকটু বুদ্ধিমান একটি সিস্টেম যে জানে বাংলা, ইংরেজি কিংবা বাংলিশ। এমনকি শর্টহ্যান্ড কিংবা ভুল বানানও পড়ে ফেলতে পারে সে। কাস্টমারের আপন মনের মাধুরী মিশিয়ে লেখা ঠিকানা দেখে যখন গুগল ম্যাপ ডেলিভারিম্যানকে চক্কর কাটাতে কাটাতে বলে, ‘তোমার ভাষা বোঝার আশায় দিয়েছি জলাঞ্জলি’, ‘রূপান্তর’ তার ঠিকানা রূপান্তরের বুদ্ধি দিয়ে তখন ঠিকানাটিকে ঝটপট কনভার্ট করে ফেলতে পারে স্ট্যান্ডার্ড ফরম্যাটে। এতে দু’টি কাজ হয়- ডেলিভারিম্যানের সময় বাঁচে, মুঠোফোনের বিল বাঁচে আর যেই প্রতিষ্ঠান এই সিস্টেমটি ব্যবহার করে গুগল ম্যাপের চেয়ে তার খরচ ৯০ শতাংশ কম লাগে। একেই বলে ‘বিনে স্বদেশী ভাষা মেটে কি আশা’!
সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশেও অনলাইন শপিং কিংবা ফুড ডেলিভারি ভীষণভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বেশ কয়েক বছর ধরেই। কোভিড সময়ে এ নির্ভরতা আরও বেড়ে গেছে। ‘বাড়িকই’য়ের উদ্যোক্তারা একটু বেশিই দূরদর্শী কিনা জানা নাই, তবে ঠিক লকডাউনের আগে তারা ‘রূপান্তর’ নামে একটি ঠিকানা রূপান্তরের সিস্টেম বাণিজ্যিকভাবে চালু করে ফেললেন যা অনলাইন ডেলিভারি সেবায় আনলো গতি ও সাশ্রয়।
প্রথমত রূপান্তর একটি দেশি উদ্ভাবন সেই গর্বটুকু তো আছেই। উপরন্তু এটি একটি প্রতিষ্ঠানের অপারেটিং খরচ অনেক কমিয়ে দিচ্ছে যা টিকে থাকার জন্য স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য এখন ভীষণভাবে দরকার। দেশের ই/এফ কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো সাদরেই রূপান্তরকে বেছে নিচ্ছে। চালডাল তাদের সেবা নিচ্ছে। মূলত চালডালই তাদের প্রথম কাস্টমার। তার সঙ্গে একে একে যুক্ত হয়েছে সেবা, আজকের ডিল, মায়া, ইজিট্র্যাক্স, স্টাইলাইন, ল্যান্ডনক।
মাত্র কয়েক বছর ধরে যাত্রা শুরু করেছে ‘বাড়িকই’। যার সর্বশেষ উদ্ভাবনী সংযোজনা হচ্ছে রূপান্তর। গ্রামীণফোনের এক্সিলারেটর প্রোগ্রামের ৩য় ব্যাচে থেকে তারা গ্র্যাজুয়েশন করেছিলেন নবীন উদ্যোক্তা হিসেবে। খুব অল্প সময়েই তারা পাড়ি দিয়েছে বহুদূর।
তরুণ রিদওয়ান, তায়েফ, সাদমানের প্রযুক্তি মেধার ফসল ‘বাড়িকই’ এগিয়ে যাক বহুদূর। তাদের সময়োপযোগী রূপান্তর সিস্টেমটির জন্য শুভ কামনা।
লেখক: গ্রামীণফোন কর্মকর্তা