Sunday 24 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শিশুরা হয়ে উঠুক আগামীর শেখ মুজিব


১৭ মার্চ ২০২১ ১৬:৫৫

মুজিব, বাঙালির হৃদয় গহ্বরে আটকে থাকা এক শুদ্ধ চেতনার সংমিশ্রণ। আদর্শ ও দৃঢ়চেতা মানসিকতার অটুট সামর্থ্য যাকে পরিণত করেছিল বাঙালি জাতির পিতা তথা নন্দিত বিশ্বনেতায়। দীর্ঘ লড়াই সংগ্রামের পথ পরিক্রমায় শেখ মুজিব হয়ে উঠেছেন বঙ্গবন্ধু।

সহমর্মিতা মুজিব চরিত্রের অন্যতম নিদর্শন। যার বীজ বুনেছেন তিনি ছোটবেলাতেই। সহপাঠী বন্ধুকে নিজের পরনের পোশাক দিয়ে দুঃখে শামিল হওয়ার ঘটনা ছিল মুজিবের ছোট বেলার স্মৃতিগুলোর মধ্যে অন্যতম। মহাজনের শোষণের বিরুদ্ধে দলবল নিয়ে আক্রান্তকে উদ্ধার কিংবা স্কুলে ছাত্রদের অধিকারের স্বার্থে তখনকার সংগ্রামী নেতা হোসেন শহিদ সোহরাওয়ার্দীর পথ অবরোধ, নিঃস্বার্থভাবে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের আন্দোলনে শামিল হয়ে বহিষ্কার আদেশ মেনে নেওয়া, নয়াচীন ভ্রমণে গিয়ে নববিবাহিতা এক নারীকে নিজের হীরের আন্টি উপহার দেওয়া, ‘চল, কামালের মা পুঁটি মাছ রান্না করেছে’ বলে অসংখ্য অচেনা কিংবা কাছের কর্মীকে বুকে টেনে নিয়ে একসঙ্গে খাওয়া, জেলের সামান্য কয়েদিকে আপনি সম্বোধনসহ অজানা অনেক কাহিনী রয়েছে তার আত্মজীবনীর পাতায়।

বিজ্ঞাপন

যুদ্ধ-বিধ্বস্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণের যে যাত্রা শুরু করেছিলেন বঙ্গবন্ধু, তার প্রধান শক্তি হলো তারুণ্য শক্তি এবং শিশুদের সময়োপযোগী শিক্ষায় শিক্ষিত করে আগামী দিনের সুযোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে গড়ে তোলা। স্বাধীনতার পর ভঙ্গুর শিক্ষা ব্যবস্থা ঢেলে সাজিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। প্রাথমিক শিক্ষা সরকারিকরণ, সংবিধানে শিক্ষা বাধ্যতামূলক, শিক্ষা কমিশন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনসহ নানা কার্যক্রম বাস্তবায়িত করেছেন। শিক্ষা ব্যবস্থাকে বৈষম্যহীন ও যুগোপযোগী করার জন্য তার অবদান নিঃসন্দেহে অপরিসীম। শত দুরবস্থাতেও অসংখ্য স্কুল, কলেজ, মাদরাসা নির্মাণ ও সংস্কার করা হয় এবং শিক্ষকদের বকেয়া পরিশোধ করা হয়। নতুন দেশে, নতুন স্বপ্নে এগোতে থাকে শিক্ষাব্যবস্থার চিত্র। ‘৭৫ এর কালো অধ্যায়ের পর শিক্ষা, সংস্কৃতিতে ধস নেমে এলেও অন্ধকারের মাঝে আলো খুঁজে পায় বাংলাদেশ সাম্প্রতিক সময়ে। কারণ হিসেবে বলা যেতে পারে, প্রাথমিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক ও অবৈতনিক করা হয়েছে। ঝড়ে পড়া অনেকাংশে কমে গিয়েছে গ্রামাঞ্চলে। মেয়ে শিশুদের হচ্ছে না বাল্যবিবাহ। মুখে মুখে নয়, এসবের সত্যতা মিলে আন্তর্জাতিক নানা সংস্থার প্রতিবেদনেও। ইউনেস্কোর মতে, বাংলাদেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যে কজন শিক্ষার্থী আছে, পৃথিবীর অধিকাংশ দেশের জনসংখ্যাও ততো না৷ আলোচ্য কথার সারমর্ম হলো— শিশুকে বিকাশমান করার জন্য যা প্রয়োজন সবটাই পাচ্ছে শিশুরা। বলা যায়—মুজিবের ক্ষুধা, দারিদ্র্য মুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন তা অবশ্যই বাস্তবায়িত হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

দৃশ্যপটের উল্টোদিকও ও আছে যেটা লজ্জাজনক। মাদক, ধর্ষণ, ডাকাতি বা রাহাজানির মতো নোংরা কর্মকাণ্ডে জড়াচ্ছে তরুণ প্রজন্মের বড় একটি অংশ। অলিতে-গলিতে গড়ে উঠছে কিশোর গ্যাং, যারা কিনা পাচ্ছে স্থানীয় নেতাদের সরাসরি সমর্থন।

ইতিহাসের আঁকেবাঁকে ঘাঁটলে দেখা যাবে, ষাটের দশকে জাতীয় নেতা শেখ মুজিবুর রহমান ধাপে ধাপে বাঙালি জাতিকে প্রস্তুত করেছেন স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য। আজ না হয় আসুন আমরা দুর্নীতি, অপরাজনীতি, সাম্প্রদায়িকতা, অবৈধ টেন্ডারবাজি, ধর্ষণ, খুন, গ্যাং কালচারের বিরুদ্ধে একটু একটু করে সংগ্রাম শুরু করি। ধাপে ধাপে লড়াই, সংগ্রাম অব্যাহত রাখলেই একদিন বিজয় সুনিশ্চিত। কালো ছায়া থেকে বেরিয়ে জাগ্রত করতে হবে সুস্থতার প্রবাহকে। বাংলাদেশ হোক ক্ষুধা, দারিদ্র্য, অপরাজনীতি মুক্ত। জন্মলগ্নে বিনম্র শ্রদ্ধা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

লেখক: শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর