Sunday 24 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

২৬ মার্চ আসে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা নিয়ে


২৬ মার্চ ২০২১ ১৮:৩৮

বাঙালি জাতির জীবনে অনন্য এক দিন ২৬ মার্চ। মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন বঙ্গবন্ধু। বলা চলে নিজস্ব রাষ্ট্র বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ভিত্তি তথা চূড়ান্ত লড়াই এ দিনই শুরু হয়। গণহত্যার শোককে শক্তিতে পরিণত করে বাঙালি মুক্তি সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে। সেই থেকে হানাদারদের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠে একের পর এক সর্বাত্মক প্রতিরোধ। এক কোটি মানুষ প্রতিবেশী শরণার্থী হিসেবে ভারতে আশ্রয় নেয়। বঙ্গবন্ধুকে রাষ্ট্রপতি করে গঠিত হয় প্রবাসী সরকার। অবশেষে নয় মাসের দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ত্রিশ লাখ মানুষের জীবন ও অসংখ্য মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে বাংলার স্বাধীনতা অর্জিত হয়। আকাশে উদিত হয় সবুজ জমিনের বুকে লক্ষ শহিদের টকটকে লাল রক্ত ঢেলে দেওয়া স্বাধীনতার সূর্য পতাকা। স্বাধীনতার জন্য এমন আত্মত্যাগ খুব কম জাতি করেছে। এ এক বিশাল সফলতা।

বিজ্ঞাপন

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সেদিন সমগ্র জাতি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের পর বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে পুনর্গঠনের কাজ শুরু হয়। ছাব্বিশে মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। স্বাধীনতা ঘোষণার প্রারম্ভে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘এটাই হয়তো আমার শেষ বার্তা। আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন’। মূলত ২৬ মার্চ প্রত্যুষেই শুরু হয় বাংলার গণমানুষের সশস্ত্র প্রতিরোধ। তার এই শেষ বার্তা স্বাধীনতার ঘোষণা হৃদয়ে ধারণ করে হাতিয়ার তুলে নিয়ে ৯ মাস যুদ্ধ করে ১৬ ডিসেম্বর দেশকে হানাদারমুক্ত করেও আমরা স্বাধীনতার স্বাদ অনুভব করতে পারিনি। স্বাধীনতা লাভের পর অতিক্রান্ত হয়ে গেছে ৫০টি বছর। আমরা একটি ভূখণ্ড পেয়েছি, বিশ্ব মানচিত্রে আমাদের জন্য একটি স্বতন্ত্র অবস্থান রয়েছে, আমাদের একটি লাল সূর্যের পতাকা রয়েছে, আমরা মনের সুখে জাতীয় সংগীত গাইতে পারি। মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ ঘটেছে। পৃথিবীর বুকে সগৌরবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছে আমাদের প্রিয় জন্মভূমি গৌরবের বাংলাদেশ। তবে স্বাধীনতার পূর্ণতা পেতে আরও কিছু কাজ বাকি। এজন্য লড়াই এখনও শেষ হয়নি।

বিজ্ঞাপন

স্বাধীনতা উপভোগের, অপব্যবহারের নয়। আজ আমরা স্বাধীন, পুরোপুরি মত প্রকাশের স্বাধীনতা না থাকলেও অনেকটাই স্বাধীনতা রয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা হলো আমরা স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারছি। তবে আমাদের সকলকে সামাজিক দায়বদ্ধতার বিষয়টি অবশ্যই মাথায় রাখতে হয়। সেজন্যই বলছি, অবাধ স্বাধীনতা মানে দায়িত্বহীনতা নয়। এর সুন্দর ব্যবহার নিশ্চিত করা জরুরি। লক্ষ্য রাখা উচিত এমন কোনাে কার্যক্রম যেন আমাদের মাধ্যমে সংগঠিত না হয় যাতে সমাজের ক্ষতি হয়। মত প্রকাশ করতে হলে নিজেকে দায়িত্ব নিয়েই করতে হয়, যাতে মত প্রকাশের জন্য ব্যক্তি বা সমাজ সংকটের মুখামুখি না হয়। উপরের কথাগুলাে বলার অর্থ এই নয় যে, মুখে কুলুপ এঁটে বসে থাকতে হবে, অথবা নিজের সব ইচ্ছাকে জলাঞ্জলি দিয়ে আরেকজনের কথায় চলতে হবে। এ বিষয়গুলাে আলােচনার অর্থ আমরা যেন অর্পিত স্বাধীনতাটা পরিপূর্ণভাবে উপভোগ করতে পারি।

স্বাধীনতার গৌরবগাঁথা বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না। যার কারণে আজ আমরা পঁচিশে মার্চের ভয়াল গণহত্যার শোক কাটিয় পরের দিনই স্বাধীনতার জয়গান গাইতে পারছি। পাশাপাশি এই দুইটি দিনের তাৎপর্য তাই অনেক গভীর। যত বড় আঘাতই আসুক না কেন, শোক যত গভীরই হোক, শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। ২৬ মার্চ তাই আমাদের কাছে বারবার আসে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা নিয়ে।

লেখক: শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

বিজ্ঞাপন

বিদেশ বিভুঁই। ছবিনামা-১
২৪ নভেম্বর ২০২৪ ২৩:০০

আরো

সম্পর্কিত খবর