একটি আদর্শ জাতি গঠনই ছিল বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন
১৫ আগস্ট ২০২২ ১৭:২৩
বাঙালির মুক্তিযুদ্ধের গুরুত্ব ও তাৎপর্য পৃথিবীর অন্য দশটি দেশের মতো নয়। কেননা শুধুমাত্র আলোচনা-বৈঠকের মাধ্যমে আমরা স্বাধীনতা লাভ করিনি। যে সকল দেশ উপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দেশের স্বাধীনতা অর্জন করেছে তাদের সাথে তুলনীয় আমাদের স্বাধীনতা। পঁচাত্তর পরবর্তী দীর্ঘকালে নবপ্রজন্মকে স্বাধীনতার এই মাহাত্য ও তাৎপর্য বোঝানো হয়নি। সেই অন্ধকার এখনো পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে পারিনি এখনও।
যে সকল স্বাধীনতা সংগ্রামী এখনও বেঁচে রয়েছেন, যারা বিভিন্ন পর্যায়ে সমাজ ও সরকারের নেতৃত্ব দিচ্ছেন এ ব্যাপারে তাদের দায়িত্ব অনেক। নতুন প্রজন্ম এবং আগামী প্রজন্মকে জানাতে হবে বাঙালির বীরত্বপূর্ণ স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রকৃত ইতিহাস। সরকারের ওপর জাতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রকৃত ইতিহাস বিকৃত করার সেই ন্যাক্কারজনক অবস্থা থেকে দেশ ও জাতিকে মুক্ত করে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত সত্যকে সমন্নুত করে তুলতে হবে। যেহেতু ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগই বাঙালির ঐতিহাসিক স্বাধীনতা ও মুক্তি সংগ্রামের নেতৃত্ব দিয়েছে, সেই মহান দায়িত্ব পালনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আর সেই দায়িত্ব পালনের লক্ষ্য নিয়েই তারা সুপরিকল্পিত ও নিরলসভাবে অগ্রসর হচ্ছে।
আমাদের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের যাত্রা শুরু হয়েছে বহু আগে থেকেই। হাজার বছরের বহু ইতিহাস ও ঘটনার দিকে দৃষ্টিপাত করলেই সেটা পরিষ্কার বোঝা যাবে। সর্বকালেই বাঙালি চেষ্টা করেছে নিজেদের আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে। সুলতানাত-মোঘল ও ব্রিটিশ আমলের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রাজা-বাদশা ব্যক্তি চেষ্টা করেছে বাঙালির আত্মনিয়ন্ত্রুণ প্রতিষ্ঠা করতে। তাদের সেসব সংগ্রাম, ত্য্গা ও বিদ্রোহ ব্যর্থতায় পর্যবসিত হলেও বাঙালির মধ্যে যে স্বাতন্ত্র্য মর্যাদার শিখা তারা প্রজ্জ্বলিত করতে সক্ষম হয়েছিলো, পরবর্তীকালে তা বাঙালিকে আরো বেশি জ্ঞ্যাতাভিমানে শাণিত করতে পেরেছিল। সুভাষ চন্দ্র বসু বাঙালির সেই সুপ্ত মনের শিখা প্রত্যক্ষ করেই স্বাধীনতার জন্য সশস্ত্র সংগ্রামের ডাক দিয়েছিলেন। কিন্তু তার সেই অমর আহবান-‘তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেবো’, সময়োচিত হয়নি বলেই পরবর্তীকালে ইতিহাসে প্রমাণিত হয়েছে। জাতিকে নিরবচ্ছিন্ন সংগ্রামের মাধ্যমে প্রস্তুত করার কঠিন কাজটি সম্পন্ন না করে সুভাষ বসু বাঙালি ও ভারতবাসীর সক্রিয় সমর্থন চেয়েছিলেন। সশস্ত্র যুদ্ধে সবাই ঝাঁপিয়ে পড়বে বলে আশা করেছিলেন। কিন্তু বাস্তবে সেই বৈজ্ঞানিক প্রস্তুতি ছিল না বলেই তাকে ব্যর্থতায় পর্যবসিত হতে হয়েছে। তবু ইতিহাসের রায়, তার আত্মদান ও সংগ্রাম বৃথা যায়নি। তার অসম্পূর্ণ কাজই পরবর্তীতে সম্পূর্ণ হয়েছে।
ভারতের স্বাধীনতা লাভ সম্ভব হলেও বাঙালির স্বাতন্ত্র্য প্রতিষ্ঠা পায়নি। ভারত বিভাগের নানা খেলা ও ষড়যন্ত্রেও শিকার হতে হয়েছে বাঙালিকে। স্বায়ত্তশাসিত আবাসভূমি গঠনের কথা থাকলেও পরবর্তীকালে সেটা আর হয়নি। বিভক্তির চোরাবালিতে হারিয়ে গিয়েছিল। বাঙালির জাতীয়তা অভিন্ন ইতিহাস। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর থেকে শের-এ-বাংলা একে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী সঠিকভাবেই ভারত বিভাগের অন্তর্নিহিত ষড়যন্ত্র বুঝতে সক্ষম হয়েছিলেন। পাকিস্তান রাষ্ট্রকাঠামোর সাম্প্রদায়িক শৃঙ্খলে বাঙালি জাতি যে মূলতঃ পশ্চিম পাকিস্তানের পাঞ্জাবি চক্রান্তের কাছে বাঁধা পড়ে গেছে সেটা তারা সঠিকভাবেই বুঝতে পেরেছিলেন। এ মহান তিন নেতা বাঙালির সংগ্রাম ও মুক্তির জন্য তাদের ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করে গেছেন। সে কারণেই তারা আমাদের গর্ব এবং জাতীয় নেতা।
ঐ মহান নেতাদের যোগ্য উত্তরসূরী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, আমাদের প্রিয় জাতির জনক, বাঙালির হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান, তার দায়িত্বের কথা ভেবেছিলেন বহুদূর পর্যন্ত। তিনিই স্বপ্ন দেখেছিলেন, বাঙালির সত্যিকার মুক্তি তার স্বাধীনতা অর্জনের মধ্যে। মহান ভাষা আন্দোলন থেকেই তিনি তার প্রস্তুতির কাজ শুরু করেছিলেন। বাঙালির অধিকার সচেতন করে তোলা, তাদের ঐক্য সুদৃঢ় করা এবং দাবি আদায়ের সংগ্রামে তাদেরকে শাণিত করার ব্যাপারে বঙ্গবন্ধু সুদূর লক্ষ্য সামনে নিয়ে কাজ শুরু করেন। পঞ্চাশ ও ষাটের দশক ছিল তার সেই প্রস্তুতির পর্ব। এই সময়ের মধ্যে যুক্তফ্রন্টের নির্বাচন, আয়ুবের সামরিব শাসনবিরোধী আন্দোলন, ছয় দফা পেশ, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার বিরুদ্ধে আন্দোলন, ’৬৯-র গণঅভ্যুত্থান-এ সবই তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রস্তুতিপর্ব হিসেবে কাজে লাগিয়েছেন।
ইতিমধ্যে বাঙালির ঐক্য সুদৃঢ় হয়েছে। বিদায় নিতে হয়েছে জেনারেল আইয়ুব খানকে। একই সময়ে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা তুলে নিয়ে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হয়েছে শেখ মুজিবকে। কারামুক্ত হয়েই বঙ্গবন্ধু-বাঙালির হাজার বছরের আশা-আকাঙ্খা ও প্রত্যাশার মূর্ত প্রতীক হিসেবে তার সকল কর্মতৎপরতা শুরু করলেন। সামরিক বিধি-নিষেধের মধ্যে নির্বাচনে না যাওয়ার জন্য বাধ সাধলেন মওলানা ভাসানী। শেখ মুজিব তাকে বোঝালেন। পল্টনে বললেন, ‘আমি বাঙালির দাবি নিয়ে নির্বাচনে নামবো। বাঙালি আমার পেছনে আছে কি না তার পরীক্ষা হওয়া প্রয়োজন। পাকিস্তানী শাসকদের বুঝিয়ে দিতে হবে-বাঙালি আজ ঐক্যবদ্ধ। তাদেরকে চিরকাল পদানত করে রাখা যাবে না। আর সেটা প্রমাণের জন্যেই নিব্র্াচনে যেতে হবে।’ ক্ষমতার জন্য সেদিন বঙ্গবন্ধু (‘লিগ্যাল ফ্রেম ওয়ার্ক’) মাথার ওপর নির্বাচন রেখে নির্বাচনে যাননি। তার সামনে অত্যন্ত পরিষ্কার ছিল বাঙালির আত্মমর্যাদার দাবি প্রতিষ্ঠার বিষয়টি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সেদিন লক্ষ্যাভিযাত্রায় ঐতিহাসিক সফলতা অর্জন করেছিলেন। তার প্রত্যাশা ছিল গোটা বাঙালি জাতি তার পেছনে রয়েছে, সেটা প্রমাণ করা। কিন্তু নির্বাচনের ফলাফলে দেখা গেলো শেখ মুজিবই পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীত্ব তাঁরই পদানত। সেদিন প্রমোদ গুনেছিলো পাকিস্তানি শাসকরা বঙ্গবন্ধু তখনও নিশ্চিত ছিলেন বাঙালিরা পাকিস্তানের শাসন ক্ষমতা হাতে পাবে না। শুরু হবে ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার। পরবর্তীতে সেটাই হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আলোচনা-গোল টেবিলের আড়ালে সামগ্রিক প্রস্তুতি নিতে থাকেন চূড়ান্ত লড়াইয়ের জন্যে। সেভাবেই তিনি প্রস্তুতিগ্রহণের নির্দেশ দিয়ে দেন তার সহকর্মী ও যুবনেতাদের। আন্দোলন, হরতাল, অসহযোগ চলতে থাকে নিববচ্ছিন্নভাবে। ঘটনাপ্রবাহ চূড়ান্ত পরিণতির দিকে এগোতে থাকে। এরিমধ্যে বাঙালি ছাত্র-যুব-কৃষক, শ্রমিক-পেশাজীবীসহ সর্বস্তরের মানুষ স্বাধীনতার জন্য পাগলপারা হয়ে উঠেছে। জনসাধারণ বুঝতে পেরেছে, যুদ্ধ ছাড়া কোন পথ আর খোলা নেই। শেষ লড়াই পাকিস্তানিদের সাথে।
এমনি উত্তাল মুহূর্তে সমাগত হলো ৭ মার্চ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব যিনি গোটা জাতির মধ্যমণি, অবিসংবাদিত নেতা, তিনি চূড়ান্ত ঘোষণা দেবেন রেসকোর্স ময়দানে। এটা আজ ইতিহাসের দৃষ্টিতেই পরিষ্কার হয়েছে যে, মূলত বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রামের ঘোষণা ৭ মার্চের ভাষণ থেকেই এসেছিল। ২৬ মার্চেও আনুষ্ঠানিকতার চাইতে ইতিহাসের পাতায় সমধিক গুরুত্ব পেয়েছে ৭ মার্চের স্বাধীনতার ঘোষণা। বাংলার নিরক্ষর বা স্বল্প শিক্ষার কোটি কোটি মানুষ সেদিন ৭ মার্চের ভাষণের পর স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার ব্যাপারে দ্বিতীয় কোন ঘোষণার অপেক্ষায় বসে ছিল বলে আমাদের জানা নেই। অর্থাৎ সঠিকভাবেই বুঝতে পেরেছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যার যা আছে তাই শত্রুর মোকাবিলা করার আহবান জানিয়েছেন। ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম’-এর মধ্যেই পরিষ্কার ও সুস্পষ্টভাবে স্বাধীনতার ঘোষণাই নিহিত ছিল। অতএব জ্ঞানের বহর দেখিয়ে তাকে পরোক্ষভাবে দোষে দুষ্ট করে ইতিহাসকে বিকৃত করার কোনো সুযোগ নেই।
৭ মার্চের ঘোষণার পর পরই ঢাকা-জয়দেবপুরসহ দেশের অধিকাংশ স্থানে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনী ও তাদের চেলা-চামুণ্ডাদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র অভিযান শুরু হয়ে যায়। বঙ্গবন্ধু সেই মুহূর্তে পাকিস্তানিদের বিভ্রান্ত করে নিজের চূড়ান্ত প্রস্তুতির কাজ এগিয়ে নিচ্ছিলেন। অপেক্ষা করছিলেন, কখন ইয়াহিয়া-ভুট্টো চক্র বাঙালিদের উপর ক্যাকডাউন করে। ২৫ মার্চ রাতেই সেই সময় উপনীত হলো। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব্ তার পূর্ব প্রস্তুতি মোতাবেকই স্বাধীনতার আনুষ্ঠানিক ঘোষণাটি চট্টগ্রামের মাধ্যমে সারা দেশে সম্প্রচার করার পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। আর একই সাথে পূর্ব সিদ্ধান্ত মোতাবেক তিনি গ্রেফতার বরণ করাকেই অধিক শ্রেয় মনে করেছিলেন। যদিও তার গ্রেফতারে বাঙালি নিধনের ব্যাপকতা হ্রাস পায়নি। তারা পোড়ামাটির নীতিই অব্যাহত রেখে তিরিশ লক্ষ বাঙালি হত্যা ও হাজার হাজার কোটি কোটি টাকার বাড়ি-ঘর সম্পদ ধুলায় মিশিয়ে দিয়েছিল।
বাংলার কৃষক-শ্রমিক-ছাত্র-যুব-মেহনতি মানুষ এই নারকীয় হত্যাকাণ্ড ও ধ্বংসযজ্ঞে স্বাধীনতার লক্ষ্য অর্জনের পথ থেকে পিছিয়ে আসেনি। অকাতরে জীবন দিয়ে প্রতিটি পর্বে পাকিস্তানিদের তারা মোকাবিলা করেছিল।
এমন গণযুদ্ধের নজির পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। আর এই বিরল গণযুদ্ধের নজিরবিহীন ইতিহাস সৃষ্টির জন্যেই শেখ মুজিব তার দল ও সহযোগীদের নিয়ে সারা জীবন সংগ্রাম করেছিলেন। সে কারণে বলা হয়, বাঙালির আত্মমর্যাদা প্রতিষ্টার সংগ্রামে হাজার বছর ধরে বিভিন্ন পর্বে বিভিন্ন নেতা যথাযোগ্য অবদান রেখে ইতিহাসে স্মরণীয় হলেও স্বাধীনতা অর্জনের প্রশ্নে প্রকৃত সাফল্যের স্বর্ণপৃষ্টাটি শেখ মুজিবের জন্যেই চিরকালের জন্য নির্ধারিত হয়েছে। ইতিহাসের এই স্বর্ণপাতা থেকে তাকে সরিয়ে নেয়া কোনোদিন কারো পক্ষেই আর সম্ভব নয়। তাই প্রথমেই উল্লেখ করেছিলাম, বাঙালির স্বাধীনতা পৃথিবীর আর দশটি দেশের স্বাধীনতার সঙ্গে তুলনীয় নয়। ঔপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে জীবনপণ সশস্ত্র সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে লাখ লাখ মানুষ অকাতরে জীবন উৎসর্গের নজির স্থাপন করে যারা স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছেন কেবলমাত্র তাদের সাথে বাঙালির স্বাধীনা সংগ্রামের তুলনা হয়। সেদিক থেকে চীন, ভিয়েতনাম, রাশিয়া, কিউবাসহ এধরনের ঐতিহাসিক মুক্তিসংগ্রামী জাতির সঙ্গে বাঙালি তুলনীয়। আর এ কারণেই ’৭১-র স্বাধীনতা অর্জনের পর গোটা বিশ্বের স্বাধীনতা, মুক্তি ও শান্তিকামী মানুষের সহমর্মিতার দৃষ্টি নিবন্ধ হয়েছিল নবপ্রতিষ্ঠিত এই বাঙালি জাতির প্রথম স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রতি। একই সাথে পৃথিবীর মানুষ সশ্রদ্ধ চিত্তে সালাম জানিয়েছিল বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।
আমাদের জন্যে দেশের আপামর জনতা ও তাদের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব দেশ স্বাধীন করেননি। সুস্পষ্ট আদর্শ নীতি মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে একটি উন্নত জাতি-রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যেই বঙ্গবন্ধু ও তার জনগণ দেশকে স্বাধীন করেছিল। আদর্শ-নীতি ও মূল্যবোধের আলোকে একটি জাতির সংস্কৃতি যদি বিকশিত না হয় তাহলে সে জাতি ইতিহাসের বিচারে যথার্থ উন্নত জাতি বলে দাবি করতে পাওে না। ’৭৫-এর রাজনৈতিক পট-পরিবর্তনের পর থেকে একুশ বছর যারা দেশ শাসন করেছে তারা জাতির সংস্কৃতিকে ঐ দৃষ্টিকোণে বিকশিত হতে দেয়নি। দেশ, জাতি, মুক্তিসংগ্রাম, স্বাধীনতা এমনকি পরিকল্পিত উন্নয়নের ব্যাপারে তাদের কোন দায়বদ্ধতা ছিল না। বিভিন্ন পথে ক্ষমতা দখর করে তাকে কুক্ষিগত এবং ব্যক্তি ও গোষ্ঠী স্বার্থেই ব্যবহার করাই ছিল তাদের উদ্দেশ্য। আজ আমাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে সমগ্র বাঙালির সাথে। দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নতি নিশ্চিত করার সাথে সাথে একটি আদর্শিক রাষ্ট্র গঠনে জাতির জনকের স্বপ্নও পূরণ করতে হবে। অন্যথায় জাতির জনকের স্বপ্নও পূরণ করতে হব্ েঅন্যথায় জাতির জনকের সারা জীবনের সংগ্রাম, ত্যাগ ও আজন্ম লালিত স্বপ্ন এবং শহীদের আত্মত্যাগ সবই অর্থহীন হয়ে যাবে। স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ-সবই হয়ে যাবে খণ্ডিত-অসম্পূর্ণ’।
লেখক: সহকারী প্রধান শিক্ষক, নিউ গর্ভ. গার্লস হাই স্কুল, আরমানিটোলা, ঢাকা
সারাবাংলা/এসবিডিই/এএসজি
একটি আদর্শ জাতি গঠনই ছিল বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন খালেদা পারভীন মুক্তমত